মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

আবারও ব্যাটিং ধস

সফরকারীরা এখন এগিয়ে আছে ৪৫৫ রানে। অথচ রান তাড়া করে বাংলাদেশের জয়ের রেকর্ড সর্বোচ্চ ২১৫ রান। সিলেটের মতো চট্টগ্রামে বাজে ফিল্ডিং করছে নাজমুল বাহিনী। ক্যাচ মিস করছে ভূরি ভূরি। বিশেষ করে স্লিপে মিস করা ক্যাচগুলো ভোগাচ্ছে টাইগারদের।

ক্রীড়া প্রতিবেদক

আবারও ব্যাটিং ধস

হাসান মাহমুদের করা দিনের শেষ বলটি খেলেননি প্রভাত জয়সুরিয়া। পেছনের পায়ে ভর রেখে ছেড়ে দেন। উইকেটের পেছনে দাঁড়ানো লিটন দাস বলটি গ্লাভসবন্দি করতেই আম্পায়ার উইকেটের ওপরের বেলস দুটি মাটিতে ফেলে দেন। মানে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ! বেলস দুটি যখন উইকেটে গড়াগড়ি খাচ্ছে, সূর্য তখন পশ্চিম আকাশে ধীরে ধীরে অস্ত যাচ্ছে। চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশের জয় কিংবা ড্রয়ের সম্ভাবনাটুকুও সূর্যাস্তের মতো কাট্টলীর সৈকতে ডুবে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। টেস্টের তিন দিন শেষ। বাকি আরও দুই দিন। তৃতীয় দিন শেষে টেস্টের যে সমীকরণ, প্রাকৃতিক কোনো বিপর্যয় না হলে ফলাফল হবে নিশ্চিত করেই বলা যায়! এমন সমীকরণে দাঁড়ানো টেস্টে পুরোপুরি ব্যর্থ যখন নাজমুল শান্ত, সাকিব আল হাসান, শাহাদাত হোসেন দীপু, লিটন দাসরা। তখন শেষ বিকালে বল হাতে উজ্জ্বল হয়ে উঠেন ডান হাতি ফাস্ট বোলার হাসান মাহমুদ। ১০৪তম টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে অভিষিক্ত হাসান গতি ও রিভার্স সুইংয়ে নাকাল করেন প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের। দুরন্ত বোলিংয়ে তুলে নেন শ্রীলঙ্কার ৪ উইকেট। সব মিলিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেটে ১০২ রান তুলে দিন পার করেছে সফরকারীরা এখন এগিয়ে আছে ৪৫৫ রানে। অথচ রান তাড়া করে বাংলাদেশের জয়ের রেকর্ড সর্বোচ্চ ২১৫ রান।

সিলেটের মতো চট্টগ্রামে বাজে ফিল্ডিং করছে নাজমুল বাহিনী। ক্যাচ মিস করছে ভূরি ভূরি। বিশেষ করে স্লিপে মিস করা ক্যাচগুলো ভোগাচ্ছে টাইগারদের। যেসব ব্যাটার স্লিপে জীবন পেয়েছেন, সবাই বড় বড় ইনিংস খেলছেন। গতকাল শাহাদত হোসেন দীপু স্লিপে ক্যাচ ধরেছেন। আবার দুবার ক্যাচও ফেলেছেন। বিশেষ করে সফরকারীদের দ্বিতীয় ইনিংসে অ্যাঞ্জেলি ম্যাথিউসের সহজ ক্যাচ ফেলেন দীপু। ৭ রানে জীবন পাওয়া ম্যাথিউস শেষ পর্যন্ত অপরাজিত রয়েছেন ৩৯ রানে। সাবেক অধিনায়কের দৃঢ়তায় সফরকারীরা দিন পার করেছে ৬ উইকেটে ১০২ রান তুলে। দীপু যদি ক্যাচটি নিতে পারতেন, তাহলে অভিষেকে ৫ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড গড়তেন হাসান মাহমুদ। তারপরও তিনি ৪ উইকেট নিয়ে সব ফোকাস কেড়ে নিয়েছেন। দুই ইনিংস মিলিয়ে এখন পর্যন্ত হাসান উইকেট নিয়েছেন ৬টি। দ্বিতীয় ইনিংসের বাকি ২টি নিয়েছেন আরেক পেসার খালেদ। শুধু দীপু নন, অধিনায়ক নাজমুল শান্ত, জাকির হাসানরা বেশ কয়েকবার ক্যাচ মিস করেছেন।  

চট্টগ্রামের উইকেট ব্যাটিং সহায়ক। উইকেটের বাউন্সকে কাজে লাগিয়ে প্রথম ইনিংসে ৫৩১ রান করে শ্রীলঙ্কা। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে নাজমুল বাহিনী। সফরকারী পেসারদের সুইং, গতি ও বাউন্সের সঙ্গে পেড়ে ওঠেননি নাজমুল, সাকিব, লিটনরা। সফরকারীরা যেখানে ১৫৯ ওভার ব্যাটিং করেছেন। সেখানে টাইগাররা ১৭৮ রানে অলআউট হয়েছে মাত্র ৬৮.৪ ওভারে। গতকাল ১ উইকেটে ৫৫ রান নিয়ে খেলতে নামেন জাকির হাসান ও তাইজুল। দুজনে আরও ৪১ রান যোগ করে বিচ্ছিন্ন হন। ‘নাইটওয়াচম্যান’ তাইজুল ২২ রান করলেও জাকির আউট হন ৫৪ রান করে। টাইগারদের ইনিংসে এটাই সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৩ রান করেন সাবেক অধিনায়ক মুমিনুল হক। ইনিংসটি খেলার পথে মুশফিক, তামিম ও সাকিবের পর চতুর্র্থ ক্রিকেটার হিসেবে টেস্টে ৪ হাজার রানের ক্লাবে নাম লিখেছেন সাবেক অধিনায়ক। সাবেক অধিনায়ককে এজন্য খেলতে হয়েছে ৬১ টেস্টের ১১৩টি ইনিংস। মুমিনুলের রান ৬১ টেস্টে ৪০০৮ এবং সেঞ্চুরি ১২টি। সিলেটের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে চট্টগ্রামেও ব্যর্থ লিটন। ৩ বলের ইনিংসে একটি বাউন্ডারি মেরেছেন শুধু। এক বছর পর খেলতে নামা সাকিব ১৫, অধিনায়ক নাজমুল ১, দীপু ৮ রান করেন।  

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর