বুধবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

বাবর-ওমরে রঙিন রংপুর

মেজবাহ্-উল-হক

বাবর-ওমরে রঙিন রংপুর

বল কখনো একদম লো হয়ে যাচ্ছে, আবার হঠাৎ অস্বাভাবিক বাউন্স করছে। আবার কখনো অতিরিক্ত টার্ন করছে। বল সহজে ব্যাটে আসছে না। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের পুবপাশের উইকেট সাধারণত বেশিই ট্রিকি হয়। সে কারণে সিলেট স্ট্রাইকার্সের দেওয়া মাত্র ১২১ রানের টার্গেটও একসময় রংপুর রাইডার্সের কাছে উত্তাল সমুদ্র পাড়ি দেওয়ার মতো গিয়েছিল! মাত্র ৩৯ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর জয়কে যখন মনে হচ্ছিল দূরের বাতিঘর, এমন কঠিন পরিস্থিতিতে দক্ষ নাবিকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের দুই তারকা বাবর আজম ও আজমতুল্লাহ ওমরজাই। সপ্তম উইকেটে তাদের মাত্র ৬৮ বলে অপরাজিত ৮৬ রানের জুটি দলকে পৌঁছে দেয় জয়ের বন্দরে। বাবর-ওমরে রঙিন হলো রংপুর।

বাবর আজম করেছেন ৪৯ বলে অপরাজিত ৫৬ রান আর ওমরজাই ৩৫ বলে খেলেছেন ৪৭ রানের হার না মানা ইনিংস। তবে বাবরের চেয়ে ৯ রান কম করলেও ম্যাচের পরিস্থিতি বিবেচনায় ওমরজাই-ই হয়েছেন ম্যাচসেরা।

সিলেট স্ট্রাইকার্সকে ৪ উইকেটে হারিয়ে ছন্দে ফিরল রংপুর। প্রথম ম্যাচে ব্যাটিং বিপর্যয়ের কারণে উত্তরাঞ্চলের দলটি হেরেছিল বরিশালের কাছে। এ ম্যাচেও বিপদের গন্ধ পেয়েছিল রংপুর। রাইডার্সের যে ছয় ব্যাটসম্যান আউট হয়েছেন তারা কেউই ২ অঙ্কের কোঠায় নিজের স্কোর নিয়ে যেতে পারেননি- রনি তালুকদার ৬, ব্রেন্ডন কিং ০, নুরুল হাসান সোহান ৮, শামীম পাটওয়ারী ২, মোহাম্মদ নবী ০, মেহেদী হাসান ০। পাওয়ার প্লের প্রথম ৬ ওভারে ৩৭ রান করতেই ৩ উইকেট হারায় রংপুর।

তবে রাইডার্সের উইকেট পতন হতে থাকে এক প্রান্ত দিয়ে। আরেক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন বাবর আজম। শেষ পর্যন্ত তার অভিজ্ঞতার জন্য এ যাত্রায় রক্ষা পেল রংপুর। মিরপুরের উইকেট বরাবরের মতোই গতকালও ছিল অদ্ভুতুড়ে। এখানে দিনের পর দিন খেলেও স্থানীয় ক্রিকেটাররা রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারেন না। ঘণ্টায় ঘণ্টায় উইকেটের আচরণ বদলে গেলে তো করারও কিছু নেই। এমন উইকেটে ব্যাটসম্যানকে রীতিমতো সংগ্রাম করতে হয়। এক একটি ডেলিভারি যেন একটি চ্যালেঞ্জ। তবে কালকের এ ম্যাচে এমন লড়াইয়ে স্থানীয়দের তুলনায় বিদেশিরাই এগিয়ে থাকলেন। কারণ দুই দলেই কাল ভালো করেছেন বিদেশি ব্যাটসম্যানরা। রংপুরের যেমন বাবর এবং ওমরজাই, তেমন স্ট্রাইকার্সের বেনি হাওয়েল ও বেন কাটিং।

কাল প্রথমে ব্যাট করতে নেমে সিলেটও ভয়াবহ ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছিল। ৩৯ রানে ৫ উইকেট হারায় স্ট্রাইকার্স। কিন্তু ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ইংলিশ তারকা হাওয়েল ও অসি তারকা কাটিং মিলে ৬৮ রানের জুটি গড়ায় শেষ পর্যন্ত সিলেটের স্কোর ১২০ হয়েছিল। স্কোরবোর্ডে দুজনই নামের পাশে ৩৭ রান করে যোগ করেন। হাওয়েল ও কাটিং ছাড়া অন্যদের মধ্যে ২ অঙ্কের কোঠায় পৌঁছাতে পেরেছেন কেবল শান্ত, ১৪ রান। চমক দেখাতে ওয়ানডাউনে ব্যাট হাতে নেমেছিলেন সিলেটের ক্যাপ্টেন মাশরাফি। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। ৭ বল থেকে ৬ রান করেই আউট।

ম্যাচ শেষে রংপুর রাইডার্সের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা হাসান মাহমুদ জানালেন, সিলেটেই ব্যাটিং নিয়ে হতাশা কেটে যেতে পারে! রানে ফিরতে পারেন ব্যাটসম্যানরা। সিলেটের উইকেট তো আর মিরপুরের উইকেটের মতো ট্রিকি নয়!

 

সংক্ষিপ্ত স্কোর

সিলেট স্ট্রাইকার্স

১৩৬/৮, ২০ ওভার (শান্ত ১৪, হাওয়েল ৩৭, কাটিং ৩৭, শেখ মেহেদি ৪-০-১৮-২, নবি ৪-০-১৭-১, মুরাদ ৪-১-২৯-১, রিপন ৩-০-১৯-২)।

 

রংপুর রাইডার্স

১২৫/৬, ১৮.২ ওভার (বাবর ৫৬*, ওমরজাই ৪৭*; এনগারাভা ৩.২-০-২৮-১, তানজিম ৪-০-৩৬-১, নাজমুল অপু ৪-০-১৮-১, হেমান্থা ৪-০-২০-৩)।

ফল : রংপুর রাইডার্স ৪ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ : ওমরজাই।

সর্বশেষ খবর