মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

হামেস রদ্রিগেজের পুনরুত্থানের গল্প

ক্রীড়া ডেস্ক

হামেস রদ্রিগেজের পুনরুত্থানের গল্প

দশ বছর আগে ব্রাজিলে ২৩ বছরের এক কলম্বিয়ান তরুণ সবাইকে চমকে দেন। সেবার লাতিন আমেরিকায় বিশ্বকাপ আয়োজন করে ব্রাজিল। সেই বিশ্বকাপে কলম্বিয়া কোয়ার্টার ফাইনাল খেলে। রাদামেল ফ্যালকাও ছিলেন দলের বড়ু তারকা। তবে ফ্যালকাওকে পেছনে ফেলে দেন তরুণ ফুটবলার হামেস রদ্রিগেজ। একের পর এক গোল করে নজর কাড়েন। উরুগুয়ের বিপক্ষে ভলিতে এক গোল করেন তিনি। সেই গোলটা বছরের সেরা হয়ে যায়। ফিফা পুসকাস ট্রফি জেতেন রদ্রিগেজ।

সেই বিশ্বকাপে রদ্রিগেজ তার দলের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। এমনকি আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি দিয়েগো ম্যারাডোনা বলেছিলেন, বিশ্বকাপের গোল্ডেন বল ট্রফিটা মেসিকে না দিয়ে হামেস রদ্রিগেজকেই দেওয়া উচিত ছিল। বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার পর কলম্বিয়ান তরুণকে নিয়ে টানাটানি পড়ে যায়। তাকে দলে নেয় রিয়াল মাদ্রিদ। সে সময় ৮০ মিলিয়ন ইউরোতে তিনি রিয়ালে যোগ দেন। দলের গুরুত্বপূর্ণ ১০ নম্বর জার্সিটা গায়ে জড়ান। সেই রদ্রিগেজ বিশ্বকাপ যেতে না যেতেই ফর্ম হারিয়ে ফেলেন। পরবর্তী কয়েক বছরের মধ্যে একেবারেই হারিয়ে যান। রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে বিভিন্ন ক্লাব ঘুরতে থাকেন। কিন্তু নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি কোথাও। রিয়াল ছেড়ে প্রথমে যান বায়ার্ন মিউনিখে। তার পর ইংলিশ ক্লাব এভারটনে। সেখান থেকে কাতারি ক্লাব আল রাইয়ান, গ্রিসের অলিম্পিয়াকস ঘুরে যোগ দেন ব্রাজিলের সাও পাওলোতে। উজ্জ্বল এক নক্ষত্রের পতনই দেখে নিয়েছিল ফুটবল দুনিয়া। তবে এক দশক পর পুনরায় স্বরূপে ফিরলেন হামেস রদ্রিগেজ। ২০১৪ সালে টুর্নামেন্ট সেরা ফুটবলারের পুরস্কার গোল্ডেন বল পাননি তিনি মেসির কারণে। দশ বছর পর কোপা আমেরিকায় সেই ট্রফিটাই পেলেন তিনি। দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন টুর্নামেন্টজুড়ে। একের পর এক ম্যাচে কলম্বিয়াকে জয় উপহার দিয়েছেন। দলকে তুলে নিয়েছেন ফাইনালে। সেখানে অবশ্য অদম্য আর্জেন্টিনার সঙ্গে লড়াইয়ে হেরে যায় তার দল। তবে গোল্ডেন বলের পুরস্কারটা হামেস রদ্রিগেজের হাতেই ওঠে। আবারও নিশ্চয়ই তাকে নিয়ে আগ্রুহী হবে বড়ু বড়ু ক্লাব!

হামেস রদ্রিগেজকে সত্যিকার অর্থে কোনো কোচই সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারেননি। কলম্বিয়ার কোচ লরেনজো বলেন, ‘আমি দলের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই হামেস রদ্রিগেজের খেলা অনুসরণ করছিলাম। যেখানেই সে খেলেছে আমি গিয়েছি। তার খেলায় আমি সব সময়ই ইন্টারেস্টিং কিছু দেখতে পেয়েছি।’ এ কারণেই শেষ বয়সের রদ্রিগেজকে দলের গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার হিসেবে যোগ করেন কোচ লরেনজো। তার কাছ থেকে সেরাটাই বের করে আনেন লরেনজো। কোপা আমেরিকার এক আসরে ৬টি গোলে অ্যাসিস্ট করে রেকর্ড গড়েন রদ্রিগেজ। এর আগে রেকর্ডটা ছিল লিওনেল মেসির (৫টি)। হামেস রদ্রিগেজের পুনরুত্থান হয়েছে। তবে তা একেবারেই ক্যারিয়ারের শেষ প্রান্তে এসে। এ পুনরুত্থানের পর কি তিনি পুনরায় ফিরে পাবেন অতীতের সেই স্থান!

সর্বশেষ খবর