আন্তর্জাতিক টি-২০ ক্রিকেটে নতুন এক অধ্যায় শুরু হলো বাংলাদেশের। সাকিব আল হাসান-পরবর্তী যুগ। এক সময় ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণে সাকিব ছিলেন বাংলাদেশের তুরুপের তাস। কখনো বল হাতে আবার কখনো ব্যাট হাতে পারফর্ম করে দলকে জয় উপহার দিয়েছেন। অলরাউন্ডার হিসেবে বিশ্বসেরা হয়ে উঠেছিলেন। সাকিব বিদায় নিয়েছেন। এবার বাংলাদেশে পঞ্চপাণ্ডবের মধ্যে টিকে আছেন কেবল মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। তিনিও শেষ বিকালে দাঁড়িয়ে দেখছেন ক্যারিয়ারের সূর্যাস্ত।
সাকিব আল হাসানের টি-২০ ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল ২০০৬ সালের ২৮ নভেম্বর। প্রথম ম্যাচে ব্যাট হাতে ২৮ বলে ২৬ রান করার পাশাপাশি বল হাতে ১টি উইকেট শিকার করেন। ভবিষ্যৎ বিশ্বসেরা তারকার টি-২০ অভিষেক ম্যাচে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়েকে হারিয়েছিল ৪৩ রানে। খুলনায় অনুষ্ঠিত সেই ম্যাচের সেরা হয়েছিলেন মাশরাফি। তিনি ২৬ বলে ৩৬ রান করার পাশাপাশি শিকার করেছিলেন ১টি উইকেট। ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণে বাংলাদেশ দলেরও অভিষেক ম্যাচ ছিল সেটা। এর পর টি-২০ ক্রিকেটে বাংলাদেশ গতকালের আগে ১৭৬টি ম্যাচ খেলেছে। এর মধ্যে ১২৯টা ম্যাচেই ছিলেন সাকিব আল হাসান। ব্যাট-বল হাতে দুরন্ত পারফর্ম করে দেশকে উপহার দিয়েছেন অনেক জয়। মাঝখানে কখনো ইনজুরিতে বা ছুটিতে থাকায় বেশকিছু ম্যাচ খেলতে পারেননি সাকিব। তবে সেসব ম্যাচেও সমর্থকরা নিশ্চিন্ত থাকতেন। হয়তো পরের ম্যাচেই দলে দেখা যাবে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে! গতকাল আর সেসব চিন্তা ছিল না। আর কখনোই সাকিবকে ক্রিকেটের এই ফরম্যাটে দেখা যাবে না। টেস্ট আর ওয়ানডেতে এখনো তাকে জাতীয় দলের জার্সিতে দেখার সুযোগ আছে।
গোয়ালিয়রে গতকাল তিন ম্যাচ টি-২০ সিরিজের প্রথমটিতে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। নাজমুল হোসেন শান্তরা প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ব্যর্থতার পরিচয় দেন। ভারতীয় বোলিং লাইনের সামনে তারা দাঁড়াতেই পারেননি। সর্বোচ্চ ৩৫ রান করে অপরাজিত থাকেন মেহেদী হাসান মিরাজ। বাকিদের মধ্যে সর্বোচ্চ ২৭ রান করেন অধিনায়ক শান্ত। টপ অর্ডার ব্যর্থতা ঘুচাতে পারেনি মিডল অর্ডারও। এক বল হাতে রেখে ১২৭ রানে অলআউট হয় টাইগাররা। ভারত এই রান মাত্র ১১.৫ ওভারেই টপকে যায় (১৩২/৩)। ৭ উইকেটের বড় পরাজয়ে সিরিজ শুরু করলেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। সাকিব-পরবর্তী যুগের সূচনাটা ভালো হলো না বাংলাদেশের। সামনের দিনগুলো কেমন হবে!
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ ইনিংস : ১২৭/১০, ১৯.৫ ওভার (নাজমুল ২৭, তাওহিদ হৃদয় ১২, মিরাজ ৩৫*, তাসকিন ১২, আর্শদ্বীপ সিং ৩/১৪, বরুন ৩/৩১)।
ভারত ইনিংস : ১৩২/৩, ১১.৫ ওভার (পান্ডিয়া ৩৯*, স্যামসন ২৯, সূর্যকুমার ২৯, মিরাজ ১/৭, মুস্তাফিজ ১/৩৬)।
ফল : ভারত ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা : আর্শদ্বীপ সিং।