হামেস রদ্রিগেজ; কলম্বিয়ান ফুটবলের ফিনিক্স পাখি! স্মৃতি হতে হতে যিনি এখন কলম্বিয়ার ‘ফুটবল সম্রাট’। যার পায়ের জাদুতে ২৩ বছর পর কোপার শিরোপা জয়ের স্বপ্ন দেখছে দেশটি। ‘ফিনিক্স পাখি’ এক পৌরাণিক গল্প। গ্রিক পুরাণ, ফিনিসীয় পুরাণ, মিসরীয় পুরাণ ও চাইনিজ পুরাণে রয়েছে পাখিটির গল্প। আরেক নাম ‘অগ্নি পাখি’। সৌভাগ্যের পাখিও বলা হয়। আগুনে পাখিটির কোনো মৃত্যু নেই। হাজার বছর বেঁচে থাকে। যমদূতের হাতে মৃত্যুর আগে নিজেই আগুনে ভস্মীভূত হয়। এরপর পুনরায় বেঁচে ওঠে। এভাবেই চলছে হাজার হাজার বছর। মিথ আছে, ফিনিক্স পাখির ছোঁয়ায় বদলে যায় যে কারও জীবন। রদ্রিগেজের ছোঁয়ায় বদলে গেছে কলম্বিয়ার ফুটবল। এখন দেশটি স্বপ্ন দেখছে। অথচ দুই বছর আগে রদ্রিগেজ হারিয়ে গিয়েছিল অতল সমুদ্রে। সেখান থেকে কোচ নেস্তর লরেনসো টেনে তোলেন। এখন রদ্রিগেজের সাফল্যের গল্প রূপকথাকেও হার মানায়। মেসি, ডি মারিয়া, ভিনিসিয়ুসদের মতো তারকা থাকার পরও সব আলো কেড়ে নিয়েছেন রদ্রিগেজ। ফুটবল সৌকর্যে কলম্বিয়াকে কোপার ফাইনালে টেনে তোলেন। আসরে দলটির গোল ১২। রদ্রিগেজের গোল মাত্র ১টি। বাকি ১১ গোলের ৬টিতেই সহায়তা করেছেন। কোপার এক আসরে সবচেয়ে বেশি গোলের সহায়তার নতুন রেকর্ড গড়েন। মেসি এক আসর সর্বোচ্চ ৫টি গোলের সহায়তা করেছিলেন। বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টায় ফ্লোরিডার হার্ডরক স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে কী করবেন রদ্রিগেজ, সেটাই দেখার বিষয়।
রদ্রিগেজের পথচলা শুরু ২০১৪ সালে ব্রাজিল বিশ্বকাপে। চোখ ধাঁধানো ফুটবল খেলে জিতে নেন গোল্ডেন বুট। গোল করেছিলেন ৬টি। সেবার কলম্বিয়া প্রথমবার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলে। যদিও কোয়ার্টারে স্বাগতিক ব্রাজিলের কাছে হেরেছিল ২-১ গোলে। ম্যাচটিতে একটি গোলও করেছিলেন। নকআউটে উরুগুয়ের বিপক্ষে বুক দিয়ে বল রিসিভ করে ভলিতে যে গোলটি করেছিলেন, সেটাকে বিশ্বকাপ ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা গোল হিসেবে ধরা হয়। ২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপে খেলেও গোল পাননি। এরপর বাদ পড়েন জাতীয় দল থেকে। কোচদের সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাচ্ছিল। অবশেষে সৌভাগ্য বয়ে আনেন বর্তমান কোচ নেস্তর লরেনসো। দায়িত্ব নিয়েই কোচ দলের ভার তুলে দেন রদ্রিগেজের হাতে। এরপর ইতিহাস। ফাইনালের আগে পর্যন্ত ২৮ ম্যাচে অপরাজিত থাকে কলম্বিয়া।