রবিবার, ৩১ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

টাইগারদের ক্যাচ মিসের মহড়া

ক্রীড়া প্রতিবেদক

টাইগারদের ক্যাচ মিসের মহড়া

খেলার কোনো সম্ভাবনাই ছিল না। অথচ খেললেন এবং চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনে ছিলেন বাংলাদেশের সেরা পারফর্মার। হাসান মাহমুদ; ২৪ বছর বয়সী ডানহাতি ফাস্ট বোলার। ছন্দময় রান আপ, দ্রুতগতিতে বোলিং করেন এবং ব্লকহোলে বল ফেলায় মাস্টার। নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেন বলে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের হয়ে বিশ্বকাপসহ ২২টি ওয়ানডে এবং ১৭টি টি-২০ ম্যাচ খেলেছেন। কিন্তু সাদা পোশাক ও লাল বলে খেলার কোনো সুযোগ হয়নি। অবশেষে সুযোগ মেলে টেস্ট খেলার। ডানহাতি ফাস্ট বোলার মুশফিক হাসানের ইনজুরিতে স্কোয়াডে অন্তর্ভুক্ত হন তিনি। টানা ২৭ ম্যাচ খেলে পরিশ্রান্ত শরিফুল ইসলামকে বিশ্রাম এবং সিলেট টেস্টে অভিষিক্ত নাহিদ রানাকে বাদ দেওয়ায় খেলার সুযোগ পান হাসান মাহমুদ। গতকাল বাংলাদেশের ১০৪তম ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক হয় তার। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে অভিষেক আরও আলোকিত হতো। চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিন নাজমুল বহিনী যে তিনটি ক্যাচ মিস করেছে, তার দুটিই ছিল ডানহাতি ফাস্ট বোলার হাসানের ওভারে। দিন শেষে তিন ক্যাচ মিসের খেসারত গুনেছে টাইগাররা। স্বাগতিকদের বাজে ফিল্ডিং ও ক্যাচ মিসের সুযোগ কাজে লাগিয়ে তিন হাফ সেঞ্চুরিতে ৪ উইকেটে ৩১৪ রান করে সফরকারী শ্রীলঙ্কা। অভিষেক ইনিংসে হাসান ২টি এবং এক বছর পর টেস্ট খেলতে নেমে সাকিব ১ উইকেট নেন। বাকিটি ছিল রান আউট।

সিলেটের উইকেটে সহায়তা পেয়েছেন পেস বোলাররা। টেস্টের ফল হয়েছে সাড়ে তিন দিনে। টেস্টের উভয় ইনিংসে জোড়া সেঞ্চুরি করেছেন ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস। তারপরও ম্যাচের নিয়ন্ত্রক ছিলেন দুই দলের পেসাররা। চট্টগ্রামের উইকেট পুরোপুরি ব্যাটিং সহায়ক। সিলেটে যেখানে তিন পেসার নিয়ে খেলেছে নাজমুল বাহিনী, চট্টগ্রামে একাদশ সাজায় তিন স্পিনার দিয়ে। হাসান মাহমুদের সঙ্গে নতুন বলে বোলিং করেন খালেদ। সাকিবের সঙ্গী হিসেবে স্পিন করেছেন মেহেদি হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলাম। টস হেরে গতকাল ফিল্ডিং করে টাইগাররা। দুই লঙ্কান ওপেনার নিশান মাদুস্কা ও দিমুথ করুণারত্নের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে প্রথম সেশনে বিনা উইকেটে ৮৮ রান তুলেছিল সফরকারীরা। অথচ ক্যাচ ধরতে পারলে প্রথম সেশনেই দুই উইকেটের পতন ঘটত। সফরকারীদের ষষ্ঠ ওভারে হাসানের বলে মাদুস্কার ব্যাটের কানায় লেগে স্লিপে ক্যাচ উঠে। কিন্তু মাহামুদুল হাসান জয় সহজ ক্যাচটি ধরতে ব্যর্থ হন। তখন মাদুস্কার রান ৯ এবং দলের স্কোর ছিল বিনা উইকেটে ১৩। শেষ পর্যন্ত তিনি রান আউট হন ৫৭ রানে। দ্বিতীয়বার ক্যাচ মিস করেন সাকিব। ২২তম ওভারে হাসানের বাউন্সারে করুণারত্নে হুক খেলেন। বল ফাইন লেগে ক্যাচ ওঠে। কিন্তু সাকিব বলের লাইন মিস করে ক্যাচ মিস করেন। বল বাউন্ডারি হয়। তৃতীয়বার ক্যাচ মিস হয় ৬৯ নম্বর ওভারে। মেহেদি হাসান মিরাজের বলে স্লিপে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের ক্যাচ ছাড়েন শাহাদ হোসেন দীপু। এ তিন ক্যাচ মিসের খেসারত গুনেছে নাজমুল বাহিনী।

জীবন পেয়ে ৯৬ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন দুই ওপেনার। মাদুস্কা ব্যক্তিগত ৫৭ রানে রান আউট হন। ১০৫ বলের ইনিংসটিতে ছিল ৬টি চার। করুণারত্নে দলীয় ২১০ রানে প্লেড অন হন হাসানের বলে। টেস্ট ক্যারিয়ারে হাসানের এটাই প্রথম উইকেট। ৮৬ রানের ইনিংস খেলেন ১২৯ বলে ৮ চার ও এক ছক্কায়। উইকেটরক্ষক ব্যাটার কুশল মেন্ডিস স্লিপে সাকিবের বলে মিরাজের ক্যাচ হওয়ার আগে খেলেন ৯৩ রানের ইনিংস। ১৫০ বলের ইনিংসটিতে ছিল ১১ চার ও এক ছক্কা। ম্যাথুস একবার জীবন পেয়েও ২৩ রানের বেশি করতে পারেননি। ওপরের সারির চার ব্যাটারকে হারিয়ে দিন পার করে সফরকারী শ্রীলঙ্কা। সিলেট টেস্টের উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরি হাঁকানো ধনাঞ্জয়া অপরাজিত রয়েছেন ১৫ রানে এবং দিনেশ চান্দিমাল ৩৪ রানে।

 

সংক্ষিপ্ত স্কোর

শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস

৯০ ওভারে ৩১৪/৪ (মাদুশকা ৫৭, কারুনারাত্নে ৮৬, মেন্ডিস ৯৩, ম্যাথিউস ২৩, চান্দিমাল ৩৪*, ধানাঞ্জায়া ১৫*; খালেদ ১০-১-৪১-১, হাসান ১৭-৫-৬৪-২, সাকিব ১৮-২-৬০-১, মিরাজ ২৮-৪-৯৫-০, তাইজুল ১৭-৪-৪৮-০)।

সর্বশেষ খবর