ছাত্র আন্দোলনে উত্তাল পাকিস্তান। রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে আন্দোলনের প্রভাব যেন না পড়ে, সেজন্য পিসিবি সর্বোচ্চ নিরাপত্তাব্যবস্থা রেখেছে। যদিও দর্শক খেলা দেখবে। তার পরও টেস্টে চোখ রাঙাচ্ছে বৃষ্টি। পাকিস্তান আবহাওয়া অফিস জানাচ্ছে, আজ থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত বৃষ্টি হবে। টানা ছয় দিন বৃষ্টি হবে। মাঝে মাঝে হয়তো খেলা বন্ধ হবে। কিন্তু ভেসে যাবে না। বৃষ্টির কথা মাথায় রেখেই হয়তো ঘাসের উইকেট বানিয়েছে পাকিস্তান। সেজন্য লেগ স্পিনার আবরারকে বাদ দিয়ে চার পেসার দিয়ে একাদশ সাজিয়েছে বাবর বাহিনী। প্রস্তুত বাংলাদেশও। প্রস্তুত চার পেসার সৈয়দ খালেদ, নাহিদ রানা, হাসান মাহমুদ ও শরীফুল ইসলাম। তাসকিন স্কোয়াডে থাকলেও প্রথম টেস্ট না-ও খেলতে পারেন। দলে ফিরেছেন দুই সিনিয়র ও সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম। গ্রোয়িন ইনজুরিতে প্রথম টেস্ট মিস করছেন ওপেনার মাহামুদুল হাসান জয়।
২০০১ সাল থেকে বাংলাদেশ নিয়মিত পাকিস্তান সফর করছে। যদিও টেস্ট খেলেছে সাকল্যে পাঁচটি। ২৩ বছর আগে দুই দল যখন প্রথমবার মুখোমুখি হয়, সেটা ছিল এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচ। পরের চারটি ছিল বাইলেটারাল সিরিজ। যার একটি আবার বেদনাদায়ক। ২০০৩ সালে মুলতানে লড়াই করতে করতে ইনজামাম উল হকের অতিমানবীয় ব্যাটিংয়ে হেরে যায়। দুই দল পাকিস্তানে সর্বশেষ টেস্ট খেলছে ২০২০ সালে, করোনার আগে। হেরে যায় ইনিংস ও ৪৪ রানে। তাই নাজমুল শান্তদের কাছে একেবারে অপরিচিত নয় পাকিস্তানের পিস। এবার খেলবে দুটি টেস্ট। দুটিই রাওয়ালপিন্ডিতে। এ টেস্ট নিয়ে আশাবাদী টাইগার অধিনায়ক নাজমুল শান্ত, ‘আমরা জানি পাকিস্তান শক্তিশালী দল। তারা নিজেদের পরিচিত উইকেটে খেলবে। তাদের বেশ কিছু বিশ্বমানের ক্রিকেটার রয়েছেন। আমরাও প্রস্তুত সেরাটা খেলতে।’ দুই দল ১৩ টেস্ট খেলেছে পরস্পরের বিপক্ষে। ২০১৩ সালে খুলনায় তামিম ইকবাল-ইমরুল কায়েশ উদ্বোধনী জুটিতে ড্র করে। বাকি ১২ টেস্টে পাকিস্তান জিতেছে।
রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথম টেস্ট হয় ১৯৯৩ সালে। সর্বশেষ টেস্ট হয়েছে ২০২২ সালে। পাকিস্তান-ইংল্যান্ড টেস্টটিতে পাকিস্তান হেরেছে। দুই বছর পর ফের টেস্ট খেলা হবে। নাজমুল বাহিনীকে ধসিয়ে দিতে উইকেটে ঘাস রেখেছে; যা রাওয়ালপিন্ডির অতীত ইতিহাসের সঙ্গে মানানসই নয়। এ উইকেটে পেসাররা সাফল্য পেলেও ব্যাটাররা আরও বেশি সফল। সর্বশেষ ইংল্যান্ড-পাকিস্তান টেস্টে সেঞ্চুরি হয়েছে ৭টি।এ মাঠে সর্বশেষ যে পাঁচ টেস্ট হয়েছে তাতে পেসারদের আধিপত্য প্রশ্নাতীত। সর্বশেষ পাঁচ টেস্টে পেসারদের উইকেট সংখ্যা ৭৭। উইকেটপ্রতি খরচ করেছেন ৩৫ রান। স্পিনাররা ছিলেন নিষ্প্রভ। পাঁচ টেস্টে তারা উইকেট নিয়েছেন ৪৬টি। ১টি উইকেট নিতে রান খরচ করেছেন ৫৫.৬৭ করে। স্পিনারদের চেয়ে পেসাররা যে রাওয়ালপিন্ডিতে বেশি সুবিধা পান, সেটা এ পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট।
পরিসংখ্যান বলছে, লড়াই হবে পেসারদের। কঠিন লড়াই করতে হবে নাজমুল শান্ত, জাকির, মুশফিক, সাকিব, মেহেদী মিরাজ, লিটনদের। টাইগার অধিনায়ক বিশ্বাস করেন-সাকিবই নন, সবাই রান করবেন, ‘সাকিব ভাই রান করবেন আমি বিশ্বাস করি। উনি এখন অনেক ফিট। শুধু সাকিব ভাই নন, আমার বিশ্বাস সবাই রান করবেন। সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে।’ আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দুটি টেস্ট জিততে মরিয়া দুই দল। লড়াই হবে সমানে সমান। লড়াই করতে পেসারদের পাশাপাশি দায়িত্ব নিতে হবে দুই সিনিয়র সাকিব ও মুশফিক এবং লিটন, নাজমুলকে।