বুধবার, ৩ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

জয়ের অপেক্ষায় শ্রীলঙ্কা

রাশেদুর রহমান

জয়ের অপেক্ষায় শ্রীলঙ্কা

বাংলাদেশের উইকেট পতনের পর শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারদের উল্লাস -এএফপি

টার্গেট ৫১১। এমন বিশাল টার্গেটে খেলতে নেমে কে কবে স্থির থাকতে পেরেছে! উইকেটে বোলারদের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে অবলীলায় খেলতে পেরেছে! জয় ছিনিয়ে এনেছে! চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ ৪১৮ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড আছে। ২০০৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এই কীর্তি গড়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এর আগের রেকর্ডটা ছিল ভারতের। ১৯৭৬ সালে তারা ওয়েস্ট ইন্ডিজের দেওয়া ৪০৩ রানের টার্গেট পাড়ি দিয়েছিল চতুর্থ ইনিংসে। ঐতিহাসিক সেসব ম্যাচের কথা এখানে স্মরণ করে লাভ নেই। তবে বিশাল রানের সামনে দাঁড়িয়েও যে বুক টান করে লড়াই করা যায়, তার নজির স্থাপন করেছিল ইংলিশরা। ১৯৩৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার দেওয়া ৬৯৬ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে করেছিল ৫ উইকেটে ৬৫৪ রান। ম্যাচটায় কেউ হারেনি। বাংলাদেশ চট্টগ্রাম টেস্টে কোনো অসাধ্য সাধন করবে, এমন কল্পনা করেনি কেউ। তবে লড়াই আশা করেছিল। সেই লড়াইয়ের আশা জাগিয়েও পারলেন না নাজমুলরা।

শ্রীলঙ্কার করা ৫৩১ রানের জবাবে নিজেদের প্রথম ইনিংসে টাইগাররা করেছিল ১৭৮ রান। চতুর্থ ইনিংসে ব্যাটিং করা এমনিতেও আরও বেশি চ্যালেঞ্জিং। ৫১১ রানের টার্গেটের নিচে টাইগাররা চাপাই না পড়ে! এমন শঙ্কাই ছিল সমর্থকদের মনে। সেই শঙ্কা কিছুটা হলেও দূর করেছে নাজমুল বাহিনী। অন্তত প্রথম ইনিংসের তুলনায় ভালো করেছে টাইগাররা। গতকাল চট্টগ্রাম টেস্টের চতুর্থ দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৭ উইকেট হারিয়ে ২৬৮ রান। লঙ্কানরা দিনের শুরুতে ৭ উইকেটে ১৫৭ রান করে ইনিংস ঘোষণা করলে ৫১১ রানের টার্গেট দাঁড়ায় বাংলাদেশের সামনে।

লক্ষ্য বড়। উইকেটে টিকে থাকার চ্যালেঞ্জ আরও বড়। সেই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়ে ভালোই করছিলেন ব্যাটাররা। কিন্তু টপ অর্ডারের ব্যর্থতা এবং বাজে কিছু আউট কোণঠাসা করে ফেলে টাইগারদের। বিপরীত দিকে একে একে উইকেট তুলে নিয়ে উৎসবে মেতে ওঠেন লঙ্কান ক্রিকেটাররা। মাহমুদুল হাসান জয় (২৪ রান), জাকির হাসান (১৯ রান) এবং অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত (২০ রান) অল্পতেই উইকেট হারিয়ে ফিরে আসেন। তবে মুমিনুল হক এবং সাকিব আল হাসান উইকেটে সেট হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তারাও বড় স্কোর গড়তে পারেননি। মুমিনুল ৫৬ বলে ৫০ রানের ইনিংস খেলে বিরতির ঠিক আগে বাজে শট খেলে ক্যাচ দিয়ে আউট হন। উইকেটে সেট হওয়ার পর নিজের দায়িত্ব পালনে সফল হননি সাকিব আল হাসানও। তিনি ৩৬ রান করে আউট হন। এরপর লিটন দাসও এক বাজে শটে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে সাজঘরে ফেরেন। তিনি করেন ৩৮ রান। শাহাদাত করেন ১৫ রান। লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন তিনি। দিনের শেষ দিকে মেহেদি হাসান মিরাজ (৪৪* রান) এবং তাইজুল ইসলাম (১০*) টিকে থাকার পাশাপাশি দলের খাতায় কিছু রানও যোগ করেন।

হাতে মাত্র তিন উইকেট। সত্যি বলতে দুই উইকেট। ব্যাট হাতে মিরাজ আর তাইজুলেরই কিছুটা খ্যাতি আছে। দুই পেসার খালেদ কিংবা হাসান মাহমুদের কাছ থেকে ব্যাট হাতে কতটুকুই বা আশা করা যায়! এতকিছুর পরও চট্টগ্রাম টেস্ট পঞ্চম দিনে গড়িয়েছে, এটাও কম কথা নয়। গতকাল সারা দিনই টাইগার সমর্থকরা পরাজয়ের শঙ্কায় ছিলেন। অন্তত খেলাটা পঞ্চম দিনেও তারা দেখতে পারবেন। এখন কেবল শেষ দিনের খেলার অপেক্ষা। শ্রীলঙ্কার প্রয়োজন তিন উইকেট। বাংলাদেশের প্রয়োজন ২৪৩ রান।

সর্বশেষ খবর