বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০০ টা

ফুটবলে সুখবর দিল বসুন্ধরা কিংস

আশা করি ফুটবলার তৈরির পাইপলাইন এখান থেকেই শুরু হবে। আমাদের চিন্তা ব্যাপক। সামনে বিশ্বের বিখ্যাত ক্লাবগুলোর কোচিং স্টাফদের আনারও পরিকল্পনা রয়েছে

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ফুটবলে সুখবর দিল বসুন্ধরা কিংস

ইমরুল হাসান

২০০৭ সালে পেশাদার ফুটবলে যাত্রা হলেও প্রকৃত পেশাদারি বলতে যা বোঝায় তা কোনো ক্লাবেরই ছিল না। বসুন্ধরা কিংসই দেশের প্রথম ও একমাত্র ক্লাব পেশাদারির সব শর্ত পূরণ করেই খেলছে। ২০১৭-১৮ মৌসুমে অভিষেক হলেও অল্প দিনের মধ্যে বসুন্ধরার নামটি ফুটবলপ্রেমীদের হৃদয়ে গাঁথা হয়ে গেছে। স্থানীয় মানসম্পন্ন খেলোয়াড় ছাড়াও বসুন্ধরা প্রতি মৌসুমেই উড়িয়ে আনছে দক্ষ বিদেশি ফুটবলারদের। স্বাভাবিকভাবে বসুন্ধরা আলাদাভাবে নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছে। আগমনের অল্প দিনের মধ্যে ৭৬ বছরে ঘরোয়া ফুটবল ইতিহাসে সব রেকর্ড বসুন্ধরা কিংসের দখলে।

টানা পাঁচ বার লিগ জয়। ফেডারেশন কাপে তিন, স্বাধীনতা কাপ তিন বার শিরোপা জিতেছে কিংস। শুধু কি তাই, নারী লিগেও অংশ নিয়ে অপরাজিত (সব জয়) হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন হয়। ছয় বছরে পুরুষ ও মহিলা মিলিয়ে ১৪ শিরোপা। যা বাংলাদেশের অন্য ক্লাবের স্বপ্নই। বসুন্ধরা কিংস শুধু দলীয় সাফল্য নয়। বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের নির্দেশেই ফুটবল উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। ঘরোয়া আসরে অধিকাংশ খেলাগুলোতে পৃষ্ঠপোষক বসুন্ধরা গ্রুপই। ফুটবল সংকটে বরাবরই পাশে রয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ। প্রয়োজনের সময় জাতীয় দলের ম্যাচ বসুন্ধরা কিংস অ্যারিনাতেই হচ্ছে। অনুশীলনেও উপযোগী স্থান এখন কিংস অ্যারিনা। ফুটবল ও বসুন্ধরা নামটি যেন একই সূত্রে গাঁথা।

ফুটবলপ্রেমীদের দীর্ঘদিনের আক্ষেপ দেশে নতুন ফুটবলারের দেখা মিলছে না। এমন অবস্থা চলতে থাকলে তো সামনে জাতীয় দলে ১১ জন খেলোয়াড়ই খুঁজে পাওয়া যাবে না। ফেডারেশন সব দেখেও নীরব। কোনো ক্লাবের মাথা ব্যথা নেই। অথচ ক্রিকেটে পাইপ লাইন থেকে বেশ কজন খেলোয়াড় বের হয়েছে। যারা জাতীয় দলেও জ্বলে উঠছেন। যাক শেষ পর্যন্ত ফুটবলে বড় সুখবর দিল বসুন্ধরা কিংসই। তারা দেশে নতুন খেলোয়াড় তৈরির মেগা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

ফুটবলে একাডেমির কথা তো কম শোনা যায়নি। কিন্তু বসুন্ধরা কিংসের খেলোয়াড় তৈরির পরিকল্পনাটা একেবারে ব্যতিক্রম। আজকের ফুটবল আগামীর ক্যারিয়ার এই স্লোগানকে সামনে রেখেই ৪ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে বসুন্ধরা কিংসের ফুটবল তৈরির কাজ। যাকে পাঠশালা বলা যেতে পারে। ৬-১১ ছেলেমেয়ে এবং ১১-১৫ ও ১৫-১৮ বয়সের ছেলেরা ট্রেনিংয়ে অংশ নিতে পারবে।

বসুন্ধরা কিংসের ওপর আস্থা রেখে ছেলেমেয়েরা ফুটবল শিখতে নাম লেখাচ্ছে। সপ্তাহে তিন দিন অনুশীলন চলবে কিংস অ্যারিনার বিভিন্ন প্রশিক্ষণ মাঠে। জার্সি, বুট অন্যান্য সরঞ্জমাদি সরবরাহ করা হবে কিংস থেকে। বসুন্ধরা কিংসের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর আবু যোবায়ের নিপুর তত্ত্বাবধানে এ ট্রেনিং চলবে। বসুন্ধরা কিংসের কোচিং স্টাফরা এখানে শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করবেন। রোমানিয়ান কোচ তিতাও সঙ্গে থাকবেন। তারপর আবার জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে অনুশীলন করার সুযোগ। এ যেন খুদে ফুটবলারদের স্বপ্নই বলা যায়। এ ক্যাম্পই হয়ে উঠবে দেশের ফুটবলে সেরা পাঠশালা।

বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসান বলেন, ‘ফুটবল উন্নয়নে আমরা আগে থেকেই কাজ করছি। সত্যি বলতে ভবিষ্যৎ ফুটবলার তৈরির কোনো কর্মসূচি ছিল না। বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের নির্দেশে বসুন্ধরা কিংস এমন উদ্যোগ নিয়েছে। আশা করি ফুটবলার তৈরির পাইপলাইন এখান থেকেই শুরু হবে। আমাদের চিন্তা ব্যাপক। সামনে বিশ্বের বিখ্যাত ক্লাবগুলোর কোচিং স্টাফদের আনারও পরিকল্পনা রয়েছে।’

সর্বশেষ খবর