বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

ইউরো-কোপা দেখে মন ভরেনি

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ইউরো-কোপা দেখে মন ভরেনি

রুম্মন বিন ওয়ালি সাব্বির

২০২৬ সালে বিশ্বকাপ ফুটবল ফাইনালে কারা খেলবে এ প্রশ্ন তোলাটাই হাস্যকর হবে। কেননা যেখানে বাছাই পর্ব শেষ হয়নি সেখানে ফাইনালের আলোচনাটা পাগলামি ছাড়া আর কিছু নয়। হাতে এখনো দুই বছর সময় বাকি। তারপরও কেউ কেউ আবার বলছেন, আর্জেন্টিনা ও স্পেনের কথা। কোপা আমেরিকা ফাইনাল শেষ হওয়ার পরই ধারাভাষ্যকারও বলে ফেলেন তাহলে কি আমরা সামনের বিশ্বকাপ ফাইনালে দুই মহাদেশীয় চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা ও স্পেনকে দেখব? বলার একটাই কারণ ছিল দুই টুর্নামেন্টে দুই দেশ চ্যাম্পিয়ন হওয়া। অবশ্য ধারাভাষ্যকাররা এটাও বলেছেন, চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর তো কিছু বলতে হবে, তাই বিশ্বকাপের আগাম ফাইনাল ঘিরে মন্তব্য করে দুই দেশের সমর্থকদের কিছুটা খুশি করা।

আসলেও বিশ্বকাপ ঘিরে এখনই আলোচনা করাটা অর্থহীন। যেখানে চূড়ান্ত পর্বে কারা খেলবে ঠিকই হয়নি। সেখানে ফাইনালের সম্ভাব্য দলের নাম বলাটা আরও অর্থহীন। তবে আশ্চার্যজনক কিছু না ঘটলে আর্জেন্টিনা কিংবা স্পেন চূড়ান্ত পর্বে খেলবে এ নিয়ে সংশয় নেই। খেললেও ফিকশ্চারে তো এমনও হতে পারে স্পেন-আর্জেন্টিনা শেষ ষোলো, শেষ আট, সেমিফাইনালও খেলতে পারে। সেখানে ফাইনালের আগাম আশা কেন? আসলে বড় দুই টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বলে বাড়তি উৎসাহ নিয়ে এমনটিই বলা।

বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হয় দেশের সাবেক তারকা ফুটবলার রুম্মন বিন ওয়ালি সাব্বিরের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বিশ্বকাপের এখনো অনেক বাকি। এ সময়ের মধ্যে খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স অনেক ওঠা-নামা করবে। সে ক্ষেত্রে ২০২৬ সালে বিশ্বকাপে কোন দল ভালো বা খারাপ করবে তা কোনোভাবেই বিশ্লেষণ করা যাবে না। অনেক উত্থান-পতন হবে। এর মধ্যে কোনো বড় দেশও চূড়ান্ত পর্বে না উঠতে পারে। যেমনটি গত দুই বিশ্বকাপে চারবারের চ্যাম্পিয়ন ইতালির বেলায় ঘটেছিল। তারপরও আমার ধারণা আর্জেন্টিনা ও স্পেনে এক্ষেত্রে সমস্যা হবে না। দুটি দেশই পরবর্তী বিশ্বকাপে খেলবে। আবার এটাও ঠিক ফাইনালে খেলার মতো সামর্থ্য দুটি দেশেরই রয়েছে।’

সাব্বির বলেন, ‘ইউরো বা কোপাকে অনেকেই বিশ্বকাপের সঙ্গে তুলনা করেন। কেননা বিশ্বকাপ জেতা প্রতিটি দেশই দুই টুর্নামেন্টে অংশ নেয়। এখান থেকেই আভাস পাওয়া যায় বিশ্বকাপে কে কেমন খেলতে পারে। তবে এবার ইউরো ও কোপা দেখে আমার মন ভরেনি। প্রশংসা করার মতো কিছুই খুঁজে পাইনি। ইউরো বা কোপায় সেরা ফুটবলারের পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। বিচারকরা উপযুক্তদের বেছে নিয়েছেন এ নিয়ে সন্দেহ নেই। কিন্তু প্রকৃত সেরা বলতে যা বোঝায় তা কি আমরা দেখেছি! আমার এ কথার সঙ্গে অনেকে দ্বিমত পোষণ করতেই পারেন। কিন্তু ফুটবলার হিসেবে খেলা দেখে আমি যা বুঝেছি সেটাই বললাম। স্পেনের লামিন ইয়ামালকে নিয়ে অনেক হই চই হচ্ছে।’

‘আসলেও ১৭ বছরের ছেলেটা ভালোই খেলেছে। ও ছাড়া নতুন কারোর নাম কেউ বলতে পারবে দুটো টুর্নামেন্টে চোখে পড়ার মতো খেলা খেলতে পেরেছেন? কেউ কেউ বিশ্বকাপে স্পেন-আর্জেন্টিনার ফাইনালের সম্ভাবনা দেখছেন। আবারও বলছি, সেই সামর্থ্য দুটি দেশেরই রয়েছে। কিন্তু দুই বছরে পারফরম্যান্সের অনেক উত্থান-পতন হবে। তবে স্পেনের প্লাস পয়েন্ট হচ্ছে তাদের অনেকে তরুণ, দুই বছরের মধ্যে অনেক পরিপক্ব হয়ে উঠবেন তারা। যা বিশ্বকাপে কাজে লাগাতে পারবে। অন্যদিকে ডি   মারিয়া বিদায় নিয়েছেন। মেসি যদি  বিশ্বকাপে খেলেনও ২০২২ রূপে দেখা মিলবে কি? হয়তো বা দুই বছরের মধ্যে আর্জেন্টিনায় ভালোমানের খেলোয়াড় বের হবে। সেই সম্ভাবনা তো অনেকের রয়েছে। সুতরাং হাস্যকর হলেও দুই টুর্নামেন্ট ঘিরে বিশ্বকাপের আলোচনা করাটা সত্যিই বেমানান।’

সর্বশেষ খবর