রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০০ টা

হকি ফেডারেশনে ৪১ জনের শাস্তিই অবৈধ

এ তো গেল আন্তর্জাতিক প্রসঙ্গ। যেখানে ফেডারেশনই ফাঁকা, সেখানে ঘরোয়া হকির কী হবে? প্রথম বিভাগ এখনো ঝুলে আছে। ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ ও সামনে প্রিমিয়ার লিগের ব্যাপারও রয়েছে।

ক্রীড়া প্রতিবেদক

হকি ফেডারেশনে ৪১ জনের শাস্তিই অবৈধ

হকির নির্বাচিত কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়নি। তার পরও ফেডারেশনের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। কালো মেঘে ঢাকা পড়ে গেছে দেশের হকি। সামনে আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া হকির বেশ কিছু কর্মসূচি রয়েছে। এগুলো কীভাবে হবে এ নিয়ে চিন্তায় হকিপ্রেমীরা। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মুমিনুল হক সাঈদের হদিস মিলছে না। তাঁর বিরুদ্ধে আবার মামলাও হয়েছে। সুতরাং সাধারণ সম্পাদকের দেখা মেলার সম্ভাবনা ক্ষীণই বলা যায়। অবশ্য এর আগেও সাধারণ সম্পাদক থাকা অবস্থায় তিনি গা ঢাকা দিয়েছিলেন। মতিঝিল ক্লাবপাড়ায় যে নিষিদ্ধ ক্যাসিনোকাণ্ড পরিচালিত হয়েছিল তার অন্যতম হোতা সাঈদ। অনেকে সে সময় গ্রেপ্তার হলেও তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে ছিলেন।

ওই সময় হকি ফেডারেশন গঠনতন্ত্র মেনেই সাঈদকে সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে নিষিদ্ধ করে। তাঁর জায়গায় ১ নম্বর যুগ্মসম্পাদককে দায়িত্ব দেওয়া হয়। বিধি মেনেই কাজগুলো করা হয়। অথচ প্রায় আড়াই বছর পর সাঈদ হঠাৎ ফেডারেশনের এক নির্বাহী কমিটির সভায় যোগ দেন; যা ছিল পুরোপুরি অবৈধ। শুধু সভায় যোগই দেননি, পরে তাঁকে সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারেও বসানো হয়। এত বড় অনিয়মের পরও কেউ টুঁশব্দ করেননি প্রাণের ভয়ে। কারণ সাঈদ আবার সবকিছু নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেটোয়া বাহিনী ব্যবহার করতেন। গতবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পুরো কমিটি নির্বাচিত হলেও তা ছিল অবৈধ। ভুয়া কাউন্সিলর সবকিছু সাঈদের জোরে করা হয়। তার পরও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ অবৈধ কমিটিকে বিজয়ী ঘোষণা করতে পিছু হটেনি। হকিতে তিন-চার বছর ধরে যে নোংরামি চলে, তা ছিল সাঈদের নেতৃত্বেই। দ্বিতীয়বার সাধারণ সম্পাদক হয়েও সাঈদ পলাতক। শুধু তিনি একা নন, তাঁর কমিটির কেউ ফেডারেশনে পা রাখেন না। এঁরা আত্মগোপন করে থাকলে তো হকি আর থেমে থাকতে পারে না। হকি ফেডারেশনের সভাপতি এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খানের নির্দেশেই হকির গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো পরিচালিত হচ্ছে। নভেম্বরে ওমানে বসবে পুরুষ ও মহিলা এশিয়া কাপের আসর। পুরুষ দল সেরা ৫-এ থাকলেই প্রথমবারের মতো যুব বিশ্বকাপে খেলবে। এ সুযোগ কি হাতছাড়া করা যায়? গতকাল প্রস্তুতি আরও জোরদার করা হয়েছে। বাছাই করে খেলোয়াড়দের মধ্যে জার্সি বিতরণ করা হয়েছে।

এ তো গেল আন্তর্জাতিক প্রসঙ্গ। যেখানে ফেডারেশনই ফাঁকা, সেখানে ঘরোয়া হকির কী হবে? প্রথম বিভাগ এখনো ঝুলে আছে। ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ ও সামনে প্রিমিয়ার লিগের ব্যাপারও রয়েছে। শোনা যাচ্ছে তিন-চার দিনের মধ্যে বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত করে হকিতে অ্যাডহক কমিটি হচ্ছে। নতুন কমিটিই তখন সব তদারক করবে। সবচেয়ে বড় কথা আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচ ঘিরে যে ৪১ জনকে ফেডারেশন শাস্তি দিয়েছিল তা অবৈধ বলে বিবেচিত হবে। কেননা এ পর্যন্ত এদের কাউকে শোকজই পাঠানো হয়নি। এর মধ্যে আবার চারজনকে আজীবন নিষিদ্ধ করা হয়!

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আসলে এসব শাস্তিতে ফেডারেশনের কারো সমর্থন ছিল না। সাঈদ প্রভাব খাটিয়ে নিজের খুশি মতো তা করেন।’

অ্যাডহক কমিটি দায়িত্ব নেওয়ার পরই সবার শাস্তি অবৈধ ঘোষণা করা হবে।

সর্বশেষ খবর