শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

রেকর্ড গড়েই ১০০ ম্যাচে কিংস

মনোয়ার হক

রেকর্ড গড়েই ১০০ ম্যাচে কিংস

৭৬ বছরের ইতিহাসে কিংসের আগে লিগ শিরোপা জিতেছে ভিক্টোরিয়া, জিমখানা, ইপিজিপ্রেস (বিজিপ্রেস), আজাদ, ওয়ান্ডারার্স, মোহামেডান, বিজেএমসি, আবাহনী, মুক্তিযোদ্ধা, ব্রাদার্স ইউনিয়ন, শেখ জামাল ও শেখ রাসেল। এদের মধ্যে জিমখানা ছাড়া প্রতিটি ক্লাবই লিগে ১০০ ম্যাচ পূরণ করেছে। বসুন্ধরা কিংসের শততম ম্যাচ খেলাটা পুরোপুরিই আলাদা।

 

এবিজি বসুন্ধরা পেশাদার ফুটবল লিগ মাঠে গড়ায় গত বছর ২২ ডিসেম্বর। ১০ ক্লাবের দেশসেরা এ আসরের প্রথম লেগ শেষ হয় ২৪ ফেব্রুয়ারি। ৩৩ দিন পর আজ দ্বিতীয় লেগের পর্দা উঠছে। এখানেই নিষ্পত্তি হবে শিরোপার। আজ গোপালগঞ্জে সাবেক দুই চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল ধানমন্ডি ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র মুখোমুখি হবে। ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান ময়মনসিংহে ফটিস এফসির বিপক্ষে লড়বে। মুন্সীগঞ্জে চট্টগ্রাম আবাহনী ও পুলিশের লড়াই। কিন্তু ফুটবলপ্রেমীদের নজর রাজশাহীর দিকে। কেননা আগামীকাল এখানকার মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে হট ফেবারিট বসুন্ধরা কিংস লিগে তাদের ১০০তম ম্যাচ খেলতে নামবে। প্রতিপক্ষ পয়েন্ট তালিকায় সবার নিচে থাকা ব্রাদার্স ইউনিয়ন। তবু কিংসের শততম ম্যাচ বলেই আলোচনা তুঙ্গে। ২০১৮-১৯ মৌসুমে নবাগত দল হিসেবে বসুন্ধরা কিংস লিগের অভিষেক ম্যাচ খেলে শেখ জামাল ধানমন্ডির বিপক্ষে। ১-০ গোলে জয়ে কিংসের যাত্রা।

