সোমবার, ২৫ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

জয়ের অপেক্ষায় শ্রীলঙ্কা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

জয়ের অপেক্ষায় শ্রীলঙ্কা

দ্বিতীয় দিনের মতো তৃতীয় দিনেও হতচ্ছাড়া ব্যাটিং করেন টাইগার ব্যাটাররা। দায়িত্বহীনতার পরিচয় দেন নাজমুল শান্ত, লিটন দাস, মাহামুদুল হাসান, জাকির হাসান, শাহাদাত হোসেনরা। স্বাগতিক ব্যাটাররা এতটাই যাচ্ছেতাই ব্যাটিং করেছেন যে, বাংলাদেশ এখন হারের ক্ষণ গুনছে। বিপরীতে বড় জয়ের অপেক্ষা করছে ‘দ্বীপরাষ্ট্র্র’ শ্রীলঙ্কা। সিলেটে দুই টেস্ট ম্যাচের প্রথমটি জিততে শ্রীলঙ্কার চাই মাত্র আর ৫ উইকেট। খেলার বাকি এখনো দুই দিন। ৫১১ রান টপকে অবিশ্বাস্য জয় পেতে বাংলাদেশের চাই আরও ৪৬৪ রান। অকল্পনীয়! পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ২১৫ রান টপকে জয়ের রেকর্ড রয়েছে। ২০০৮ সালে মিরপুরে ৫২১ রান তাড়া করতে নেমে ১২৬.২ ওভারে মোহাম্মদ আশরাফুলের ১০১ ও সাকিব আল হাসানের ৮৬ রানে ভর করে ৪১৩ রান করেছিল বাংলাদেশ। চতুর্থ ইনিংসে টাইগারদের এটাই সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। সেখানে গতকাল ৫১১ রান তাড়া করতে নেমে ৪৩ রান তুলতেই খুইয়ে বসেছে ৫ উইকেট। এখন জয়ের স্বপ্ন দেখা আকাশছোঁয়ার মতো! দেখার বিষয় ব্যবধান কত কম হয়।

শ্রীলঙ্কা যখন জয়ের অপেক্ষায়, তখন রেকর্ড বুকে নাম লিখেছেন দলটির দুই ব্যাটার ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস। ১৪৭ বছরের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে তৃতীয় জুটি হিসেবে ধনাঞ্জয়া ও কামিন্দু উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরি করেছেন। শ্রীলঙ্কার টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে এটাই প্রথম ঘটনা। প্রথম ইনিংসে ৫৭ রানে ৫ উইকেটের পতনের পর ধনাঞ্জয়া ও কামিন্দু ২০২ রানের জুটি গড়েন এবং জোড়া সেঞ্চুরি করেন। দুজনেই ১০২ রান করে করেন। দ্বিতীয় ইনিংসেও দুজনে জুটি গড়েন। ১২৬ রানে ৬ উইকেটের পতনের পর দুজনে যোগ করেন ১৬৩ রান। অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া ১০৮ রান করেন ১৭৯ বলে ৯ চার ও ২ ছক্কায়। কামিন্দু ১৬৪ রান করেন ২৩৭ বলে ১৬ চার ও ৬ ছক্কায়। টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে উভয় ইনিংসে দুজন ক্রিকেটারের সেঞ্চুরি প্রথম রেকর্ড অস্ট্রেলিয়ার চ্যাপেল ব্রাদার্সের। ১৯৭৪ সালে ওয়েলিংটনে ঘটনাটি ঘটে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড টেস্টে। প্রথম ইনিংসে ইয়ান চ্যাপেল ১৪৫ এবং গ্রেগ চ্যাপেল করেছিলেন ২৪৫ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে ইয়ান ১২১ ও চ্যাপেল করেন ১৩৩ রান। যদিও টেস্টটি ড্র হয়েছিল। দ্বিতীয়বার ঘটনাটি ঘটে ২০১৪ সালে। পাকিস্তানের দুই ক্রিকেটার মিসবাহ উল হক ও আজহার আলী এমন কীর্তি গড়েছিলেন। 

সফরকারীরা প্রথম ইনিংসে ২৮০ রান করেছিল। জবাবে নাজমুল বাহিনীর প্রথম ইনিংসে সংগ্রহ ছিল ১৮৮ রান। ৯২ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় দিনেও ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে সফরকারীরা। ৫ উইকেটে ১১৯ রান তুলে দিন শেষ করে। এগিয়ে থাকে ২১১ রানে। গতকাল খেলতে নেমেই দিনের ১৭ বলের মাথায় মেহেদি হাসান মিরাজ প্রথম আঘাত হানেন ‘নাইট ওয়াচম্যান’ বিশ্ব ফার্নান্দোকে। ১২৬ রান ৬ উইকেট হারিয়ে দল যখন কোণঠাসা, তখনই হাল ধরেন প্রথম ইনিংসের দুই ‘সেঞ্চুরি ম্যান’ ধনাঞ্জয়া ও কামিন্দু। দুজনে সপ্তম উইকেটে ফের ১৬৩ রানের জুটি গড়েন ৪৫.৩ ওভারে। ধনাঞ্জয়া ক্যারিয়ারের ১২তম সেঞ্চুরি করে আউট হন ব্যক্তিগত ১০৮ রানে। ২৫ বছর বয়সী কামিন্দু ক্যারিয়রের দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নেমেই উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরি করে ইতিহাসের পাতায় চিরস্থায়ী হয়েছেন। তিনি ১৬৪ রান করেন। দুজনের জোড়া সেঞ্চুরিতে শ্রীলঙ্কা ইনিংসে করে ৪১৮ রান। টার্গেট ৫১১ রান। লঙ্কান পেসারত্রয়ের সাঁড়াশি আক্রমণে খেই হারিয়ে ১৩ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে বাংলাদেশ। স্কোর বোর্ডে লেখা ৪৭ রান।

চতুর্থ ইনিংসে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোর ৪১৩ রান। চতুর্থ ইনিংসে ৩০০-এর ওপর স্কোর করেছে বাংলাদেশ মোট চারবার। ৩৩১ ইংল্যান্ড, ৩২৪ ও ৩০১ ভারতের বিপক্ষে।     

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর