শিরোনাম
শনিবার, ১১ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

শুরুতে ঝড় শেষে ধস

রাশেদুর রহমান

শুরুতে ঝড় শেষে ধস

ছবি : রোহেত রাজীব

জিম্বাবুয়ের বোলাররা একের পর এক আসছেন বল হাতে। তানজিদ হাসান ও সৌম্য সরকারের ব্যাটিংয়ের সামনে অসহায় হয়ে পড়ছেন তারা। কিছুক্ষণ পর পরই বোলার পরিবর্তন করছেন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক সিকান্দার রাজা। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। ১১.১ ওভারেই        দলের খাতায় যোগ হলো ১০১ রান। বড় সংগ্রহের সম্ভাবনা জাগিয়ে দিলেন দুই ওপেনার। কিন্তু একি! তানজিদ হাসান ও সৌম্য সরকার দুজনেই বিদায় নেন ১২তম ওভারে। এরপর বাকিরা কেবল এলেন আর গেলেন। বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন-আপটা শেষ হয়ে গেল মাত্র ৪২ রানের ব্যবধানে।

আন্তর্জাতিক টি-২০ ক্রিকেটে বাংলাদেশের শত রানের জুটির নজির খুব বেশি নেই। ২০০৭ সালে আশরাফুল-আফতাবের ১০৯, ২০১২ সালে তামিম-মাহমুদুল্লাহর ১৩২*, ২০১৩ সালে সাকিব-শামসুরের ১১৮, ২০১৪ সালে সাকিব-মুশফিকের ১১২, ২০১৫ সালে সাকিব-সাব্বিরের ১০৫*, ২০২১ সালে সৌম্য-নাঈমের ১০২ এবং ২০২৩ সালে রনি-লিটনের ১২৪ রান। টি-২০ ক্রিকেটের ইতিহাসে এ কটাই ছিল শত রানের জুটি। এর মধ্যে ওপেনিংয়ে শত রানের জুটি ছিল দুটি। গতকাল এ তালিকায় যোগ হলেন তানজিদ-সৌম্য (১০১ রানের জুটি)।

আন্তর্জাতিক টি-২০ ক্রিকেটে ১৫ ম্যাচ পর শত রানের জুটি গড়ল বাংলাদেশ। ২০২৩ সালের ২৯ মার্চ আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে চট্টগ্রামে উদ্বোধনী জুটিতে ১২৪ রান করেন রনি তালকুদার ও লিটন দাস। সে ম্যাচে বাংলাদেশ জয় পেয়েছিল ৭৭ রানে। এরপর ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণে গত ১৫ ম্যাচে শত রানের কোনো জুটি গড়তে পারেনি বাংলাদেশ। এর মধ্যে অবশ্য একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়।

টি-২০ ক্রিকেটে মোট আটটি শতরানের জুটি আছে বাংলাদেশের। এর মধ্যে গতকালের আগে সাতটি শত রানের জুটির ম্যাচের মধ্যে চারটিতেই জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। পরাজিত করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, পাকিস্তান, আয়ারল্যান্ড এবং জিম্বাবুয়েকে। টি-২০ ক্রিকেটে বাংলাদেশকে প্রথম শতরানের জুটি উপহার দেন আশরাফুল ও আফতাব। ২০০৭ সালে জোহানেসবার্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ১০৯ রান করেন এ দুজন। সে ম্যাচে বাংলাদেশ ৬ উইকেটে জয় পেয়েছিল।

গতকাল এমন দুর্দান্ত এক সূচনার পর ব্যাটিংয়ে যে ধস নামল, তা সত্যিই ভয়ের। সামনেই ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণের বিশ্বকাপ। এ খেলাটা বোলিংয়ের চেয়েও বেশি করে ব্যাটিংয়ের। ম্যাজিকাল কিছু করতে হলে ব্যাটিংয়েই করতে হয়। বোলাররাও দাপট দেখান। গতকাল যেমনটা দেখিয়েছেন সাকিব-মুস্তাফিজ-তাসকিনরা। শেষ ২ ওভারেই জিম্বাবুয়ের সব সম্ভাবনা শেষ করে দেন মুস্তাফিজ ও সাকিব। ১২ বলে ২১ রানের টার্গেটে খেলছিল জিম্বাবুয়ে। ১৯ নম্বর ওভারে ৭ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন মুস্তাফিজ। পরের ওভারে সাকিব ৮ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। মুস্তাফিজ-সাকিবের দুরন্ত বোলিংই বাংলাদেশকে জয় উপহার দেয়। কিন্তু ব্যাটিংটা ভালো না হলে বোলারদের জন্য কাজটা বেশ কঠিন হয়ে যায়। ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোয় ব্যাটারদের দাপটই বেশি। অনেকে তো বলেই দেন, বোলারদের জন্য ওয়ানডে আর টেস্ট আছে। টি-২০ ক্রিকেটটা ব্যাটারদেরই থাকুক। এ ফরম্যাটে তাসের ঘরের মতো ধপ করে ব্যাটিং লাইনটা শেষ হয়ে যাওয়া ভয়ের তো বটেই। বিশেষ করে বিশ্বকাপ যখন সামনে।

বাংলাদেশ যেমন হুট করেই বিনা উইকেটে ১০১ থেকে ১০ উইকেটে ১৪৩ হয়ে গেল। জিম্বাবুয়ে তেমন হয়নি। শুরু থেকেই নিয়মিত উইকেট হারিয়েছে তারা। তবে রান করেছে দলগত পারফরম্যান্সেই। উইকেটে বোলারদের জন্য ভালোই সমর্থন ছিল। সাকিব ৪টি, মুস্তাফিজ ৩টি ও তাসকিন ২টি উইকেট শিকার করেন। বোলিংয়ে ভালো করলেও ব্যাটিং আর ফিল্ডিংয়ে গতকাল ব্যর্থই ছিল টাইগাররা। বারবার ক্যাচ লুফে নিতে ব্যর্থ হয়েছেন ফিল্ডাররা। তবে দুরন্ত বোলিং করে সব দুর্বলতা ঢেকে দেন সাকিব-মুস্তাফিজ-তাসকিন-রিশাদরা।

 

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ ইনিংস

১৯.৫ ওভারে ১৪৩/১০ (তানজিদ ৫২, সৌম্য ৪১, হৃদয় ১২, জঙ্গুয়ে ৩/২০, বেনেট ২/২০, এনগারাবা ২/২৭, রাজা ১/২৪, মুজারাবানি ১/৩০)

 

জিম্বাবুয়ে ইনিংস

১৯.৪ ওভারে ১৩৮ (ক্যাম্পবেল ৩১, মাসাকাদজা ১৯*, রায়ান ১৯, রাজা ১৭,  সাকিব ৪/৩৫, মুস্তাফিজ ৩/১৯, তাসকিন ২/২০, রিশাদ ১/৬)

ফল :  বাংলাদেশ ৫ রানে জয়ী।

ম্যাচসেরা  : মুস্তাফিজুর রহমান

সর্বশেষ খবর