বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

আলোচিত যত ফুটবলার

দলবদলের ইতিহাস

মনোয়ার হক

আলোচিত যত ফুটবলার

স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সাল থেকে ঢাকা প্রথম বিভাগ লিগ শুরু হয়েছিল। সেবার সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া ফুটবলার পেয়েছিলেন ২০/২৫ হাজার টাকার মতো। তাও আবার দুই বছরের চুক্তিতে। আসছে মৌসুমে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া ফুটবলার নাকি পাবেন প্রায় ১ কোটি টাকার মতো। মান নেই, আন্তর্জাতিক ফুটবলে জাতীয় দল ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দি থাকলেও ঘরোয়া আসরে পারিশ্রমিক বেড়েই চলেছে। অনেকটা এমন অবস্থা ফুটবলে লাথি মারতে পারলেই লাখ লাখ টাকা হাঁকানো যায়। ২০, ৩০, ৫০, ৬০, ৭০, ৭৫ ও ৮০ লাখ টাকা পারিশ্রমিক পাওয়াটা স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। আন্তর্জাতিক ফুটবলে অতীতেও উল্লেখ করার মতো সাফল্য ছিল না। তারপরও মানসম্পন্ন খেলোয়াড় ছিলেন যাদের মধ্যে অনেকেই তারকা খ্যাতি পেয়েছেন। তাদের নৈপুণ্য এখনো চোখে ভাসে।

পেশাদার লিগে দলবদল নিয়ে আলোচনা বা কারোর আগ্রহ থাকে না তাও বলা যাবে না। তবে তা হয় দলভিত্তিক। এ ক্ষেত্রে শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র, শেখ জামাল ধানমন্ডির শক্তিশালী দল গড়া নিয়ে বেশ আলোচনা হয়েছে। বসুন্ধরা কিংস ঘিরে তো এখন দেশব্যাপী আলোড়ন পড়ে যায়। কিন্তু ব্যক্তিকেন্দ্রিক অর্থাৎ কোনো খেলোয়াড়ের দলবদল ঘিরে কোনো হইচই নেই। ৭০ আর ৮০ দশকে শুধু হইচই হতো না তারকা খেলোয়াড়দের নিয়ে স্টেডিয়ামপাড়ায় বড় ধরনের সংঘর্ষও বেধে যেত। যা সামাল দিতে পুলিশকে ফাঁকা গুলি ও টিয়ার গ্যাস ছুড়তে হতো। স্টেডিয়ামে আনাটা নিরাপদ নয় কোনো কোনো তারকাকে বিশেষ কমিশনে দলবদল করানো হয়েছে। ৯০ দশক পর্যন্ত এমন অবস্থা ছিল।

দলবদল ঘিরে বড় ধরনের শেষ উত্তেজনাটা হয়েছিল ১৯৯৪ সালে। সেবার মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া সংসদ প্রথমবারের মতো শক্তিশালী দল গড়েছিল মোহামেডান-আবাহনীর ঘর ভেঙে। ওই সময় ডামফার (বিলুপ্ত) দ্বিতীয় তলায় খেলোয়াড়রা স্বাক্ষর করে দলবদল করতেন। তিন বা চারদিন ধরে দলবদল চলত। মোহামেডান-আবাহনীর সাপোর্টারা সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত স্টেডিয়াম এলাকা দখল করে রাখতেন। মুক্তিযোদ্ধা কোনোভাবেই যেন তাদের খেলোয়াড়দের সই করাতে পারে। বিফলে যায় দুই দলের সমর্থকদের প্রচেষ্টা। মুক্তিযোদ্ধা সেবার বিশেষ কমিশনে মোহামেডানের জুয়েল রানা, বরুণ, আরমান, নকিব সেই সঙ্গে আবাহনীর গোলরক্ষক মহসিন, রুমি ও মামুন জোয়ারদারকে দলে ভিড়ায়।

ফুটবলে সুপারস্টার কাজী সালাউদ্দিন ১৯৭২ সালে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক নিয়ে নবাগত ঢাকা আবাহনীতে যোগ দিলেও তাঁর দলবদল নিয়ে ততটা হইচই হয়নি। কারণ তখনো তারকার খ্যাতি ছিল না তাঁর। বরং অভিজ্ঞ গোলাম সারোয়ার টিপু মোহামেডান ছাড়ায় আলোড়ন পড়েছিল। ১৯৭৫ সালে শামসুল আলম মঞ্জু তারকা খেলোয়াড় না হলেও সেবার তার আবাহনী থেকে মোহামেডানে যোগ দেওয়াটা দলবদল ইতিহাসে বড় চমক। মোহামেডানের সমর্থকরা স্টেডিয়াম থেকে তাকে কাঁধে তুলে ক্রীড়া পরিষদের সামনে অবস্থিত মোহামেডান ক্লাবে নিয়ে আসেন।

আশরাফ উদ্দিন আহমেদ চুন্নু সুপারস্টার ফুটবলার হলেও ১৯৭৫ সালে রহমতগঞ্জ থেকে তার আবাহনী যোগ দেওয়াটা ছিল নীরবভাবে। ওই সময় চুন্নু ছিলেন উদীয়মান খেলোয়াড়।

১৯৮১ সালে আবাহনীর ঘরের ছেলে পরিচিত দেওয়ান শফিউল আরেফিন টুটুলের ব্রাদার্সে যোগ দেওয়া নিয়েও বেশ হইচই পড়ে। ১৯৮৩ সালে মোহামেডান থেকে ইউসুফ ও গাফফারের আবাহনীতে যোগ দেওয়াটাও দলবদলে উত্তাপ ছড়িয়েছিল। শেখ মো. আসলাম ১৯৮৪ সালে মোহামেডান থেকে আবাহনীতে যোগ দিলেও ততটা আলোড়ন হয়নি। কারণ ওই সময়ে তিনি বড় মাপের খেলোয়াড় ছিলেন না। তবে ১৯৯৩ সালে তিনি যখন আবাহনী ছেড়ে ফের মোহামেডানে ফিরে আসেন তখন বেশ আলোড়ন পরে যায়।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর