শিরোনাম
শুক্রবার, ২৮ জুন, ২০২৪ ০০:০০ টা

মার্করামের উচ্ছ্বাস রশিদের হতাশা

আসিফ ইকবাল

মার্করামের উচ্ছ্বাস রশিদের হতাশা

হ্যান্সি ক্রোনিয়া, গ্রায়েম স্মিথ, এডি ভিলিয়ার্স, ফাপ ডু প্লেসিস-এঁরা সবাই দক্ষিণ আফ্রিকার কিংবদন্তি ক্রিকেটার। সবাই নেতৃত্ব দিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকাকে। কিন্তু এঁরা নিজ দেশকে আইসিসির বৈশ্বিক কোনো টুর্নামেন্টে সেমিফাইনালের কঠিন হার্ডল টপকে ফাইনালে নিয়ে যেতে পারেননি। পর্বত ডিঙানোর সেই কঠিন কাজটি করেছেন এইডেন মার্করাম। ২৬ বছর পর দক্ষিণ আফ্রিকাকে কোনো বৈশ্বিক টুর্নামেন্টের ফাইনালে তুলেছেন। এজন্য দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটের ‘বরপুত্র’ বলা হচ্ছে ২৯ বছর বয়সি মার্করামকে। কেন বলবে না? তাঁর নেতৃত্বে এখন পর্যন্ত ওয়ানডে বিশ্বকাপ, টি-২০ বিশ্বকাপ, যুব বিশ্বকাপে কোনো ম্যাচ হারেনি প্রোটিয়ারা। তাঁর নেতৃত্বে ২০১৪ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ যুব বিশ্বকাপের ট্রফি জেতে দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৯৯৮ সালে আইসিসি নকআউট বিশ্বকাপের ট্রফি জয়ের পর ওটাই ছিল প্রোটিয়াদের কোনো শিরোপা উৎসব। এরপর সেমিফাইনালের গন্ডি কখনোই পেরোয়নি। এবার টানা আট জয়ে টি-২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে। আসরে প্রথম সেমিফাইনালে আফগানিস্তানকে হেসেখেলে ৬৭ বল আগে হারিয়েছে ৯ উইকেটে। ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে দুটি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে দুটিতেই জিতেছেন মার্করাম। বিশ্বকাপে তাঁর জয়ের সাফল্য শতভাগ। ১৪ ম্যাচের সবকটিতে জিতেছেন। ক্রিকেটের ‘বরপুত্র’ মার্করামের নেতৃত্বে এবার টি-২০ বিশ্বকাপের শিরোপা জিততে চাইছে দক্ষিণ আফ্রিকা। আগামীকাল বারবাডোজে স্বপ্নের ফাইনাল খেলবে ‘চোকার্স’ খ্যাত আফ্রিকা।

অতীতের সব দুঃস্বপ্ন ভুলে উৎসব, উচ্ছ্বাসে ভাসতে প্রস্তুত প্রোটিয়া ক্রিকেটাররা। লিখতে চান নতুন ইতিহাস। অথচ দারুণ ক্রিকেট খেলে প্রথমবারের মতো টি-২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলা আফগানিস্তান হতাশ বিপর্যস্তকর হারে। দলটির ক্রিকেটার, কোচ ও সমর্থকদের বিশ্বাস হচ্ছে না এমন একপেশে হারের। দক্ষিণ আফ্রিকার মারণঘাতী বোলিংয়ে ৪০ ওভারের সেমিফাইনাল শেষ হয় মাত্র ২০.৪ ওভারে। ম্যাচ হেরে কান্নায় ভেঙে পড়েন অধিনায়ক রশিদ খান। কোচ জোনাথন ট্রটের সামনে দাঁড়িয়ে বিমর্ষ হয়ে মাথা নুইয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন। ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর টারুবার ব্রায়ান চার্লস লারা স্টেডিয়ামে হারের পর আফগান অধিনায়ক হারের জন্য ব্যাটিংকে দুষেছেন, ‘দল হিসেবে আমাদের জন্য কঠিন এক রাত গেছে। আমরা এর চেয়ে ভালো করতে পারতাম। কিন্তু কন্ডিশন আমাদের সেটা করতে দেয়নি। আমরা ব্যাটিংটা ভালো করিনি। ব্যাটিং নিয়ে কিছু কাজ করতে হবে, বিশেষ করে মিডল অর্ডার কীভাবে খেলাটাকে গভীরে নিতে পারে তা নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করে আমরা আবার ফিরব।’ কোচ জোনাথন ট্রট সমালোচনা করেছেন উইকেটের, ‘কিছু বলে নিজেকে সমস্যায় ফেলতে চাই না। এটা এমন পিচ ছিল না, যেখানে আপনি সেমিফাইনাল খেলতে চাইবেন। আমি বলছি না একেবারে ফ্ল্যাট হতে হবে। বলছি না উইকেটে স্পিন হবে না, সিম মুভমেন্ট হবে না। এমন উইকেট হওয়াও উচিত, যেখানে ফুট মুভমেন্ট করতে পারে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে।’

টারুবার উইকেটে টস হেরে ফিল্ডিংয়ে নেমে আগুন ঝরানো বোলিং করেন মার্কো জেনসেন, কাগিসো রাবাদা, এনরিখ নর্টজেরা। প্রোটিয়া পেস আক্রমণে ১১.৫ ওভারে মাত্র ৫৬ রানে গুটিয়ে যায়। টি-২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে এর চেয়ে কম রানে কোনো দল আউট হয়নি। টার্গেট ৫৭ রান আবার দক্ষিণ আফ্রিকা টপকে যায় ৬৭ বল হতে রেখে ১ উইকেট হারিয়ে। অবিশ্বাস্য জয়ে সেমিফাইনালে উঠে দলের প্রশংসা করেন প্রোটিয়াস অধিনায়ক মার্করাম, ‘ভালো লাগছে। এটি একটি দলীয় প্রচেষ্টার ফল। শিরোপা জিততে আরও একটি ধাপ পার হতে পেরে আমরা আনন্দিত। টস হেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি। জিতলে আমরাও আগে ব্যাটিং করতাম। কন্ডিশন কাজে লাগিয়ে বোলাররা সঠিক জায়গায় দারুণ বোলিং করেছে। ব্যাটারদের জন্য কন্ডিশন কঠিন ছিল। কিন্তু পুরোটাই ছিল জুটি গড়ার ব্যাপার। ভাগ্য ভালো যে আমরা দারুণ একটি জুটি গড়েছি।’

সর্বশেষ খবর