সোমবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

শঙ্কামুক্ত নন মুস্তাফিজ মাথায় ৫ সেলাই

ক্রীড়া প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম থেকে

শঙ্কামুক্ত নন মুস্তাফিজ মাথায় ৫ সেলাই

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের অনুশীলনের সময় মাথায় বলের আঘাতে পাঁচটি সেলাই দিতে হয়েছে কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমানকে। সিটি স্ক্যানের পর কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ফিজিও জাহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, মুস্তাফিজের মাথার চোট শুধু বাইরের অংশে। অভ্যন্তরীণ কোনো চোট নেই। তাকে ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তবে এখনো শঙ্কামুক্ত নন মুস্তাফিজ। গতকাল সন্ধ্যায় বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশিষ চৌধুরী বলেন, ‘সিটি স্ক্যানে ইন্টারনাল কোনো ইনজুরি ধরা না পড়লেও এ ধরনের চোটের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখতে হয়। অনেক সময় ৭২ ঘণ্টাও পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন হতে পারে। তারপর দায়িত্বে থাকা নিউরোসার্জন একটা সিদ্ধান্তে আসতে পারবেন। তাই এখনই পরিষ্কার করে কিছু বলা যাচ্ছে না। কারণ মাথায় আঘাত লাগার পর ভারতীয় ক্রিকেটার রমন লাম্বাও ২৪ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে ভালো ছিলেন, তারপর দ্বিতীয় দিনে গিয়ে তার মৃত্যু হয়!’

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ফিজিও বক্তব্য অনুযায়ী ইনজুরি গুরুত্ব নয়। সিটি স্ক্যানে বিপজ্জনক কিছু ধরা পড়েনি। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের দেওয়া এক বিবৃতিতে ফ্র্যাঞ্চাইজির ফিজিও এস এম জাহিদুল ইসলামের দাবি, ‘মুস্তাফিজুর রহমান এখন ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের নিউরোসার্জন টিমের নিবিড় তত্ত্বাবধানে আছেন। তার জিসিআই স্কেল ১৫/১৫। তিনি এখন শঙ্কামুক্ত। আশা করি, ২৪ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণ শেষে আমরা তাকে টিম হোটেলে নিয়ে যেতে পারব।’

জিসিআই স্কেল ১৫ থাকা মানে মুস্তাফিজ সজ্ঞানে আছেন। জাহিদুল ইসলামও বলেন, মাথায় সেলাই লাগলেও বড় কোনো শঙ্কা নেই মুস্তাফিজকে ঘিরে। তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে জেনেছি মুস্তাফিজের মাথায় পাঁচটি সেলাই করা হয়েছে। নিউরোসার্জন তাকে দেখেছেন। আপাতত কোনো শঙ্কা নেই। তিনি নিজের নাম বলতে পারছেন, সব বিষয়ে যোগাযোগ করতে পারছেন। কনকাশনেরও কোনো লক্ষণ নেই।’

ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের পরামর্শক ডা. মঈনউদ্দিন এম. ইলিয়াছ জানিয়েছেন, মূলত সতর্কতা হিসেবেই হাসপাতালে রাখা হয়েছে মুস্তাফিজকে। তিনি বলেন, ‘মুস্তাফিজুর রহমানের সিটি স্ক্যানে আমরা ভয়ের কোনো কারণ পাইনি। কিছুটা হেমাটমা (রক্তজমাট) আছে। সেটা মস্তিষ্ক ও হাঁড়ের বাইরে। অভ্যন্তরীণ কোনো হেমাটমা নেই। তবে ২৪ ঘণ্টা পেরোনোর আগে কাউকে শঙ্কামুক্ত বলা যাবে না।’

তাই মুস্তাফিজের বিষয়ে এখনই পরিষ্কার করে কিছু বলতে পারছেন না চিকিৎসকরা। কারণ মাথার ইনজুরি অনেক সময় টেস্টে ধরা পড়ে না। পরে জটিল হয়ে যায়। তাই মুস্তাফিজের বিষয়ে কোনো রকম ঝুঁকি নিতে চান না চিকিৎসকরা। তাই কঠিন কোনো সমস্যা না হলেও অন্তত এক সপ্তাহ যে মুস্তাফিজ খেলতে পারছেন তা নিশ্চিত। দেবাশিষ বলেন, ‘মাথার চোট এমনিতে সাধারণত সেলাই থাকলে তো আমরা ৪-৫ দিন (খেলতে) নিষেধ করি। সেটা এখন মূল বিষয় নয়। এখন মাথার চোটটা পার হলে সেটা দেখা যাবে। কনকাশনের ব্যাপারটা আগে ক্লিয়ার হোক, তারপর দেখব। আপাতত স্ক্যানটা ভালো, এটাই বড় কথা।’

গতকাল জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের নেটে অনুশীলনে লিটন কুমার দাসকে বোলিং করছিলেন মুস্তাফিজ। একটি ডেলিভারির পর নিজের বোলিং মার্কে ফেরার সময় একটি বল এসে আঘাত করে তার মাথার বাম পাশে পেছন দিকে। সঙ্গে সঙ্গে মাথায় হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন মুস্তাফিজ। মাথা থেকে রক্ত ঝরতে থাকে। দ্রুত মুস্তাফিজকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই পর্যবেক্ষণে আছেন কাটার মাস্টার।

সর্বশেষ খবর