বুধবার, ২৪ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

মৌসুম শুরুর আগে আলোচনায় রেফারি

ক্রীড়া প্রতিবেদক

মৌসুম শুরুর আগে আলোচনায় রেফারি

সম্ভবত সেপ্টেম্বরে ঘরোয়া ফুটবলের পর্দা উঠবে। অথচ তার আগেই পেশাদার লিগে বিতর্কিত রেফারিং নিয়েই আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। আর হবেই না কেন, অঢেল অর্থ খরচ করে দল গড়বে আর ভুল বা পক্ষপাতিত্ব রেফারিংয়ে সর্বনাশ হয়ে যাবে তা তো মানার মতো না। ফুটবলে জয়-পরাজয় থাকবে কিন্তু এর পেছনে রেফারিদের হাত থাকলে এর চেয়ে বড় ট্র্যাজেডি আর কি হতে পারে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েক কর্মকর্তা বলেছেন, ঘরোয়া আসর শুরুর আগেই লিগ কমিটিকে নিশ্চয়তা দিতে হবে অযথা কেউ বাজে রেফারিংয়ের শিকার হবে না। তা কীভাবে দেবে কেননা লিগ কমিটি যতই সতর্ক থাকুক, কোনো রেফারি যে কোনো কারণে পক্ষপাতিত্বের পথ বেছে নিলে এক্ষেত্রে কী করার আছে?

এক সময় তারকা ফুটবলারের অভাব ছিল না। এমনকি ভালো ম্যাচ পরিচালনার জন্য রেফারিরাও তারকার খ্যাতি পেয়েছিলেন। ননী বসাক, জেড আলম, মুনির হোসেন, দলিল খান, মো. আজিজ, মহিউদ্দিন, আর আলম, রফিকুল ইসলাম এমনকি নব্বই দশকে মুনসুর আলিও রেফারিংয়ে খ্যাতি কুড়িয়েছিলেন। অথচ এরা থাকার পরও বিতর্কিত রেফারিং অভিযোগে মাঠে বড় ধরনের হট্টগোলও হয়। রেফারিকে আহত করে রক্তাক্ত ছাড়াও ফুটবলারদের জেল খাটতে হয়েছিল। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে বিদেশি রেফারি উড়িয়ে আনা হয়। মূলত মোহামেডান-আবাহনী ঘিরেই তো হট্টগোল হতো। তাই দুই দলের ম্যাচে বিদেশি রেফারির দেখা মিলত।

প্রশ্ন উঠেছে অতীতে বিদেশি রেফারি এলে এখন কেন সম্ভব না? দেশের প্রখ্যাত ফুটবলার আশরাফ উদ্দিন আহমেদ চুন্নু রেফারি ঘিরে হট্টগোল বাধায় জেলও খেটেছেন। অথচ তিনি বললেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমি বিদেশি রেফারি আনার পক্ষে নয়। দেশের বাইরে ম্যাচ পরিচালনা করে রেফারিরা সুনাম কুড়ালেও ঘরোয়া ফুটবলে কেন পারছেন না? এ জন্য আমি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে দায়ী করব। আমিও স্বীকার করি পেশাদার লিগে অনেক বিতর্ক উঠছে। আমার প্রশ্ন বাফুফে তা কি কখনো খতিয়ে দেখেছে? এখানে তো বাধ্য হয়েই তাদের নীরব থাকতে হচ্ছে। কেননা আসামি তো তারাই। পত্রিকায় দেখেছি রেফারিদের লাখ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। বার বার চেয়েও রেফারিরা তাদের ন্যায্য পারিশ্রমিক পাচ্ছেন না। আপনি যখন আপনার প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হবেন তখন স্বাভাবিকভাবে মানসিক যন্ত্রণায় থাকবেন। ঘরোয়া আসরে রেফারিরা আর কত টাকা পান! অথচ এই সামান্য অর্থ বছরের পর বছর বাফুফে বাকি রাখছে।’ চুন্নু বলেন, ‘লাখ লাখ টাকা খরচ করে পাঁচতারা হোটেলে বার্ষিক সাধারণ সভা করা যায়। আর রেফারিদের সামান্য টাকা মেলে না। এমন মন-মানসিকতা নিয়ে রেফারি একেবারে নির্ভুল বাঁশি বাজাবেন তার কাছে আশা করেন কীভাবে? আমি মনে করি রেফারিং ঘিরে যে বিতর্ক উঠছে তার দায় পুরোপুরি বাফুফের। ওরা যে অবস্থা মাঠে বাঁশি বাজাতে রাজি হচ্ছেন এটাই তো যথেষ্ট মনে করি। এখানে অযথা বিদেশি রেফারি আনার চিৎকার দিয়ে লাভ হবে না।’

সাবেক তারকা ফুটবলার ও কোচ শফিকুল ইসলাম মানিক বলেন, ‘বাফুফের কর্মকর্তারা নিজেরা যখন বার বার লিগের বাইলজ ভাঙছেন এরপর তো আর চেইন অব কমান্ড থাকে না। আমরা রেফারিদের দোষ দিচ্ছি। কখনো কি খতিয়ে দেখেছি এর পেছনে দায়ী কারা। আমি নিজেও তো ফুটবলার ছিলাম। কখনো শুনেনি রেফারিরা টাকা পাচ্ছেন না। ম্যাচ শেষ হওয়ার পরই নগদ পারিশ্রমিক পেয়ে যেতেন। তবে বিতর্ক যখন উঠছে বড় ম্যাচ গুলোয় বিদেশি রেফারি আনলে ক্ষতিতো নেই। শুনেছি লিগ কমিটি চাইলেও বাফুফে বাধার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। তাহলে আর অযথা রেফারি নিয়ে আলোচনা করে লাভ কি?’

 

সর্বশেষ খবর