শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

কুমিল্লাকে হারিয়ে প্লে-অফে বরিশাল

ক্রীড়া প্রতিবেদক

কুমিল্লাকে হারিয়ে প্লে-অফে বরিশাল

শেষ দল হিসেবে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) নকআউট পর্ব নিশ্চিত করল ফরচুন বরিশাল। গতকাল মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে ৬ উইকেটে হারায় তারা। ৪৮ বলে ৬৬ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা হয়েছেন বরিশালের ক্যাপ্টেন তামিম ইকবাল।

প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেটে ১৪০ রান করে কুমিল্লা। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দুই বল হাতে রেখেই জিতে যায় ফরচুন।

আগেই প্লে-অফ নিশ্চিত হওয়ায় এই ম্যাচ নিয়ে কোনো টেনশন ছিল না ভিক্টোরিয়ান্সের। সে কারণেই রিল্যাক্স মুডে খেলতে নেমে পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ পেল বিপিএলের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। কোয়ালিফায়ারে কুমিল্লার প্রতিপক্ষ শক্তিশালী রংপুর রাইডার্স। কঠিন লড়াইয়ের আগে এ হার কুমিল্লার জন্য সতর্কবার্তা বলেই মনে করেন দলটির প্রতিনিধি হয়ে প্রেস কনফারেন্সে আসা পেসার মুশফিক হাসান। তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য সতর্কবার্তা। সামনে কঠিন ম্যাচ। তার আগে আমরা একটা বার্তা পেয়ে গেলাম, কোনো রকম রিল্যাক্স হওয়া যাবে না।’

অন্যদিকে, দারুণ এই জয়ে পয়েন্ট তালিকার তিনে থেকেই প্লে-অফ নিশ্চিত করল বরিশাল। ১২ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ১৪। সমান পয়েন্ট চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জাসেরও। তবে নেট রানরেটে পিছিয়ে থাকায় তারা তালিকার চার নম্বরে। এমিনেটরে চ্যালেঞ্জার্সের মুখোমুখি হবে ফরচুন।

গ্রুপ পর্ব শেষে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষেই রইল রংপুর রাইডার্স। ১২ ম্যাচে উত্তরাঞ্চলের দলটির পয়েন্ট ১৮। গতকাল শীর্ষে যাওয়ার সুযোগ ছিল কুমিল্লার সামনে। বরিশালকে বড় ব্যবধানে হারালেই হতো। কিন্তু পারেনি কুমিল্লা।

গতকাল বোলাররাই ফরচুন বরিশালকে গড়ে দেয় জয়ের ভীত। টি-২০ ক্রিকেটে ১৪১ রানের টার্গেট যে আহামরি কিছু নয়। তারপরও কুমিল্লার বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ম্যাচ শেষ ওভার পর্যন্ত গড়িয়েছে। শেষ ওভারে জয়ের জন্য বরিশালের দরকার ছিল ৮ রান। প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকিয়ে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ চাপ কমিয়ে ফেলেন। ২ বল আগেই জয় নিশ্চিত হয়ে যায় বরিশালের।

গতকাল টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে মাত্র ৩৭ রান করে তারা। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়তে থাকে। টপ অর্ডার ও মিডল অর্ডার পুরোপুরি ব্যর্থ। তবে লোয়ার অর্ডারে দাপট দেখিয়েছেন জাকের আলী। ভিক্টোরিয়ান্সের এই তারকা বাইশগজে গিয়ে রীতিমতো ঝড় তুলেছিলেন। মাত্র ১৬ বলে খেলেছেন ৩৮ রানের হার না মানা ইনিংস। এই ক্যামিও ইনিংসে ছিল ৪টি বিশাল ছক্কা।

জাকের আলীর ঝড়েই শেষ পর্যন্ত কুমিল্লার ইনিংসটা ১৪০ হয়েছে। তারকা ব্যাটসম্যানরা একসঙ্গে ব্যর্থ। লিটন দাস ১২ বলে ১২ রান, তৌহিদ হৃদয় ২৬ বলে ২৫, মঈন আলী ২২ বলে ২৩ রান। এমনকি ক্যারিবীয় ঝড় আন্দ্রে রাসেলও সুবিধা করতে পারেননি। ১১ বলে মাত্র ১৪ রান করে আউট হয়েছেন।

এ ম্যাচেও সুনীল নারাইনকে ওপেনিংয়ে নামিয়ে একটা চমক দেখাতে চেয়েছিল কুমিল্লা। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। এ ম্যাচে দারুণ বোলিং করেছেন ফরচুনের স্পিনার তাইজুল ইসলাম। তিন ওভার বল করে মাত্র ২০ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ম্যাচ শেষে তাইজুল জানালেন, তার ওপর টিম ম্যানেজমেন্ট বিশ্বাস রেখেছেন, আর তিনি বিশ্বাসের প্রতিদান দিচ্ছেন।

এ ম্যাচেও ছিল মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের দাপট। চার ওভারে তিনি দিয়েছেন মাত্র ১৬ রান, তুলে নিয়েছেন দুটি উইকেট। তবে প্রথম তিন ওভারে এই পেস অলরাউন্ডার দিয়েছেন মাত্র ৫ রান। বিপিএলে মাঝপথে খেলতে নেমে প্রতি ম্যাচেই দাপট দেখাচ্ছেন। সাইফুদ্দিন যেভাবে দাপটের সঙ্গে পারফর্ম করছেন শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সিরিজে বাংলাদেশ দলে তাকে অন্তর্ভুক্ত করলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না!

সর্বশেষ খবর