সোমবার, ৪ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা
মুখোমুখি

ভলিবল উন্নয়নে পাঁচ বছরের পরিকল্পনা

সম্ভাবনাময় খেলা ভলিবল। জনপ্রিয় এই খেলায় বাংলাদেশ বর্তমানে ভালো করছে। সারা বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ৬৫ নম্বরে। ভলিবলের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভলিবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান মিকুর সঙ্গে কথা বলেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের রাশেদুর রহমান-

ভলিবল উন্নয়নে পাঁচ বছরের পরিকল্পনা

আশিকুর রহমান মিকু

প্রশ্ন : ভলিবলের সঙ্গে কীভাবে যুক্ত হলেন?

উত্তর : আমাদের সময় একই সঙ্গে একজন নানা খেলা খেলতেন। আমি ভলিবল খেলতাম। পাশাপাশি অ্যাথলেটিকসের শর্টপুটে জাতীয় পর্যায়ে সোনার পদকও পেয়েছি। খুলনা লিগে ফুটবল খেলেছি। আমাদের সময়টা এমনই ছিল। এখন তো সব খেলাই আলাদা হয়ে গেছে। নড়াইল থেকে ভলিবলের অনেক খেলোয়াড় এসেছে। ভলিবল নিজে খেলেছি। আমাদের হাত দিয়ে অনেক খেলোয়াড় বেরিয়ে এসেছে। এভাবেই ভলিবলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাই। প্রথমে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলাম। পরে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নিয়েছি।

 

প্রশ্ন : বাংলাদেশের ভলিবল বর্তমানে কোন পর্যায়ে আছে?

উত্তর : সারা বিশ্বে ২২২টি দেশ ভলিবল খেলে। ফুটবলের চেয়েও সংখ্যাটা বেশি। ফুটবল খেলে ২১১টি দেশ। আমরা ভলিবলের র‌্যাঙ্কিংয়ে ৬৫ নম্বরে আছি। র‌্যাঙ্কিংয়ে আমরা ভারতের (৬৬) চেয়েও ওপরে আছি। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের ওপরে আছে পাকিস্তান ( ৪৯), শ্রীলঙ্কা (৬০) ও আফগানিস্তান (৬১)।

 

প্রশ্ন : স্কুল এবং বয়সভিত্তিক দলগুলো নিয়ে কী ধরনের কাজ করছেন?

উত্তর : স্থানীয়ভাবে কোনো খেলা সমৃদ্ধ হলে তা আন্তর্জাতিক পর্যায়েও সাফল্য বয়ে আনবে। এ লক্ষ্যেই আমরা স্কুল পর্যায়ে ভলিবল আয়োজন করছি। মহানগরীতে ৫১টি স্কুল অংশ নিয়েছে। সব খেলার জন্যই স্কুল হচ্ছে বড় ক্ষেত্র। বয়সভিত্তিক দলগুলোতেও জোর দিচ্ছি। ২০২২ সালে ১৯টি দলের অংশগ্রহণে বাহরাইনে অনুষ্ঠিত হয়েছে এশিয়ান ভলিবল অনূর্ধŸ-২০ চ্যাম্পিয়নশিপ। আমরা সেখানে পঞ্চম হয়েছি।

প্রশ্ন : খেলোয়াড়দের মান বৃদ্ধির জন্য কী ধরনের পরিকল্পনা নিয়েছেন?

উত্তর : আমরা স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। ৬ মার্চ থেকে ৪০ জনকে চার মাসের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। মার্চ, এপ্রিল, মে ও জুন। ইন্দোনেশিয়ায় এশিয়ান ভলিবল চ্যাম্পিয়নশিপে যাবে এই দল। আমরা গতবার পাঁচে ছিলাম। এবার ২/৩ নম্বরে আসতে চাই। এসবের পাশাপাশি আমরা এখন ‘এ’ টিম করব। সেখান থেকে ভালো করলে জাতীয় দলে চলে যাবে।

 

প্রশ্ন : আন্তর্জাতিক মানের ভলিবল স্টেডিয়াম এবং অবকাঠামো গড়ে তোলার পরিকল্পনা আছে কি না?

উত্তর : আমাদের কোনো আন্তর্জাতিক মানের ভলিবল স্টেডিয়াম নেই। আমি মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বলেছি স্টেডিয়াম তৈরির সময় যেন যারা ব্যবহার করবে তাদের সঙ্গে আলাপ করে নেয়। আমাদের স্টেডিয়ামকে আন্তর্জাতিক সংস্থা স্বীকৃতি দেয়নি। এশিয়ান সেন্ট্রাল জোন চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজন করার সময় আমাদের টুর্নামেন্টটা মিরপুরে আয়োজন করতে হলো। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে হলে এ স্টেডিয়ামে আরও কাজ করতে হবে।

 

প্রশ্ন: ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কিছু বলুন। বাংলাদেশকে ভলিবলে কোথায় দেখতে চান?

উত্তর : আমরা পাঁচ বছরের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছি। আগে এখানে সকালে দুই ঘণ্টা, বিকালে দুই ঘণ্টা প্রশিক্ষণ হতো। এখন এটা চলে আট ঘণ্টা। স্টেমিনা বাড়ছে। খাবারের ক্ষেত্রেও কোচের পরামর্শ মেনে সবকিছু ঠিক করা হচ্ছে। এ অঞ্চলের মূল শক্তি হলো ভারত। পাকিস্তানও পরাশক্তি। শ্রীলঙ্কাও শক্তিশালী দল। এই তিন দেশকে আমরা পরাজিত করতে চাই। আমার সময় শেষের দিকে। এই শেষ সময়ে অন্তত দক্ষিণ এশিয়ায় ভলিবলে বাংলাদেশকে সেরা দল হিসেবে দেখতে চাই।

 

প্রশ্ন : মেয়েদের ভলিবল নিয়ে কীভাবে কাজ করছেন? 

উত্তর : আন্তজেলা মেয়েদের টুর্নামেন্ট শেষ হয়েছে। আমাদের মেয়েদের দল দুর্বল। অনেকের বিয়ে হয়ে গেছে। আগের মতো পারফরম্যান্স নেই অনেকের। তবে আমরা এই দলকে গুরুত্ব দিচ্ছি। আমাদের ফেডারেশনের সভাপতি মেয়র আতিকুল ইসলামও নারী দল গঠনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।

 

প্রশ্ন : ভলিবল খেলোয়াড়দের জন্য কী ভাবছেন। তাদের আয় কীভাবে বাড়তে পারে?

উত্তর : খেলোয়াড়দের আর্থিক সচ্ছলতার দিকটা নিশ্চিত করা গেলে তারা ভালো করবে। আমরা বিপিএলের মতো একটা লিগ করার পরিকল্পনা করছি। আমাদের প্রেসিডেন্ট একটা কমিটিও করেছেন এটা নিয়ে। সহসাই হয়তো এটা করা সম্ভব হবে না। তবে আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি।

 

সর্বশেষ খবর