শুক্রবার, ৩১ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

চ্যাম্পিয়নদের চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস

মনোয়ার হক

চ্যাম্পিয়নদের চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস

২০১৮-১৯ মৌসুমে পেশাদার ফুটবলে অভিষেকের পর থেকেই বসুন্ধরা কিংস লিগে শিরোপা জিতেই চলেছে। টানা পাঁচ বার চ্যাম্পিয়ন, এ এক অবিশ্বাস্য ঘটনা। তবে প্রায় ছয় বছর ফুটবল ক্যারিয়ারে শেষ হওয়া মৌসুমই কিংসের স্মরণীয় হয়ে থাকবে। লিগ ছাড়াও স্বাধীনতা কাপ ও ফেডারেশন কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রথমবার ট্রেবল জিতেছে দেশের ফুটবল কিং বসুন্ধরা কিংস। এর আগে মোহামেডান দুবার ও শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র একবার ট্রেবল জিতলেও অভিষেকের পর কিংসই সবচেয়ে কম সময়ের মধ্যে এক মৌসুমে তিন আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ঘরোয়া লিগে সর্বোচ্চ ১৯ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মোহামেডান। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৭ বার শিরোপা জিতেছে আবাহনী ক্রীড়াচক্র। ১৯৬০ সালের পর চ্যাম্পিয়ন না হলেও ঐতিহ্যবাহী ওয়ান্ডারার্স ছয়বার চ্যাম্পিয়ন হয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ শিরোপা জেতা দল। পাকিস্তান আমলে ইপিআইডিসি স্বাধীনতার পর সর্বশেষ নাম বদল করা বিজেএমসিও লিগে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।

উল্লেখিত ক্লাবগুলোকে রেকর্ডের দিক দিয়ে ছাড়িয়ে গেছে বসুন্ধরা গ্রুপের নিজস্ব ক্লাব বসুন্ধরা কিংসই। শুরু থেকেই কেউ টানা চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। অভিষেকের ছয় বছরের মাথায় এ শুধু রেকর্ড নয়। ইতিহাসের পাতায়ও ঠাঁই পেয়ে গেছে। ওয়ান্ডারার্স, মোহামেডান, বিজেএমসি ও আবাহনীর বয়স হিসেব করলে কিংসকে শিশুই বলা যায়। অথচ সেই বসুন্ধরা কিংসকে ঘরোয়া ফুটবলে চ্যাম্পিয়নদের চ্যাম্পিয়ন দল বলা হচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে বসুন্ধরা কেন চ্যাম্পিয়নদের চ্যাম্পিয়ন। শিরোপার খতিয়ানে তো আবাহনী ও মোহামেডান এগিয়ে। লিগ ছাড়াও ফুটবলে তারা অসংখ্য ট্রফি জিতেছে। তাই তো তাদের দুই প্রধান বলা হতো। মোহামেডান পাকিস্তান আমল থেকে আর আবাহনীও তো স্বাধীনতার পর শুরু থেকেই দেশের প্রথম শ্রেণির ফুটবল খেলছে। ১৯৪৮ সাল থেকে বিভিন্ন নাম বদল করা লিগে ১৩টি ক্লাব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। কিন্তু মাত্র ছয় বছরের অভিষেকের মাথায় বসুন্ধরা কিংস যে রেকর্ড গড়েছে তা অন্য ক্লাবের পক্ষে সম্ভব হয়নি। হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন ওয়ান্ডারার্স, আবাহনী ও মোহামেডানও হয়েছে। কোনো দল কি পেরেছে অভিষেক আসর থেকে হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়নের কীর্তি গড়তে? কিংসই পেরেছে। টানা তিনের পর চার ও পাঁচ চ্যাম্পিয়নের ইতিহাস লিখেছে। সদ্য শেষ হওয়া মৌসুমে বসুন্ধরা কিংস ট্রেবল জিতেছে। অভিষেকের পর সবমিলিয়ে তারা ১১টি শিরোপার ট্রফি ঘরে তুলেছে। লিগ ৫, ফেডারেশন কাপ ও স্বাধীনতা কাপে তিনবার করে চ্যাম্পিয়ন। অবশ্য ফুটবল ফেডারেশনের ক্যালেন্ডারভুক্ত আসরে মোহামেডান ও আবাহনী ছাড়া অন্য কারোর ১১ ট্রফি জেতার কৃতিত্ব নেই। ফুটবল ফেডারেশনের আওতায় ও বাইরে ১১ কেন দুই দল বিভিন্ন আসরে অসংখ্যবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তারপরও কিংস যা পেরেছে তা আবাহনী ও মোহামেডান পারেনি। অভিষেকের পুরো ছয় বছরও পূর্ণ হয়নি। এরই মধ্যে বসুন্ধরা কিংস ১১টি ট্রফি জিতে নিয়েছে। তাই তো চ্যাম্পিয়নদের চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস। পাকিস্তান আমলেই মোহামেডান ১১টি ট্রফি জিতে নিয়েছিল। তবে তা অভিষেকের পর ১১ বছরের মধ্যে। আর আবাহনী তা করেছে ১৬ বছরে। রেকর্ড গড়া আর রেকর্ড ভাঙা কিংসের এখন অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। সামনে তারাই চমক দেখাবে না ব্যতিক্রমী কিছু ঘটবে তা এখন দেখার বিষয়।

 

সর্বশেষ খবর