২৮ জুলাই, ২০২২ ০৮:২৬

মইন-বেয়ারস্টোর তাণ্ডবে দাপুটে জয় ইংল‍্যান্ডের

অনলাইন ডেস্ক

মইন-বেয়ারস্টোর তাণ্ডবে দাপুটে জয় ইংল‍্যান্ডের

সংগৃহীত ছবি

মাত্র ৭ বলের এক ইনিংসে শুরুটা হলো জস বাটলারকে দিয়ে। এরপর জনি বেয়ারস্টোর চমৎকার ব‍্যাটিংয়ে দলকে টেনে নিলেন। ঝড়ো ফিফটিতে অবদান রাখলেন মইন আলিও। ইংল‍্যান্ড পেল রেকর্ড গড়া সংগ্রহ। ত্রিস্টান স্টাবসের খুনে ইনিংসে এক পর্যায়ে লড়াইয়ের সম্ভাবনা জাগালেও শেষ পর্যন্ত বড় ব‍্যবধানেই হারল দক্ষিণ আফ্রিকা। ব্রিস্টলে বুধবার (২৭ জুলাই) প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৪১ রানে জিতে তিন ম‍্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেছে ইংল‍্যান্ড। ২৩৪ রান তাড়ায় ১৯৩ রানে গুটিয়ে গেছে সফরকারীরা।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এটাই ইংল‍্যান্ডের সর্বোচ্চ রান। আগের সেরা ছিল ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ২৩০। রেকর্ড গড়া সংগ্রহ এনে দেওয়ায় সবচেয়ে বড় অবদান বেয়ারস্টোর। আট ছক্কা ও তিন চারে সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে তিনি থামেন ৯০ রানে। ১৬ বলে ফিফটি ছুঁয়ে মইন ফেরেন ৫২ রানে। গড়েন ইংল‍্যান্ডের হয়ে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড। গত বছর জুলাইয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৭ বলে ফিফটি করে আগের রেকর্ডটি গড়েছিলেন লিয়াম লিভিংস্টোন।

৩৯ রানে ