শুক্রবার, ১৬ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

হকিতে ছিল ত্রাসের রাজত্ব

হতে পারে সম্রাট তার গুরু। কিন্তু এমন বিতর্কিত লোককে চেয়ারে বসিয়ে হকিকে বিতর্কিত করার অধিকার তার কি আছে?

ক্রীড়া প্রতিবেদক

হকিতে ছিল ত্রাসের রাজত্ব

সম্রাটকে সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসিয়ে পাশে বসে আছেন সাঈদ

ক্রীড়াঙ্গনে মমিনুল হক সাঈদের পেশিশক্তি বা অবৈধ কার্যকলাপ কার না জানা। তবু তিনি নির্বাচনের মাধ্যমে সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। যেখানে ভয়ভীতি ও অর্থের ছড়াছড়ি ছিল। তাকে কি নির্বাচন বলা যায়? অবশ্য বেশি দিন টিকতেও পারেননি। ক্যাসিনোকাণ্ডে আসামি হয়ে তিনি দেশ ছাড়া হন। সাঈদের এমন কর্মকাণ্ডে যোগ্য ও অভিজ্ঞ সংগঠকরা হকি থেকে দূরে সরে গেছেন।

সেই বিতর্কিত সাঈদই টানা দ্বিতীয়বার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। আর তা পুরোপুরি পেশিশক্তির জোরে। এমন কোনো অনিয়ম ছিল না যা সাঈদ করেননি। ঢাকার ৩২টি ক্লাবেরই কাউন্সিলর হয়েছে তার ইচ্ছায়। আর কম্বাইন্ড, হকি ঢাকা ইউনাইটেড, বাংলাদেশ স্পোর্টিং ও মুক্ত বিহঙ্গের কাউন্সিলরশিপ তো রীতিমতো হাইজ্যাক হয়েছে। দুটো ক্লাবেরই কর্ণধার হকির সাবেক তারকা খেলোয়াড় ও ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজেদ এ আদেল। তার দেওয়া বৈধ কাউন্সিলরের চিঠি ছিঁড়ে ফেলে সাঈদ তার চাটুকারদের কাউন্সিলর করেন। এমন অন্যায় দেখেও ক্রীড়া পরিষদ ও নির্বাচন কমিশন নীরব ছিল এবং সাঈদের সব অবৈধ কাজে সহযোগিতা করেছে।

সরকারের পটপরিবর্তনের পর তিনি আবারও পলাতক। তবে দেশের হকির বারোটা বাজিয়ে গেছেন। হকি ফেডারেশনের ইতিহাসে যা ঘটেনি, তাই করেছেন সাঈদ। ক্যাসিনোকাণ্ডের নায়ক ছিলেন ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট। গ্রেপ্তারের পর ঢাকা মহানগর যুবলীগের সভাপতি পদ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। এই নিষিদ্ধ ব্যক্তিকে শুধু হকি ফেডারেশনে আনেননি, সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসিয়ে তোষামোদ করার ছবি সাঈদ নিজেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন। শুধু তাই নয়, হকি দলের যে ইউরোপ সফরে যাওয়ার কথা ছিল, সেখানে ম্যানেজার করা হয় সম্রাটকে। যদিও শেষ পর্যন্ত সেই সফর বাতিল হয়েছে। সাঈদ যেভাবে নির্বাচিত হোক না কেন একটি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারের মর্যাদা অনেক। হতে পারে সম্রাট তার গুরু। কিন্তু এমন বিতর্কিত লোককে চেয়ারে বসিয়ে হকিকে বিতর্কিত করার অধিকার তার কি আছে?

হকিকে সাঈদ নিজের সম্পত্তি মনে করে ত্রাসের রাজত্ব গড়ে তুলেছিলেন। এই সাঈদ হঠাৎ করে আবার যে এসে সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসবেন না তার কি কোনো নিশ্চয়তা আছে। অন্তর্বর্তী সরকার তো সবই পরিবর্তন করছে। সেক্ষেত্রে হকিও নজরে আনা জরুরি। নতুনভাবে নির্বাচন দিয়ে যোগ্য লোকদের মাধ্যমে ফেডারেশন পরিচালিত হলেই হকি বাঁচবে। এক্ষেত্রে শুধু সভাপতি নয়, পুরো কমিটিই বিলুপ্ত করতে হবে। কমিটি বদল করলেই চলবে না, যারা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

সর্বশেষ খবর