বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা
বাফুফে-হকি ফেডারেশনের সঙ্গে বৈঠক

হিসাবে কোনো ছাড় দেবেন না পাপন

হিসাবে গরমিল দেখলেই ব্যবস্থা। পরবর্তীতে আর সহযোগিতা পাবে না অনিয়মে জড়ানো ফেডারেশন। বিশেষ করে যে খাতে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হবে সেই খাতেই খরচ করতে হবে। ভিন্ন খাতে খরচ করা যাবে না। এই সতর্কবার্তা মঙ্গলবার অন্য ফেডারেশনগুলোকেও জানিয়ে দিয়েছেন যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী।

ক্রীড়া প্রতিবেদক

হিসাবে কোনো ছাড় দেবেন না পাপন

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হিসেবেই নাজমুল হাসান পাপনের পরিচিতি ছিল এতদিন। ক্রিকেটেই ছিল তার বিচরণ। তবে নতুন দায়িত্ব পেয়েই ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়নের লক্ষ্যে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন তিনি। যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী একের পর এক ফেডারেশনের সঙ্গে আলোচনায় বসছেন। তাদের সমস্যার কথা শুনছেন। সম্ভাবনার কথাও জানছেন। সেই হিসেবে ভবিষ্যৎ কর্মপন্থাও ঠিক করে নিচ্ছেন। গতকাল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন ও হকি ফেডারেশনের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন পাপন। দীর্ঘ বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানিয়েছেন, সব ফেডারেশনকেই সহযোগিতা দেওয়া হবে। তবে পাশাপাশি সতর্ক করে বলেছেন, সবকিছুর হিসাবও নেওয়া হবে।

ফুটবল বর্তমানে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় ভুগছে মাঠের কারণে। দীর্ঘ প্রায় আড়াই বছর ধরে চলছে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজ। বারবার মেয়াদ বাড়িয়েও কাজ শেষ হচ্ছে না। তবে এবার নতুন ডেটলাইনের মধ্যেই (৩১ ডিসেম্বর) কাজ শেষ করার কথা জানিয়েছেন পাপন। এ বছরেই নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। বাফুফে এই টুর্নামেন্টের আয়োজক হতে চায়। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম না পাওয়ায় ভিন্ন ভেন্যুর সন্ধান করতে হবে বাফুফেকে। বাফুফের সিনিয়র সহসভাপতি বসুন্ধরা কিংস অ্যারিনাকে বিকল্প ভেন্যু হিসেবে ভাবছেন বলে জানিয়েছেন। নাজমুল হাসান পাপন আপাতত কমলাপুর স্টেডিয়ামটা ঠিক করে দিতে চান। যাতে টুর্নামেন্টগুলো চালানো যায়। সরেজমিন গিয়ে স্টেডিয়ামের সমস্যাগুলো দেখবেন তিনি। এরপর দ্রুত কাজে হাত দেবেন। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের কাজের অগ্রগতিও পর্যবেক্ষণে যাবেন পাপন।

কেবল ফুটবলই নয়, হকিও মাঠ সংকটে ভুগছে। ঢাকার বাইরে বেশ কয়েকটি জেলায় হকির টার্ফ প্রয়োজন। যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রীও বিষয়টি নিয়ে ভাবছেন। তিনি বলেন, ‘এটি আসলেই প্রয়োজন। হকির অবকাঠামো ছাড়া খেলোয়াড় উঠে আসবে কোথা থেকে। আমরা তাই ওদের চাহিদা পূরণের চেষ্টা করব।’ হকি ফেডারেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আউটডোর হকিতে না হলেও ফাইভ এ সাইড ইনডোর হকিতে বিশ্বকাপ খেলা সম্ভব। এই লক্ষ্য পূরণের জন্য অবকাঠামোর প্রয়োজন। সম্ভাবনা যেখানে আছে নাজমুল হাসান পাপন সেখানেই বেশি জোর দিতে চান। সব চাহিদা পূরণ করা সম্ভব না হলেও আপাতত মাঠের বিষয়টি নিয়েই কাজ করতে চান যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী। তাছাড়া আগামী অর্থবছরে ক্রীড়া খাতে বাজেটের পরিমাণও বাড়ানোর চেষ্টা করবেন বলে কথা দিয়েছেন তিনি।

গত পরশু ৯টি ফেডারেশনের সঙ্গে আলাপ করেছেন নাজমুল হাসান পাপন। গতকাল দুটি ফেডারেশনের সঙ্গে আলাপ করলেন। কিছু কিছু ফেডারেশনের ফান্ডের সমস্যা নেই। যেমন শুটিং ও আর্চারির প্রয়োজন অবকাঠামো। ফুটবল ও হকির বড় ফান্ড প্রয়োজন। তাদের বিদেশে ম্যাচ খেলতে যেতে হয়। আবার বিদেশি দল এলেও বাড়তি খরচ আছে। এসব জানেন পাপন। এ কারণেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবেন। তবে হিসাবের খাতাটাও বেশ কড়াকড়ি করে দেখবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। পেশাদার লোক দিয়ে চেক অ্যান্ড ব্যালান্স করা হবে। হিসাবে গরমিল দেখলেই ব্যবস্থা। পরবর্তীতে আর সহযোগিতা পাবে না অনিয়মে জড়ানো ফেডারেশন। বিশেষ করে যে খাতে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হবে সেই খাতেই খরচ করতে হবে। ভিন্ন খাতে খরচ করা যাবে না। এই সতর্কবার্তা মঙ্গলবার অন্য ফেডারেশনগুলোকেও জানিয়ে দিয়েছেন যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী।

বাফুফের সিনিয়র সহ সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদি মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পর সাংবাদিকদের বলেন, ‘নতুন মন্ত্রী আমাদের ক্রীড়াঙ্গনের লোক। আমাদের সঙ্গে সুন্দর আলোচনা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম দ্রুত পাওয়া, জেলা পর্যায়ে স্টেডিয়ামসহ আমাদের কার্যক্রম সবকিছু বিষয়ে অবহিত করেছি।’

 

 

সর্বশেষ খবর