শুক্রবার, ২৪ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

পাওয়ার হিটিংয়ে সামর্থ্য কম

আসিফ ইকবাল

পাওয়ার হিটিংয়ে সামর্থ্য কম

হান্নান সরকার

নির্বাচক হান্নান বলেন, ‘প্রতি বছর বিপিএলে ১০-১২টি ম্যাচ খেলে টি-২০ ক্রিকেটের পাওয়ার অ্যাবিলিটি বাড়ানো সম্ভব নয়। এজন্য আরও বেশি বেশি করে টি-২০ ম্যাচ খেলতে হবে ক্রিকেটারদের। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, যত বেশি ম্যাচ খেলবে, তত বেশি অ্যাপ্রোচ পজিটিভ হবে

 

ক্রিস গেইল, আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারিন, জশ বাটলাররা অনায়াসে চার-ছক্কা মারেন। পাওয়ার প্লেতে পাওয়ার হিটিং ব্যাটিংয়ে প্রতিপক্ষ বোলারদের নাভিশ্বাস তুলেন। অথচ বাংলাদেশের লিটন দাস, সৌম্য সরকার, সাকিব আল হাসান, নাজমুল শান্ত, তানজিদ তামিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদদের ঠিক সেভাবে পাওয়ার হিটিং করতে দেখা যাচ্ছে না। পজিটিভ অ্যাপ্রোচে অনায়াসে চার-ছক্কাও মারতে পারছেন না। কেন পারছেন না টাইগার ক্রিকেটাররা? যুক্তরাষ্ট্রের কাছে প্রথম টি-২০ ম্যাচ হারায় পাওয়ার হিটিংয়ের বিষয়টি উঠে এসেছে আলোচনায়। টি-২০ ক্রিকেটে ৬ ওভার পাওয়ার প্লের ব্যাটিংই মূলত পার্থক্য গড়ে দিচ্ছে দুই দলের হার-জিতে। সাদা বলে টাইগার ক্রিকেটাররা চার-ছক্কা হাঁকাতে পারছেন না। এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের নির্বাচক প্যানেলের অন্যতম সদস্য হান্নান সরকার। বলেছেন, টেকনিকের পাশাপাশি পাওয়ার হিটিং অ্যাবিলিটি কম টাইগার ক্রিকেটারদের, ‘আমরা যখন ক্রিকেটে ওপেন করেছি, তখন টি-২০ ক্রিকেটের এমন প্রসার ছিল না। তখনকার সঙ্গে এখন ক্রিকেটের টেকনিকে অনেক পার্থক্য। এখন দুই ধরনের ক্রিকেটার আছেন। এক শ্রেণির ক্রিকেটার যারা টেকনিক্যালি ভালো। আরেক শ্রেণির ক্রিকেটার টেকনিক্যালি ভালো না হয়েও পাওয়ার হিটিংয়ে ভীষণ সাবলীল। টি-২০ ক্রিকেটে পাওয়ার হিটিং ব্যাটসম্যানরা সাধারণত ওপেন করছেন। এজন্য তারা অনায়াসে চার-ছক্কা মারছেন। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের পাওয়ার হিটিং অ্যাবিলিটি কম। তাই ছয় ওভারের পাওয়ার প্লেতে রান কম উঠছে।’

যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে প্রথম টি-২০ ম্যাচে টাইগাররা ছয় ওভারের পাওয়ার প্লেতে রান করেছেন ২ উইকেটে ৩৭। সর্বশেষ ১০ টি-২০ ম্যাচে ছয় ওভারের পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিনা উইকেটে ৬৩ রান। আরেকবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বিনা উইকেটে ৫৭ রান তুলেছিল। ছয় ওভারের পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের স্কোরগুলো যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র ৩৭/২, জিম্বাবুয়ে ৩৩/৩, ৫৭/০, ৪২/২, ৪১/১ ও ৩৫/১, শ্রীলঙ্কা ২৫/৫, ৬৩/০, ৪৩/৩ এবং নিউজিল্যান্ড ৪৫/৩। গতকাল করে ২ উইকেটে ৪৩ রান। আইপিএলে পাওয়ার প্লেতে রান উঠছে ঝড়ের গতিতে। এক ম্যাচে ৬ ওভারে রান ছিল বিনা উইকেটে ১২৫। এ ছাড়া ৬৬, ৮১, ৭৯, ৭৬ রান উঠেছে ছয় ওভারের পাওয়ার প্লেতে। বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা পারছেন না। এই না পারার কারণ ব্যাখ্যায় নির্বাচক হান্নান বলেন, ‘সুনীল নারিন টেকনিক্যালি ভালো নন। অথচ পাওয়ার হিটিংয়ের জন্য সাফল্য পাচ্ছেন। গেইল টেকনিক্যালি ভালো। সেজন্য তিন ফরম্যাটেই সফল। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের পাওয়ার হিটিংয়ের মতো টেকনিক্যাল সমস্যাও রয়েছে। সেজন্য সফল হচ্ছেন না লিটন, সৌম্যরা। তার চেয়েও বড় বিষয় হচ্ছে, আমাদের ক্রিকেটাররা কন্ডিশন মানিয়ে খেলতে পারছেন না। কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াটা জরুরি।’ ভুল বলেননি নির্বাচক। যুক্তরাষ্ট্রের কন্ডিশনের সঙ্গে বাংলাদেশের কন্ডিশনে কোনো মিল নেই। দেশটির উইকেট, ক্রিকেটাররা প্রায় সবাই অপরিচিত। কোরি অ্যান্ডারসন একমাত্র পরিচিত ক্রিকেটার। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজটি মূলত টি-২০ বিশ্বকাপের প্রস্তুতি। ২০ ওভারের বিশ্বকাপের মূলমঞ্চে নামার আগে সিরিজ খেলে প্রস্তুতিটা সেরে নিচ্ছেন নাজমুলরা। হান্নান চিন্তিত টাইগার ওপেনারদের টি-২০ অ্যাপ্রোচ নিয়ে, ‘লিটন ও সৌম্য সরকারের টি-২০ অ্যাপ্রোচে সমস্যা রয়েছে। সেজন্য সাফল্য পাচ্ছেন না। তবে তানজিদ তামিমের অ্যাপ্রোচও ভালো।’

পাওয়ার অ্যাবিলিটি বাড়াতে ক্রিকেটারদের বেশি করে টি-২০ ম্যাচ খেলার কথা বলেন নির্বাচক হান্নান, ‘প্রতি বছর বিপিএলে ১০-১২টি ম্যাচ খেলে টি-২০ ক্রিকেটের পাওয়ার অ্যাবিলিটি বাড়ানো সম্ভব নয়। এজন্য আরও বেশি বেশি করে টি-২০ ম্যাচ খেলতে হবে ক্রিকেটারদের। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, যত বেশি ম্যাচ খেলবে, তত বেশি অ্যাপ্রোচ পজিটিভ হবে। ক্রিকেটারদের সারাবছরই টি-২০ ম্যাচ খেলা উচিত।’

সর্বশেষ খবর