বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

বাফুফে মানছে না ফিফার নির্দেশনা

লিগ আয়োজন না করেও জেলার কাউন্সিলরশিপ টিকে থাকে কেন? প্রিমিয়ারের দলগুলো কোটি কোটি টাকা লিগে খরচ করে কাউন্সিলরশিপ পায়। সেখানে মাত্র ৮টি খেলা খেলে হুট করে নারী দলে কাউন্সিলর দেওয়া হলো কেন?

ক্রীড়া প্রতিবেদক

বাফুফে মানছে না ফিফার নির্দেশনা

ফিফার অর্থ কেলেঙ্কারিই সামাল দিতে পারছে না বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। পরবর্তীতে শাস্তির তালিকায় কার নাম থাকে এ নিয়ে আতঙ্কিত বাফুফে। অথচ এর ভিতরে ফেডারেশন এমন এক কান্ড ঘটাল যা নিয়ে বিশ্ব ফুটবলের অভিভাবক সংস্থা-ফিফা নতুন করে ক্ষুব্ধ হতেই পারে। ২০২০ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত বাফুফের নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ১৩৯ জন। বিপুল ভোটার সংখ্যা নিয়ে ২০২১ সালেই প্রশ্ন তোলে ফিফা। গত বছর জানুয়ারিতে ফিফা বাফুফেকে নির্দেশনা পাঠায় ২১ থেকে বাফুফে নির্বাহী কমিটির সদস্য সংখ্যা ১১-১৪ জনে নামিয়ে আনতে। আর কাউন্সিলর নামিয়ে আনতে বলেছিল ১০০-এর নিচে। বাফুফে সভাপতিই তখন বলেছিলেন, ‘যারা ফুটবলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়, তাদের কাউন্সিলরশিপ বাতিল করতে ফিফা নির্দেশনা দিয়েছে। যেসব জেলা লিগ আয়োজন করবে না ফিফা তাদেরও কাউন্সিলর না রাখার পরামর্শ দিয়েছে।’ সালাউদ্দিন এটাও বলেছিলেন, ‘ফিফার নির্দেশনা মানতে আমরা বাধ্য। এ ছাড়া আমাদের বিকল্প কোনো পথ নেই।’ সালাউদ্দিন মুখে বলেছিলেন। বাস্তবে কি তার প্রতিফলন ঘটেছে? উল্টো ২৯ জুন অনুষ্ঠিত বাফুফের বার্ষিক সাধারণ সভায় যা ঘটেছে তাতে পরিষ্কার বাফুফে ফিফার নির্দেশনাও অমান্য করেছে। বছরের পর বছর লিগ না হওয়া জেলার কাউন্সিলরশিপ বাতিল হয়নি। বরং আরও বাড়ানো হয়েছে। এবার নারী লিগে শীর্ষ চার দলকে কাউন্সিলরশিপ দেওয়া হয়েছে। যারা সামনের নির্বাচনে শুধু ভোটার নন, প্রার্থীও হতে পারবেন। সবচেয়ে মজার বিষয় এজিএম শেষে সংবাদ সম্মেলনে সালাউদ্দিনের কাছে প্রশ্ন রাখা হয় কাউন্সিলরশিপ বাড়িয়ে ফিফার নির্দেশ অমান্য হলো কি না? এখানে তাঁর ব্যাখ্যা ছিল- ‘ফিফা আমাদের নির্দেশনা দিয়েছিল, আমরা বলেছি কাউন্সিলর কমালে ফিফাকেই কমাতে হবে। সাধারণ সভা ছাড়া কমানো বা বাড়ানো সম্ভব নয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে ৪টি বাড়ানো। আমরা বিষয়টি ফিফাকে জানাব।’ সালাউদ্দিনের কথার সূত্র ধরেই বলছি, কমাতে হবে ফিফাকে তাহলে চার কাউন্সিলর বাড়ানো হলো কীভাবে? আর লিগ আয়োজন না করেও জেলার কাউন্সিলরশিপ টিকে থাকে কেন? প্রিমিয়ারের দলগুলো কোটি কোটি টাকা লিগে খরচ করে কাউন্সিলরশিপ পায়। সেখানে মাত্র ৮টি খেলা খেলে হুট করে নারী দলে কাউন্সিলর দেওয়া হলো কেন? বিষয়টি তো এমনও হতে পারত এবার নারী লিগে কাউন্সিলরশিপ দেওয়া হলেও তারা সামনের নির্বাচনে ভোটার হতে পারবেন না। আগামী নির্বাচনে ভোটাধিকার পাবেন। সামনেই নির্বাচনে ভোট দিতে হবে। এতে কি বিশেষ উদ্দেশ্য কাজ করেনি? যারা কাউন্সিলর হয়েছেন সেনাবাহিনী ছাড়া তিনটি দলের কর্মকর্তারাই বাফুফের সঙ্গে জড়িত। ভোট নিশ্চিত করতেই তো মূলত কাউন্সিলরশিপ দেওয়া। নাসরিন একাডেমি শক্তিশালী দল গড়লেও অর্থ ব্যয় তেমন হয়নি। বাফুফের এক সদস্যের সহযোগিতায় তারা অবিশ্বাস্যভাবে শক্তিশালী দল গড়ে। এর পেছনে বড় কারণ নির্বাচন। নারী ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান মাফুজা আক্তার কিরণ নিজেই বলেছেন, ‘নিয়মিত লিগ না হওয়ায় এএফসি নারী চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের কোনো ক্লাব এন্ট্রি না করায় খেলতে পারছে না। লিগই যখন অনিয়মিত সেখানে কাউন্সিলরশিপ দেওয়া হলো কীভাবে?

 

 

সর্বশেষ খবর