বুধবার, ২৬ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

সুপার এইটে সুপার ফ্লপ

রাশেদুর রহমান

সুপার এইটে সুপার ফ্লপ

খুব বেশি দিন হয়নি আফগানিস্তানের আকাশ থেকে বোমারু বিমানের শব্দ শেষ হয়েছে। কয়েক বছর আগেও তাদের ঘুম ভাঙত শত্রুপক্ষের আক্রমণের তীব্র আওয়াজে। তবে ধ্বংসস্তূপের ভিতর থেকেই জ্বলে উঠল আফগানরা। ঘরের মাটিতে খেলার সুযোগ ছিল না। তারা ঘর পাতে ভারতে। কখনো বা আরব আমিরাতে। পরবাসেই চলে ক্রিকেট পরিচর্যা। সেই দলটাই চলে গেল বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে। আইসিসি টি-২০ বিশ্বকাপের শেষ চারে আফগানরা খেলবে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে।

আফগানদের ক্রিকেট ইতিহাস খুব বেশি দিনের নয়। ২০০৯ সালে তারা প্রথম আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ম্যাচ খেলে। এরপর থেকে কত বছর গেল? মাত্র ১৫ বছর। এরই মধ্যে নিজেদের বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে তুলে এনেছে দলটা। কাল দিনটা ভালো কাটলে ফাইনালেও পৌঁছে যেতে পারে আফগানরা। দেড় দশকের মধ্যেই একটা দল বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে চলে গেল। আর বাংলাদেশ এখনো গ্রুপ পর্ব আর সুপার এইটেই আটকে আছে। এর কারণ কী! আফগান অধিনায়ক বলছেন, ‘বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের পার্থক্য খুব বেশি নেই। দুই দলই ভালো ক্রিকেট খেলে। বিশেষ করে সাদা বলে আমার মনে হয় খুব একটা পার্থক্য নেই। সংক্ষিপ্ত সংস্করণে আফগানিস্তানের শক্তিশালী হিটার আছে। যারা বল মাঠ ছাড়া করতে পারে।’ খুব ভদ্র ভাষায় পার্থক্যটা দেখিয়ে দিলেন আফগান অধিনায়ক। বাংলাদেশেরও কী হিটার নেই! লিটন দাস, সৌম্য সরকার, নাজমুল, সাকিব, মাহমুদুল্লাহরা কী বল মাঠ ছাড়া করতে পারেন না! তারাও পারেন। তবে সময়মতো জ্বলে উঠতে পারেন না। দলের প্রয়োজনে ভূমিকা রাখতে পারছেন না।

সহজ ম্যাচ হেরে সমর্থকদের কাছে ক্ষমা চাওয়ার রীতিটা বেশ পুরনো। সাবেক অধিনায়কদের অনেকেই এমনটা করেছেন। নাজমুল হোসেন শান্তও সেই পথেই হাঁটলেন। গতকাল আফগানিস্তানের কাছে হারের পর বলে দিলেন, ‘বিশ্বকাপের পুরো যাত্রা সম্পর্কে বলব, আমরা দল হিসেবে বাংলাদেশের সব  সমর্থককে হতাশ করেছি।’ ব্যাটিংয়ে দেশকে কিছু দিতে ব্যর্থ হওয়ায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন। কিন্তু এমন দুঃখ প্রকাশেই কি সব শেষ হয়ে গেল! দর্শকরা কি ভুলে যাবেন! হৃদয়ের ক্ষতগুলো কি মুছে যাবে!

বাংলাদেশের ব্যর্থতার মধ্যে কিছুটা আশা জাগিয়েছেন রিশাদ হোসেন। ৭ ম্যাচে ১৪ উইকেট শিকার করেছেন তিনি। তালিকায় যৌথভাবে তিন নম্বরে। ব্যাট হাতে বাংলাদেশের কেবল তাওহিদ হৃদয় সাহস দেখিয়েছেন। তিনি ৭ ম্যাচ ব্যাটিং করে ১৫৩ রান করেছেন। স্ট্রাইক রেট ১২৮.৫৭। বাংলাদেশের বাকি ব্যাটারদের মধ্যে কেবল সাকিব আল হাসানের স্ট্রাইক রেট ১০০-এর ওপরে। ৭ ম্যাচে তার সংগ্রহ ১১১ রান। বাকিদের স্ট্রাইক রেট ১০০-এর নিচে। টি-২০ ক্রিকেটে স্ট্রাইক রেট বেশ গুরুত্বপূর্ণ। দ্রুত রান তুলে দলের সংগ্রহ বড় করাই ব্যাটারদের কাজ। সেই কাজে নাজমুলবাহিনী বেশ পিছিয়ে। যায় হোক সুপার এইটে সুপার ফ্লপ বাংলাদেশ।

সর্বশেষ খবর