রবিবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের ট্র্যাকে ক্রিকেটাররা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের ট্র্যাকে ক্রিকেটাররা

এই পরীক্ষার মাধ্যমে বুঝলাম খেলোয়াড়দের কন্ডিশন কেমন। এটার মধ্যে পাস-ফেলের কিছু নেই। ডিপিএল, বিপিএল গেছে। এরপর ওদের ফিটনেসের অবস্থা কী সেটা জানার জন্য এ আয়োজন। এভারেজ পারফরম্যান্স সবার গুড। তবে আমাদের উন্নতির জায়গা আছে। আমরা ট্রেনাররা গুড বলতে পারি না, বলি না আসলে, কারণ আমাদের চাহিদার শেষ নেই। ফিটনেস ভালোই আছে সবার।

 

সূর্য সবে পুব আকাশে আলো ছড়ানো শুরু করেছে। ঘুম ভেঙে লোকজন আড়মোড়া দিয়ে কাজে বেরোনোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে তখন একে একে হাজির হচ্ছেন নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, লিটন দাসসহ জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা। ঘড়ির কাঁটায় ৬টা বাজতেই একে একে হাজির হয়েছেন ৩৫ ক্রিকেটার। মাহমুদুল্লাহ ও মুশফিক ছাড়া বাকি সব ক্রিকেটার হয়তো প্রথমবার স্টেডিয়ামটিতে পা রেখেছেন। তবে অনুপস্থিত ছিলেন সাকিব আল হাসান, মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, সৌম্য সরকার ও তাইজুল ইসলাম। স্টেডিয়ামের সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয়েছেন সবাই। আমূল পাল্টে গেছে সাত দশকের পুরনো স্টেডিয়ামটি। সংস্কারের পাশাপাশি গ্যালারির ওপরে বসানো হচ্ছে আধুনিক শেড। নতুন করে সাজানো স্টেডিয়ামটিতে জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা উপস্থিত হয়েছেন স্ট্রেন্থ ও কন্ডিশনিং কোচ নাথান কেলির ইচ্ছাতে। নতুন কন্ডিশনিং কোচ ক্রিকেটারদের শারীরিক কন্ডিশন দেখতে অ্যাথলেটিকস ট্র্যাকে রানিংয়ের ব্যবস্থা করেছেন। ২০০৫ সালের পর এই প্রথম জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা রানিং করলেন বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে। এ মাঠে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়েছে ২০০৫ সালের ৩১ জানুয়ারি। যদিও ২০১১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ এবং ২০১৬ সালের টি-২০ বিশ্বকাপের জমকালো উদ্বোধন হয়েছিল হাজারো স্মৃতির বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে।

মিরপুর স্টেডিয়ামে ক্রিকেট স্থানান্তরিত হওয়ার পর আর কখনোই বঙ্গবন্ধুতে ক্রিকেট ফেরেনি। জাতীয় দলের ক্যাম্প এখন মিরপুরেই হচ্ছে। এবারই প্রথম কন্ডিশনিং কোচ চেয়েছেন অ্যাথলেটিকস ট্র্যাক। বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়াম ও বিকেএসপিতে রয়েছে অ্যাথলেটিকস ট্র্যাক। বিসিবি আয়োজন করেছে বঙ্গবন্ধুতে। সকাল ৬টায় শুরু হয় ক্রিকেটারদের অনুশীলন। প্রচ- দাবদাহ এড়াতে ভোরে অনুশীলনের আয়োজন করে। হালকা স্ট্রেচিংয়ের পর ৩৫ ক্রিকেটারের অনুশীলন শুরু হয়। শুরুতে ক্রিকেটাররা ৪০ মিটার করে ¯িপ্রন্ট টানেন। এরপর ১৬০০ মিটার দৌড়ান দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে। কেলির সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সহকারী ট্রেনার ইফতিখার ইসলাম ইফতি। ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স নিয়ে সহকারী ট্রেনার বলেন, ‘ক্রিকেটারদের সবার পারফরম্যান্স এভারেজ।’

