বুধবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

রেফারিংয়ে বিরক্ত বিদেশিরা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

সত্তর, আশি কিংবা নব্বইয়ের দশকে শুধু ফুটবলাররা নন, রেফারিরাও তারকা খ্যাতি পেয়েছিলেন। জহিরুল হক, ননী বসাক, জেড আলম, মুনির হোসেন, দলিল খান, মো. মহিউদ্দিন, এম এ আজিজ, মো. নাজির, আর আলম, রফিকুল ইসলামদের ম্যাচ পরিচালনা দেখে মুগ্ধ হয়ে যেতেন দর্শক। তাঁদের ঘিরে বিতর্ক কমই হয়েছে। সত্তর ও আশিকে ঘরোয়া ফুটবলে সোনালি যুগ বলা হয়। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ততটা জ্বলে উঠতে না পারলেও স্থানীয় লিগ অথবা টুর্নামেন্টে খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স ছিল চোখে পড়ার মতো। কত খেলোয়াড় যে ওই সময়ে তারকা খ্যাতি পেয়েছেন বলে শেষ করা যাবে না। নব্বইয়ের দশকেও তারকা তৈরি হয়। এর পেছনে ব্যক্তিগত সাধনা ও পরিশ্রম তো আছেই, রেফারির ভূমিকাও অস্বীকার করা যাবে না।

বেকেন বাওয়ার, জোয়ানক্রইফ ও দিয়েগো ম্যারাডোনা বলেছিলেন, ম্যাচে ভালো রেফারিং ভালো খেলতে সহায়তা করে। দুর্বল রেফারিং ম্যাচের সর্বনাশ যেমন ডেকে আনে, খেলোয়াড়দের ওপরও প্রভাব ফেলে। ম্যাচের সৌন্দর্য ম্লান করে দেওয়ার জন্য রেফারির একটি ভুল সিদ্ধান্তই যথেষ্ট। ঘরোয়া ফুটবল বিশেষ করে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে দুর্বল অথবা বাজে রেফারিং নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই। তবুও এ নিয়ে বাফুফের কোনো মাথাব্যথা নেই। ভালো রেফারিংয়ে উৎসাহ দিতে এবারই প্রথম লিগ কমিটি মাসসেরা রেফারি পুরস্কার দিচ্ছে। দক্ষ রেফারিংয়ে যে পুরস্কার মেলে তা লিগ কমিটি দেখাতে চাচ্ছে। এর মধ্যে একজন সেরার পুরস্কারও পেয়েছেন। ভাবা হয়েছিল এতে অন্যরাও ভালো বাঁশি বাজাতে উৎসাহ পাবেন। কিন্তু কোথায় কী! ম্যাচ পরিচালনায় সেই বেহাল দশা।

বাংলাদেশে দীর্ঘদিন মানসম্পন্ন খেলোয়াড়ের দেখা না মেলার পেছনে রেফারিংকেও দায়ী করা যায়। লিগে দেখা যাচ্ছে, বারবার ফাউল করার পরও রেফারি অথবা সহকারী রেফারি কোনো অ্যাকশনে যাচ্ছেন না। অথচ যাকে টার্গেট করে উত্ত্যক্ত করা হচ্ছে তিনি উত্তেজিত হলেই হলুদ কার্ড তো বটেই, লাল কার্ড পর্যন্ত পাচ্ছেন। পেশাদার লিগে এ যেন পরিচিত দৃশ্য। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বিদেশি ফুটবলার ক্ষোভের সঙ্গে জানালেন, বাংলাদেশে রেফারির ম্যাচ পরিচালনা তাকে হতাশ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমাকে প্রায় প্রতি ম্যাচে জার্সি টেনে আক্রমণে বাধা দেওয়া হচ্ছে। রেফারিরা তা দেখেও যেন না দেখার অভিনয় করছেন। এ ধরনের দুর্বল রেফারিংয়ে হয়তো ভালো খেলা দল জিততে পারছে না। কিন্তু এতে বাংলাদেশের ফুটবলের বড় ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি জরুরি ভিত্তিতে বাফুফের গুরুত্ব দেওয়া উচিত। তা না হলে এক রেফারির কারণে বাংলাদেশের ফুটবলে মানসম্পন্ন বিদেশিদের দেখা মিলবে না। সত্যি বলতে কি, এতে অনেক বিদেশিই বিরক্ত।’

সর্বশেষ খবর