বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০০ টা
অক্টোবরে নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ

এবারও কি উৎসবে মাতাবেন সাবিনারা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

এবারও কি উৎসবে মাতাবেন সাবিনারা

ক্রীড়াঙ্গনে বাংলাদেশের যে কটি সাফল্য এসেছে তার অন্যতম নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। আইসিসি ট্রফি জিতে যে উৎসব হয়েছিল তার চেয়ে কোনো অংশে কম ছিল না মেয়েদের ঘিরে উৎসাহ-উদ্দীপনা। দোতলা খোলা বাসে সাবিনা, আঁখিদের উৎসব চোখে ভাসে। নেপালের মাটিতে নেপালকে বিধ্বস্ত করেই প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইতিহাস গড়ে বাংলাদেশ নারী জাতীয় দল। এমন সময় সাবিনা খাতুনরা চ্যাম্পিয়ন হন যখন পুরুষ জাতীয় দলের ভরাডুবিতে সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছিল।

২০২২ সালে সাবিনা, সানজিদা, মারিয়া, ঋতুপর্ণা, স্বপ্নারা যে নৈপুণ্য প্রদর্শন করেন তা ছিল অবিশ্বাস্য। ড্র ছাড়াই অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়। মেয়েদের এ সাফল্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে। প্রশ্ন হচ্ছে-সাবিনারা কি এক শিরোপাতেই থেমে থাকবেন, নাকি সাফল্যের ধারাবহিকতা ধরে রাখবেন? আরেকটি সাফ একেবারে দুয়ারে। ১৭ অক্টোবর নেপালের মাটিতেই পর্দা উঠবে নারী জাতীয় দলের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের। গ্রুপিং এবং ফিকশ্চারও নির্ধারণ হয়ে গেছে। সাত দেশের টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ খেলবে ‘এ’ গ্রুপে। যেখানে প্রতিপক্ষ হয়ে মাঠে নামবে ভারত ও পাকিস্তান। ‘বি’ গ্রুপে নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও ভুটান।

বাংলাদেশের ফুটবলে যে মান তাতে পুরুষ বা মহিলা দল যেটাই হোক, সাফ চ্যাম্পিয়নশিপকে মর্যাদাকর আসরই বলতে হয়। কারণ এর চেয়ে বড় কোনো খেলার সামর্থ্য নেই। সাফকে আবার দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্বকাপ বলা হয়। আর নারী সাফে তো বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। ২০২২ সালে শিরোপা জেতার পর বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন বলেছিলেন, ‘এ সাফল্যতেই আমরা সন্তুষ্ট থাকতে চাই না। সাফের চেয়ে আরও বড় টুর্নামেন্টে চোখ থাকবে। সেভাবে নারী ফুটবলারদের প্রস্তুত করব। যা যা দরকার তা আমরা দেব। টুর্নামেন্টও বাড়বে।’ নারী দলের প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরণও অভিন্ন কথা বলেন। তাঁদের অন্য বড় টুর্নামেন্টের কথা বাদই দিলাম। আসছে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ কী করবে সেটাই বড় প্রশ্ন। শিরোপা ধরে রাখতে পারবে কি? ২০২২ সালের সেই বাঁধভাঙা উৎসব হারিয়ে যাবে না তো? বাংলাদেশের মেয়েদের সেমিতে খেলার সম্ভাবনা বেশি। কেননা ভারতের সঙ্গে জিতবে না হারবে, বলা মুশকিল। পাকিস্তানকে হারাবে তা তো আশা করা যায়। আর সেমিতে না উঠতে পারলে তা হবে ট্র্যাজেডি। অন্য গ্রুপে স্বাগতিক নেপালের গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ভয়টা তো এখানেই। বাংলাদেশ গ্রুপ রানার্সআপ হলে সেমিতে খেলবে নেপালের বিপক্ষে। গত ফাইনালে হারলেও নেপাল নিঃসন্দেহে শক্তিশালী দল। তাই সেমিতেই সাবিনাদের বিদায়ঘণ্টা বাজে কি না সেটাই শঙ্কা। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হলে বাংলাদেশের ফাইনালের পথ অনেকটা সহজ হয়ে উঠবে। মালদ্বীপ, ভুটান বা শ্রীলঙ্কা যে গ্রুপ রানার্সআপ হোক না কেন, বাংলাদেশেরই জেতার সম্ভাবনা বেশি। আবার নেপাল যদি গ্রুপ রানার্সআপ হয় তাহলে তো মুশকিল।

যাক, কী হবে তা বলা যায় না। কথা হচ্ছে, যেখানে সাফ চ্যাম্পিয়ন গড়াতে এক মাসের মতো সময় আছে, সেখানে বাফুফের তো কোনো কর্মকাণ্ডই চোখে পড়ছে না। মিডিয়া ম্যানেজার সাদমান বলেছেন, ‘কোচ পিটার জেমস বাটলারের তত্ত্বাবধানে বসুন্ধরা কিংস অ্যারিনায় প্রতিদিনই অনুশীলন চলছে। তা আরও জোরালো হবে টুর্নামেন্টের দুই সপ্তাহ আগে থেকে।’ প্রশ্ন হচ্ছে-সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের মতো গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টে প্রস্তুতির জন্য ১৫ দিনের অনুশীলন কি যথেষ্ট? বাফুফে স্বীকার করুক আর না-ই করুক, নানা কারণে সাবিনাদের মধ্যে আগের সেই উন্মাদনা নেই। ২০২২ সালে চ্যাম্পিয়নের পরও অনেক কিছু থেকে তারা বঞ্চিত হয়েছেন। দুই বছর পর যে লিগ হয়েছে তাকে প্রহসন বললেও ভুল হবে না। ২০ অক্টোবর পাকিস্তান ও ২৩ অক্টোবর ভারতের বিপক্ষে লড়বেন সাবিনারা। সাফ যেখানে হাতের নাগালেই, সেখানে বাফুফের তৎপরতা নেই বললেই চলে। সালাউদ্দিন-কিরণরা নাকি নির্বাচনি ছক আঁকতেই ব্যস্ত!

 

সর্বশেষ খবর