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ২০০০ সালের ১০ নভেম্বর ভারতের বিপক্ষে অভিষেক টেস্ট খেলে বাংলাদেশ। এ মাঠে এশিয়া কাপ ক্রিকেট, যুব এশিয়া কাপ ক্রিকেট, এশিয়া কাপ হকি, আগাখান গোল্ডকাপ ফুটবল, যুব এশিয়া কাপ ফুটবল, বিশ্বকাপ ফুটবলের বাছাইপর্ব হয়েছে। এমন সব গৌরবগাঁথা টুর্নামেন্টের আয়োজক বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম। ১৯৫৩ সালে স্টেডিয়ামটির অভিষেক ভারত-পাকিস্তান টেস্ট দিয়ে। গতকাল ক্রিকেটাররা দুই ধাপে ট্রেনিং করেন। ক্রিকেটারদের ট্রেনিং নিয়ে সহকারী ট্রেনার ইফতি বলেন, ‘এই পরীক্ষার মাধ্যমে বুঝলাম খেলোয়াড়দের কন্ডিশন কেমন। এটার মধ্যে পাস-ফেলের কিছু নেই। ডিপিএল, বিপিএল গেছে। এরপর ওদের ফিটনেসের অবস্থা কী সেটা জানার জন্য এ আয়োজন। এভারেজ পারফরম্যান্স সবার গুড। তবে আমাদের উন্নতির জায়গা আছে। আমরা ট্রেনাররা গুড বলতে পারি না, বলি না আসলে, কারণ আমাদের চাহিদার শেষ নেই। ফিটনেস ভালোই আছে সবার।’

জিম্বাবুয়ে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সিরিজ ও টি-২০ বিশ্বকাপকে সামনে রেখে এই কন্ডিশনিং ক্যাম্পের আয়োজন। দলের সঙ্গে আজ যোগ দেওয়ার কথা হেডকোচ চন্ডিকা হাতুরাসিংহের। টি-২০ বিশ্বকাপ শুরু ২ জুন। এর আগে নাজমুল বাহিনী দুটি টি-২০ সিরিজ খেলবে। ঘরের মাটিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলবে ৩, ৫, ৭, ১০ ও ১২ মে পাঁচটি টি-২০ ম্যাচ। এরপর মার্কিনিদের বিপক্ষে খেলবে ২১, ২৩ ও ২৫ মে। বিশ্বকাপের মূল আসরে নাজমুলদের খেলা ৮, ১০, ১৩ ও ১৭ জুন। ম্যাচগুলোতে যাতে শতভাগ ফিটনেস নিয়ে খেলতে পারেন সেজন্য এই কন্ডিশনিং ক্যাম্প। অ্যাথলেটিকস ট্র্যাকে দৌড়ানোর কারণ ব্যাখ্যায় সহকারী ট্রেনার ইফতি বলেন, ‘অ্যাথলেটিকস ট্র্যাক বেছে নেওয়া হয়েছে টাইমিংয়ের কথা মাথায় রেখে। আমরা যদি আন্তর্জাতিকভাবে অনুসরণ করি তাহলে বেশকিছু টেস্টিং ম্যাথড আছে। আমরা আজ ১৬০০ মিটার টাইম ট্রায়াল নিলাম। অ্যাথলেটিকস ট্র্যাকে প্রপার টাইমিং হিসাব করা যায়। অবশ্য ক্রিকেটারদের কাছে নতুন মনে হয়েছে।’

রানিং ভেস্ট নিয়ে ক্রিকেটাররা দুই ভাগে ১৬০০ মিটার দৌড়ে অংশ নেন। দুই গ্রুপে প্রথম হয়েছেন দুই পেসার তানজিম হাসান সাকিব ও নাহিদ রানা।

সর্বশেষ খবর