বুধবার, ৬ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে মাথাব্যথা!

শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টি-২০ আজ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে মাথাব্যথা!

শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টি-২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচে হারলেও বীরত্ব দেখিয়েছে বাংলাদেশ! ২০৭ রানের পাহাড়সম টার্গেট টপকাতে নেমে রানের খাতা খোলার আগেই উইকেট হারিয়েও ২০৩ রান করেছিলেন টাইগাররা। শেষ ওভারে ম্যাচ বাংলাদেশের হাতেই ছিল। কিন্তু স্বীকৃত ব্যাটারের অভাবে শেষ রক্ষা হয়নি। হার দিয়ে সিরিজ শুরু করেছে স্বাগতিকরা। আজ সিলেটে লঙ্কানদের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টি-২০ খেলতে নামছে লাল-সবুজরা। সিরিজে সমতা ফেরাতে হলে জয়ের বিকল্প নেই।

সামনেই টি-২০ বিশ্বকাপ। তাই জয়-পরাজয়ের চেয়েও বড় বিষয় হচ্ছে কম্বিনেশন ঠিক করা। ক্যাপ্টেন নাজমুল হাসান শান্তর জন্য এটা একটা বড় পরীক্ষা। বিশ্বকাপের আগে দলকে তিনি কতটা গুছিয়ে নিতে পারেন সেটাই বড় বিষয়। প্রথম ম্যাচে ব্যাট হাতে ক্যারিশমা দেখিয়েছেন জাকের আলী। মাত্র ৩৪ বলে ৬৮ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলে দলকে জয়ের খুবই কাছাকাছি নিয়ে গিয়েছিলেন। দাপুটে ব্যাটিং করেছেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও। ২৭ বলে দারণ এক হাফ সেঞ্চুরি করেন।

তবে প্রথম ম্যাচে দুর্দান্ত ব্যাটিং করলেও বাংলাদেশের ব্যাটিং পজিশন এবং টপঅর্ডারের ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এমন ম্যাচের প্রথম চার ব্যাটসম্যান ছিলেন পুরোপুরি নিষ্প্রভ। ওপেনার লিটন দাস রানের খাতাই খুলতে পারেননি। আরেক ওপেনার সৌম্য সরকার ১১ বলে ১২ রান করে আউট। তিনে নামা ক্যাপ্টেন নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাটিং ছিল রীতিমতো দৃষ্টিকটু!

যেখানে দলের জন্য দরকার দুই শ স্ট্রাইকরেটে ব্যাটিং, সেখানে কি না শান্ত ২২ বল থেকে করেছেন মাত্র ২০ রান। শুরুতে যে কোনো ব্যাটসম্যান আউট হতেই পারেন। তাই বলে ২২ বল খেলা কোনো ব্যাটসম্যানদের স্ট্রাইকরেট মাত্র ৯০! সদ্যসমাপ্ত বিপিএলে হতাশাজনক পারফরম্যান্স করা শান্ত যেন নিজের ব্যক্তিগত স্কোরকে বেশি গুরুত্ব দিতে গিয়েই দলকে ডুবিয়েছেন!

সুপার ফর্মে থাকা তৌহিদ হৃদয় চার নম্বরে ব্যাট করতে নেমে সুবিধা করতে পারেননি! আর হৃদয়েরই বা দোষ কী? বিপিএলে তিনি তিন নম্বরে ব্যাট হাতে নেমে ১৫০ স্ট্রাইকরেটে ৪০-এর কাছাকাছি গড় নিয়ে ৪৬২ রান করার পরও জাতীয় দলে সেই পজিশনে জায়গা হয়নি। ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তন করে হৃদয়ের প্রতি যে চরম অবিচার করা হয়েছে তা নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে তুলে ধরেছেন কোচ ও ক্রিকেট বিশ্লেষক নাজমুল আবেদীন ফাহিম। তিনি লিখেছেন, ‘বিপিএলজুড়ে তিন-এ খেলা ইনফর্ম তৌহিদ হৃদয়কে কেন চারে খেলতে হলো সেটা বুঝতে পারলাম না। প্রথম উইকেট পড়ার পর ব্যাটিংয়ে আসা এবং দ্বিতীয় উইকেট পড়ার পর আসা, এক হওয়ার কথা নয়। বিশেষ করে সেটি যদি ইনিংসের সূচনাতেই হয়। এই বিপিএলেই দ্রুত প্রথম উইকেট পতনের পর বেশ কয়েকবার ওকে  দলের হাল ধরতে দেখেছি। এক্ষেত্রেও সেটিই হতে পারত।’

শুধু তাই নয়, জাতীয় দলের জার্সিতে ওপেন করা সৌম্য সরকার বিপিএলে ওই পজিশনে সুযোগই পাননি। ফরচুন বরিশালে তামিম ইকবালের দলে তাকে খেলতে হয়েছে ৪-৫ নম্বরে। জাতীয় দল যে ক্রিকেটারকে দিয়ে ওপেন করাবে তাকে কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি কেন মিডল ও লোয়ার অর্ডারে নিয়মিত ব্যাট করাল! তবে এটাও ঠিক যে, টি-২০ এমন এক ফরম্যাট যে কোনো ক্রিকেটারকে দলের প্রয়োজনে যে কোনো পজিশনে ব্যাট করার জন্য প্রস্তুত থাকাই উত্তম!

শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ লড়াই করেছে ঠিকই, কিন্তু ওই ম্যাচে জাকের আলী এবং মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ব্যাটিং ছাড়া আর কোনো দিক খুঁজে পাওয়া কঠিন! বোলাররাও সুবিধা করতে পারেননি। বিশেষ করে স্লগে বাংলাদেশের বোলিং একদমই ভালো হয়নি। শেষ চার ওভারে লঙ্কানরা ৬৪ রান করে, ওভারপ্রতি ১৬! এখানেই যেন ম্যাচটা শেষ হয়ে যায়। তাই শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে আজ জিততে হলে বোলিংয়ে ভালো করার বিকল্প নেই।

সর্বশেষ খবর