রবিবার, ২৪ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

টাইব্রেকারে বাংলাদেশের যত শিরোপা

মনোয়ার হক

টাইব্রেকারে বাংলাদেশের যত শিরোপা

১৯৭৩ সাল থেকেই বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলছে। জাকারিয়া পিন্টুর নেতৃত্বে মারদেকা কাপে জাতীয় দলের অভিষেক হয়। এরপর বাংলাদেশ একাধিক টুর্নামেন্ট খেললেও প্রথম শিরোপা জিততে লাগে ১৮ বছর অর্থাৎ দেড় যুগ। ১৯৮৯ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট গোল্ডকাপে বাংলাদেশ লাল দল চ্যাম্পিয়ন। নাম লাল হলেও মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে আয়োজিত আন্তর্জাতিক এ আসরে মূলত বাংলাদেশ জাতীয় দল অংশ নিয়েছিল। এরপর ১৯৯৫ সালে দেশের বাইরে বাংলাদেশ প্রথম শিরোপা জেতে। সেবার মিয়ানমারে অনুষ্ঠিত চার জাতি ফুটবলের ফাইনালে বাংলাদেশ ২-১ গোলে হারায় স্বাগতিক মিয়ানমারকে।

৫৩ বছরের ইতিহাসে পুরুষ জাতীয় দল প্রেসিডেন্ট কাপ, চার জাতি চ্যালেঞ্জ কাপ, সাফ গেমস (বর্তমান এসএ গেমস), থিম্পু কাপ, সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ-এ পাঁচটি ট্রফি জেতে বাংলাদেশ। ২০১০ সালে বাংলাদেশ এসএ গেমসে হারানো শিরোপা উদ্ধার করে। তবে সেবার থেকেই সাউথ এশিয়ান গেমস ফুটবলে জাতীয় দলের পরিবর্তে অনূর্ধ্ব-২৩ দল অংশ নিচ্ছে। পাঁচের মধ্যে বাংলাদেশ দুটি টুর্নামেন্টে টাইব্রেকারে চ্যাম্পিয়ন হয়।

১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ লাল দল ও দক্ষিণ কোরিয়ার সম্মিলিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইনাল ম্যাচ নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ে নিষ্পত্তি না হওয়ায় ম্যাচ টাইব্রেকারে গড়ায়। এখানেই কায়সার হামিদ, আসলাম, মুন্না, সাব্বিররা শিরোপার উৎসব করেন। টাইব্রেকারে ৩-২ গোলে জিতে যায় লাল দল। ওই টুর্নামেন্টে সেমিফাইনালে নিয়মিত গোলরক্ষক ছাঈদ হাছান কানন ইনজুরির শিকার হলে ফাইনালে গোলরক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন মো. সেলিম। ওই সময় মুক্তিযোদ্ধায় খেলা সেলিম গোলরক্ষক হিসেবে খুব একটা পরিচিত ছিলেন না। কিন্তু টাইব্রেকারে ৩টি গোল ঠেকিয়ে হয়ে যান বাংলাদেশের প্রথম শিরোপা জয়ের নায়ক। দক্ষিণ কোরিয়ার ৩টি শট তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে রুখে দেন। এর পরই তার তারকা খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে।

দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্বকাপ বলা হয় সাফ চ্যাম্পিয়নশিপকে। অথচ এ আসরেও বাংলাদেশ সুবিধা করতে পারছে না। একবারই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ২০০৩ সালে অনুষ্ঠিত আসরে ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল মালদ্বীপ। নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ে ম্যাচ ১-১ গোলে ড্র ছিল। টাইব্রেকারে ৪-৩ জিতে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। গোলরক্ষক আমিনুল হক দৃঢ়তার সঙ্গে মালদ্বীপের ২টি শর্ট রুখে দেন। সেবার তিনি সাফসেরা গোলরক্ষকের পুরস্কারও পান। অনূর্ধ্ব-১৫ সাফে বাংলাদেশ ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। নির্ধারিত সময়ে ফল নিষ্পত্তি না হওয়ায় টাইব্রেকারে চ্যাম্পিয়ন হয়।

১৯৯৯ সালে নেপালে অনুষ্ঠিত সাফ গেমস ফুটবল ফাইনালে বাংলাদেশ নির্ধারিত সময়ে ১-০ গোলে স্বাগতিকদের হারিয়ে সোনা জিতেছিল। গোলদাতা ছিলেন আলফাজ আহমেদ। সেমিফাইনালে টিপুর গোলে বাংলাদেশ হারায় ভারতকে। ২০১০ সালে এসএ গেমসে আফগানিস্তানকে ৪-০ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো সোনা জেতে বাংলাদেশ। ভুটানে থিম্পু কাপেও নির্ধারিত সময়ে বাংলাদেশ গোল করে চ্যাম্পিয়ন হয়।

টাইব্রেকার নিয়ে আলোচনার মূল কারণ নারী বয়সভিত্তিক সাফ ফুটবলে বাংলাদেশ টানা দুই শিরোপা জেতে। টাইব্রেকারে অবশ্য অনূর্ধ্ব-১৯ ফুটবলে বাংলাদেশ-ভারত যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন হয়। নির্ধারিত সময়ে ১-১ গোলে ড্র ও টাইব্রেকারে উভয় দল ১১টি করে গোল করায় টুর্নামেন্ট কমিটি যুগ্ম চ্যাম্পিয়নের ঘোষণা দেয়। অনূর্ধ্ব-১৬ নারী সাফে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয় টাইব্রেকারে। নির্ধারিত সময়ে ১-১ গোলে ড্র থাকে। টাইব্রেকারে ৩-২ গোলে ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় মেয়েরা। জয়ের নায়ক গোলরক্ষক ইয়ারজান। তিনি ৩টি শট রুখে দেন।

 

সর্বশেষ খবর