বঙ্গবন্ধু জাতীয়, নীলফামারী শেখ কামাল, কুমিল্লা ধীরেন্দ্রনাথ, ময়মনসিংহ রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া, সিলেট, মুন্সীগঞ্জ বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান, টঙ্গী আহসান উল্লাহ মাস্টার, নোয়াখালী শহীদ ভুলু, কমলাপুর, রাজশাহী মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি এবং বসুন্ধরা কিংস অ্যারিনায় খেলে বসুন্ধরা কিংস শততম ম্যাচ খেলার মাইলফলক স্পর্শ করতে যাচ্ছে রাজশাহীতে। বর্তমানে পেশাদার হলেও ১৯৪৮ সালে ঘরোয়া ফুটবলের যাত্রা হয় ঢাকা প্রথম বিভাগ নাম দিয়ে। এরপর ঢাকা প্রিমিয়ার ঘুরে পেশাদার ফুটবলে এখন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ৭৬ বছরের ইতিহাসে কিংসের আগে লিগ শিরোপা জিতেছে ভিক্টোরিয়া, জিমখানা, ইপিজিপ্রেস (বিজিপ্রেস), আজাদ, ওয়ান্ডারার্স, মোহামেডান, বিজেএমসি, আবাহনী, মুক্তিযোদ্ধা, ব্রাদার্স ইউনিয়ন, শেখ জামাল ও শেখ রাসেল। এদের মধ্যে জিমখানা ছাড়া প্রতিটি ক্লাবই লিগে ১০০ ম্যাচ পূরণ করেছে। বসুন্ধরা কিংসের শততম ম্যাচ খেলাটা পুরোপুরিই আলাদা। কেননা অনেক রেকর্ড গড়েই তারা সেঞ্চুরি পূর্ণ করতে যাচ্ছে। ঘরোয়া ফুটবল ইতিহাসে কিংসই একমাত্র দল টানা চারবার চ্যাম্পিয়ন হয়ে ১০০তম ম্যাচ খেলতে নামছে। তা-ও আবার অভিষেক আসর থেকে। সর্বোচ্চ ৮৪ ম্যাচ জয় ও সবচেয়ে কম ম্যাচ পাঁচটিতে হেরে শততম ম্যাচ খেলবে। অন্যরা যা পারেনি সেখানে রেকর্ডের পর রেকর্ড গড়ে বসুন্ধরা কিংস নিজেদের ১০০ ম্যাচ খেলবে। শুধু তাই নয়, চলতি লিগেও পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে রয়েছে তারা। এ এক অন্য রকম শততম ম্যাচই বলা যায়। অভিষেকে যা কোনো ক্লাবই দেখাতে পারেনি। দলগতের পাশাপাশি শততম ম্যাচে ব্যক্তিগত রেকর্ড গড়া হবে। ক্লাব সভাপতি ইমরুল হাসান ও হেড কোচ অস্কার ব্রুজোন শুরু থেকেই ১০০ ম্যাচের অংশীদার হচ্ছেন; যা ঘরোয়া আসরে আর কেউ পারেননি। শততম ম্যাচ উপলক্ষে কিংস নতুন জার্সি পরে মাঠে নামবে। যেখানে অঙ্কে লেখা থাকবে ‘১০০’। বিশেষ স্মরণিকা বের করছে ক্লাব কর্তৃপক্ষ। যেখানে লিগে কিংসের ৯৯ ম্যাচের পুরো পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছে।

কিংস সভাপতি ইমরুল হাসান বলেন, ‘১০০ ম্যাচের মাইলফলক সত্যিই আনন্দের। দিনটি শুধু বসুন্ধরা কিংস নয়, ফুটবলেও স্মরণীয় হয়ে থাকবে। কেননা আমার জানা মতে আমরা যে রেকর্ড গড়ে সেঞ্চুরি ম্যাচ পূর্ণ করতে যাচ্ছি তা অন্যদের বেলায় ঘটেনি। এ কৃতিত্ব বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান শ্রদ্ধেয় আহমেদ আকবর সোবহানের। তাঁর সহযোগিতা ও অনুপ্রেরণায় বসুন্ধরা কিংস দেশের সেরা ফুটবল দলে পরিণত হয়েছে। টানা চারবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। এবারও পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে রয়েছি। আশা করি কিংস বিজয় পতাকা ওড়াবে। আহমেদ আকবর সোবহান শুধু কিংস নন, দেশের ফুটবল উন্নয়নে বড় ভূমিকা রেখে চলেছেন। অধিকাংশ লিগই অনুষ্ঠিত হচ্ছে বসুন্ধরা গ্রুপের পৃষ্ঠপোষকতায়। বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের অবদানের কথা বিশেষভাবে স্মরণ করতে হয়। দেশের ফুটবল উন্নয়ন তিনি সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। সত্যি বলতে কি, ক্রীড়াঙ্গন ও বসুন্ধরা গ্রুপ একই সুতায় গাঁথা। কৃতজ্ঞতা জানাই ম্যানেজার, কোচিং স্টাফ ও খেলোয়াড়দের; তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে কিংস এগিয়ে চলেছে।’ ঘরোয়া লিগের ইতিহাসে ১৩টি ক্লাবের শিরোপা জয়ের রেকর্ড রয়েছে। এর মধ্যে কিংসের আবার অন্য রেকর্ডও রয়েছে। লিগ চার, স্বাধীনতা কাপ তিন, ফেডারেশন কাপ দুই-সব মিলিয়ে অভিষেকের পর আট শিরোপা জয়ের রেকর্ড শুধু কিংসেরই। ২০১৮ সাল থেকে কিংস দেশের সেরা দল। তাদের শততম ম্যাচ ঘিরে আলোচনা হবে এটাই তো স্বাভাবিক।

সর্বশেষ খবর