বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০০ টা

শতবর্ষী খেলার মাঠ রক্ষায় জন আন্দোলন

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

শতবর্ষী খেলার মাঠ রক্ষায় জন আন্দোলন

প্রায় ১৩৫ বছর ধরে খুলনার খালিশপুরে খেলাধুলার মাঠ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী মুজগুন্নী খেলার মাঠ। এটি মেলার মাঠ নামেও পরিচিত। আশপাশের এলাকার কয়েক লাখ মানুষের শারীরিক ও মানসিক বিনোদনের একমাত্র মিলন ক্ষেত্র হিসেবে মাঠটি টিকে আছে। স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে ২০২২ সালের ৮ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে মাঠের ১.৭৮ একর জমি কেডিএর অধিগ্রহণ থেকে অবমুক্ত করে জনস্বার্থে বরাদ্দ প্রদানে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর আগে ২০১৯ সালে ৪ নভেম্বর গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় একইভাবে মাঠটি জনস্বার্থে স্থায়ী বরাদ্দের জন্য নির্দেশনা দেয়। কিন্তু কেডিএ এসব নির্দেশনা উপেক্ষা করেই প্রাচীন মাঠটি অগ্রণী ব্যাংক পিএলসির অনুকূলে বরাদ্দ দিয়েছে। ২৩ সেপ্টেম্বর ব্যাংকের পক্ষ থেকে জমি মাপামাপি করে সেখানে সাইনবোর্ড টানাতে গেলে বাধা দেয় স্থানীয়রা। বিষয়টি নিয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির আশঙ্কা রয়েছে।

মুজগুন্নী ইউনাইটেড ক্লাব সভাপতি কাজী আসাদুজ্জামান মিল্টন জানান, ১৮৮৯-৯০ সাল থেকে এটি সর্বসাধারণের খেলাধুলা, ঈদের জামাত ও ঈদ মেলাসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উন্মুক্ত মাঠ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। কেডিএ ১৯৬৮-৬৯ সালে মুজগুন্নী আবাসিক এলাকা তৈরির জন্য মাঠসহ আশপাশের জমি অধিগ্রহণ করে। এতে এলাকার মানুষ ক্ষুব্ধ হলে কেডিএ ১৯৭০ সালে সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে মাঠটি জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত ঘোষণা করে। কিন্তু ২০১২ সালে অগ্রণী ব্যাংক জমিটি কেডিএর নিকট থেকে বরাদ্দ নিয়েছে দাবি করে সেখানে সীমানা প্রাচীর তৈরির চেষ্টা করে।

এতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে ওই বছরের ২৮ নভেম্বর খুলনা সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন ইউনাইটেড ক্লাব সভাপতি আসাদুজ্জামান মিল্টন। বর্তমানে মামলা উচ্চ আদালতে চলমান রয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, আশপাশে আর কোনো মাঠ নেই, এমনকি অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাৎসরিক ক্রীড়া অনুষ্ঠান এখানে হয়। মাঠটি রক্ষায় পরিবেশবাদী, শিক্ষার্থী, ক্রীড়ামোদি ও এলাকার মানুষ আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে নামছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতি (বেলা) খুলনার সমন্বয়কারী মাহফুজুর রহমান মুকুল জানান, ‘আইনে বলা হয়েছে, খেলার মাঠ, উন্মুক্ত স্থান, উদ্যান হিসেবে চিহ্নিত জায়গার শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না। অপরিকল্পিত নগরায়ণের নামে মূলত মাঠটি বরাদ্দ দিয়ে কেডিএ লাভবান হতে চাইছে।’

কেডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী মো. সাবিরুল আলম জানান, তিনি বিষয়টি জানেন। তবে এটি অ্যাস্টেট শাখার অধীনে। কেডিএ পরিচালক (অ্যাস্টেট) জাকিয়া সুলতানা জানান, বরাদ্দের বিষয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর