সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০০ টা

অ্যাথলেটিকস সাঁতারে দৈন্যদশা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

অ্যাথলেটিকস সাঁতারে দৈন্যদশা

বিশ্বে অন্যতম জনপ্রিয় খেলা অ্যাথলেটিকস ও সাঁতার। বাংলাদেশেও দুই খেলার জনপ্রিয়তার কমতি ছিল না। এখন তো বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম, আর্মি স্টেডিয়াম ও বিকেএসপিতে অ্যাথলেটিকসের ট্র্যাক রয়েছে। এক সময়ে তৎকালীন ঢাকা স্টেডিয়ামে ঘাসে চুনের দাগ দিয়ে অ্যাথলেটরা দৌড়াতেন। আর সাঁতারে সুইমিংপুল ছিল ক্রীড়া পরিষদের পাশে। আধুনিক না হলেও ঘাসের মাঠ আর সেই সময়ের সুইমিংপুল থেকে দেশের অনেক নন্দিত অ্যাথলেট ও সাঁতারু বের হয়েছেন। যাদের ক্রীড়ামোদিরা এক নামেই চিনতেন। জাতীয় প্রতিযোগিতায় অনেক রেকর্ডও তৈরি হতো। এখন তো দুই খেলার তেমনভাবে খবর রাখেন না কেউ। অথচ ’৭০, ’৮০ বা ’৯০-এর দশকে অ্যাথলেটিকস ও সাঁতার প্রতিযোগিতায় উল্লেখ করার মতো দর্শকের সমাগম ঘটত।

১৯৮৪ সালে নেপালে সাউথ এশিয়ান অর্থাৎ সাফ গেমসের যাত্রা। দক্ষিণ এশিয়ার এ গেমসে শুরুতে অ্যাথলেট ও সুইমারদের পারফরম্যান্স ছিল চোখে পড়ার মতো। অনেকের কাছে হয়তো অবিশ্বাস্য মনে হবে। তার পরও সত্যি যে, সাফ গেমসে অ্যাথলেটিকসে বাংলাদেশ তিনবার দক্ষিণ এশিয়ার দ্রুততম মানব হওয়ার খেতাব পায়। ১৯৮৫ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল দ্বিতীয় সাফ গেমস। আকর্ষণীয় ইভেন্ট ১০০ মিটার দৌড়ে সোনা জিতে দ্রুততম মানব হন শাহ আলম। এমনকি ১৯৮৭ সালে ভারতের কলকাতা সল্টলেকেও টানা দ্বিতীয়বার দ্রুততম মানব হন তিনি। তার আগে সাফে এ বিরল রেকর্ড কেউ গড়তে পারেননি।

১৯৯৩ সালে ঢাকায় ফের সাফ গেমস অনুষ্ঠিত হলে আর্মি স্টেডিয়ামে ১০০ মিটার দৌড়ে সোনা জিতে দ্রুততম মানব হন বিমল তরফদার। ১৯৯৫ সালে তৎকালীন মাদ্রাজে ১০০ মিটারে সোনা না এলেও ২০০ মিটার দৌড়ে সোনা জিতেছিলেন মাহবুব আলম। সাফ গেমসেই বাংলাদেশের অ্যাথলেটরা যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছিলেন। পুরুষদের পাশাপাশি নারী অ্যাথলেটদের পারফরম্যান্সও ছিল চোখে পড়ার মতো। পাকিস্তান আমলেই নজর কেড়েছিলেন সুলতানা খুকু। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামালকে বিয়ে করার পর তিনি সুলতানা কামাল নামে পরিচিত ছিলেন। শামীমা আক্তার মিমু, ফিরোজা খাতুন, লাভলী বেগমরাও ট্র্যাক কাঁপিয়েছিলেন।

সাঁতারে ১৯৮৫ সাফ গেমসে পুল কাঁপিয়েছিলেন মোশাররফ হোসেন। একাই তিনি পাঁচ সোনা জিতে ইতিহাস গড়েছিলেন। সেই অ্যাথলেটিকস ও সাঁতারে এখন একি দৈন্যদশা। বড় গেমসের কথা বাদই দিলাম, সাফ গেমসে পদক জেতাটাও স্বপ্নে পরিণত হয়েছে। ব্যর্থতার বৃত্তে আটকে থেকে আড়ালে পড়ে গেছে দুই খেলা। উন্নয়নের বদলে দুই ফেডারেশনের কর্মকর্তারা নিজেদের ভাগ্য গড়তে ব্যস্ত। সত্যি বলতে, যোগ্যদের বদলে অযোগ্যরাই বড় চেয়ারে বসছেন বলে দিন দিন অ্যাথলেটিকস ও সাঁতার গুরুত্ব হারিয়ে ফেলছে। এভাবে হয়তো এক সময়ে জনপ্রিয় দুই খেলা হারিয়েও যেতে পারে।

সর্বশেষ খবর