বুধবার, ২৯ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

অনিয়মই যেন বাফুফের নিয়ম

ঢাকার এক প্রাচীনতম ক্লাবের পয়েন্টের এতটা নাজুক অবস্থা ছিল যে, তাদেরও নেমে যাওয়ার শঙ্কা ছিল

ক্রীড়া প্রতিবেদক

অনিয়মই যেন বাফুফের নিয়ম

পেশাদার লিগ দেশের ফুটবলে সর্বোচ্চ আসর। আজ এ আসরের পর্দা নামছে। অন্য মৌসুমের তুলনায় নতুন কমিটি দায়িত্ব নেওয়ার পর এবারের লিগ আয়োজন প্রশংসিত হয়েছে। অথচ একেও কুলষিত করতে বাফুফে পিছু হটেনি। চলতি লিগে বাইলজে আছে, লিগের সবচেয়ে কম পয়েন্ট পাওয়া দুই ক্লাব পেশাদার লিগ থেকে নেমে যাবে। সামনের মৌসুমে তাদের জায়গা হবে চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে। অথচ লিগ যখন শেষের দিকে তখন বাফুফে নির্বাহী কমিটির সভা ডেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো- দুই না, এবার একদল রেলিগেটেড হবে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। যিনি দেশের ফুটবলের অভিভাবক। তাঁরই সভাপতিত্বে এমন হঠকারিতা সিদ্ধান্ত হয় কীভাবে?

সালাউদ্দিনকে ঘিরে কম বিতর্ক হয়নি। তার পরও স্বীকার করতে হবে, তিনি ফুটবলজ্ঞানী। এত জ্ঞান থাকার পরও বাইলজ ভেঙে তিনি কীভাবে সদস্যদের নিয়ে দুই দলের বদলে এক দলকে নামানোর  ঘোষণা দিলেন? জনপ্রিয় একদল পেশাদার লিগ থেকে নেমে গেছে তা নিশ্চিত। পুরান ঢাকার এক প্রাচীনতম ক্লাবের পয়েন্টের এতটা নাজুক অবস্থা ছিল যে, তাদেরও নেমে যাওয়ার শঙ্কা ছিল। সেই দলকে রক্ষা করতেই নাকি বাফুফে নিজেদের আইন নিজেরাই ভেঙেছে। লিগ পরিচালনার জন্য লিগ কমিটি রয়েছে। তাদের পাশ কাটিয়ে সরাসরি নির্বাহী কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত এলো কীভাবে? কারণটাও নাকি অবাক করার মতো। বাফুফের নির্বাচন সামনে রেখে ভিতরে ভিতরে নাকি এখনই একটা প্যানেল তৈরি হয়েছে। সেই প্যানেলে আবার পুরান ঢাকার ক্লাবটিও রয়েছে। এখন যদি নেমে যায় তাহলে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে যাবে। নির্বাচনে সমর্থন পেতেই আইন ভেঙে রেলিগেশন থেকে রক্ষা করা হয়েছে তাদের।

বাফুফের এক সহসভাপতি মিডিয়ার কাছে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। এবার এমনিতেই লিগে দল সংখ্যা কম ছিল। গোপালগঞ্জ পেশাদার লিগে উঠেও অর্থসংকটের কারণ দেখিয়ে খেলেনি। তাই সামনের মৌসুমে পেশাদার লিগে দল বাড়াতে সর্বনিম্ন পয়েন্ট পাওয়া দলটিই রেলিগেটেড হবে। ভালো কথা, কিন্তু এ সিদ্ধান্ত তো গোপালগঞ্জ যখন নাম প্রত্যাহার করে নিল তখনই নেওয়া যেত। বাইলজ চূড়ান্ত হওয়ার পর এবং লিগ যখন শেষের পথে তখন কেন? ভোটের জন্যই কি আইন ভাঙা হবে?

সামনের লিগ আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে লিগ কমিটি সিদ্ধান্ত নেয় ১৬ বা ১৮ বছর বয়সি একজনকে শুরুর একাদশে রাখতে হবে। পরে তাকে বদল করে নিতে পারবে। ফুটবলে পাইপলাইন তৈরি করতেই লিগ কমিটি এমন উদ্যোগ। নব্বইয়ের দশকে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে এমন নিয়ম চালু হয়েছিল। এতে ফুটবল উপকৃত হয়েছিল। নকিব, জাকির, গাউস, আলমগীর, মাসুদ রানাদের মতো প্রতিভাবান খেলোয়াড়ের সন্ধান মিলেছিল। তাও ‘না’ হয়ে গেল নির্বাহী  কমিটির সভায়। প্রশ্ন উঠেছে- বাফুফে তাহলে কি চায় না দেশের ফুটবলের উন্নয়ন? নাকি চেয়ার পাওয়াটায় প্রধান।

সর্বশেষ খবর