বৃহস্পতিবার, ২০ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

স্বপ্ন দেখাচ্ছেন বোলাররা

আসিফ ইকবাল

স্বপ্ন দেখাচ্ছেন বোলাররা

তানজিম সাকিবের দলভুক্তিতে প্রশ্ন উঠেছিল। সিমিং অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনকে বাদ দিয়ে জুনিয়র সাকিবকে বিশ্বকাপ স্কোয়াডে নেন টিম ম্যানেজমেন্ট। কেন নেওয়া হয়েছে তাকে, তার ব্যাখ্যা দেন প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। লড়াকু মেজাজ ছাড়াও কমিটমেন্টের জন্য তাকে বিশ্বকাপে নেওয়া হয়েছে। যুব বিশ্বকাপজয়ী দলের অন্যতম সেরা পেসার তানজিমের ভাগ্যও সহায় হয়েছে আসরে। ভারতের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে দলের সেরা স্ট্রাইক পেসার শরিফুল ইসলাম যদি আহত না হতেন, তাহলে জুনিয়র সাকিবকে সাজঘরে বসে হয়তো অপেক্ষা করতে হতো কোনো পেসারের ইনজুরি কিংবা ছন্দহীনতার। ভাগ্য সহায় ছিল বলে শেষ মুহূর্তে সুযোগ পেয়ে বাজিমাত করেন। গ্রুপ পর্বে ডানহাতি পেসারের পারফরম্যান্স দুর্দান্ত। ৪ ম্যাচে উইকেট নিয়েছেন ৯টি। বিশেষ করে নেপাল ম্যাচে ছিলেন বিধ্বংসী। শুধু সাকিব জুনিয়র নন, দুর্দান্ত বোলিং করছেন মুস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদ। এ ছাড়া লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেনও রয়েছেন ছন্দে। বোলারদের দুরন্ত বোলিংয়ে টি-২০ বিশ্বকাপে এই প্রথম কোনো আসরে সর্বাধিক ৩টি ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। এখন খেলছে সুপার এইট। আগামীকাল সকালে সাবেক বিশ্বচ্যম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ দিয়ে টাইগারদের শুরু হচ্ছে বিশ্বকাপের সুপার এইট।

নেপাল ম্যাচে টার্গেট মামুলী ১০৭ রান। ওভারপ্রতি টার্গেট ৫.৩ রান। ইনিংসের প্রথম বলেই বাউন্ডারি খেয়ে বিপদে পড়েন তানজিম সাকিব। কিন্তু শেষ করেন অসাধারণ স্পেলে। ২১ রানে জেতা ম্যাচে সেরা ক্রিকেটার হন ডানহাতি ফাস্ট বোলার। পাতলা গড়নের ফাস্ট বোলার তানজিম ১৪৬ কিলোমিটার গতিতে বোলিং করেছেন। ম্যাচ শেষে তানজিমের স্পেল ৪-২-৭-৪। ডট নেন ২১টি। টি-২০ বিশ্বকাপে একজন বোলারের সবচেয়ে বেশি ডট নেওয়ার রেকর্ড ছিল। ১৪ ঘণ্টা পর অবশ্য নিউজিল্যান্ডের লুকি ফার্গুসন রেকর্ডটি ভেঙে দেন। পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে ৪ ওভারের স্পেলের ২৪ বলই ডট নেন কিউই বোলার। তানজিম ৪ ম্যাচে ১৫ ওভার বোলিং করে ৭২ রানের খরচে উইকেট নিয়েছেন ৯টি। ওভারপ্রতি রান দিয়েছেন ৪.৩৭। নেপাল ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিং করেন ডানহাতি ফাস্ট বোলার তাসকিনও। তার স্পেল ৪-০-২৯-১। ডট নিয়েছিলেন ১৩টি। নেপাল ম্যাচের আগে টাইগারদের সবচেয়ে আগ্রাসী পেসার ছিলেন তাসকিন। ৪ ম্যাচে ১৬ ওভার বোলিং করে ১০৩ রানের খরচে উইকেট নেন ৭টি। ওভারপ্রতি রান দিয়েছেন ৬.৪৩। বিশ্বকাপে সবচেয়ে মিতব্যয়ী বোলিং করছেন মুস্তাফিজ। ওভারপ্রতি এখন পর্যন্ত রান দিয়েছেন ৩.৩৭। নেপাল ম্যাচে জুনিয়র সাকিবের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বোলিং করেন। ম্যাচে তার স্পেল ৪-১-৭-৩। গ্রুপ পর্বের চার ম্যাচে ১৬ ওভারে ৫৪ রানের খরচে নেন ৭ উইকেট। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের উইকেটগুলো পুরোপুরি তার বোলিং সহায়ক। বল থেমে যায়। মুস্তাফিজের কাটার বল এই উইকেটে খেলা খুবই কঠিন। টাইগার লেগ স্পিনার দুর্দান্ত বোলিং করছেন। শ্রীলঙ্কা ম্যাচের সেরা পারফরমার এখন পর্যন্ত ৪ ম্যাচে উইকেট নিয়েছেন ৭টি। ১৫ ওভারে রান দিয়েছেন ১০২টি। ওভারপ্রতি রান খরচ করেছেন ৬.৮০। বাঁ-হাতি স্পিনার সাকিব আল হাসান নেপাল ম্যাচে টানা দুই বলে ২ উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিকের আশা জাগিয়েছিলেন।

তানজিম, তাসকিন ও মুস্তাফিজ- তিন পেসার বোলিং করেছেন ৪৭ ওভার। ২২৯ রান দিয়ে উইকেট নিয়েছেন ২৩টি। আসরে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি উইকেট আফগানিস্তানের বাঁ-হাতি সুইং বোলার ফজল হক ফারুকীর। ৪ ম্যাচে উইকেট নিয়েছেন ১২টি। প্রথমবারের মতো টি-২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলতে টাইগার ব্যাটিং লাইনকে জ্বলে উঠতে হবে শতভাগ। তবে মূল ভরসা টাইগার বোলিং বিভাগ। বিশেষ করে পেসার ত্রয়ো যেভাবে বোলিং করছেন, এক কথায় অনবদ্য।

অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের প্রস্তুতি হিসেবে অ্যান্টিগার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে অনুশীলন সেরে নিচ্ছে টাইগাররা      ছবি : বিসিবি

সর্বশেষ খবর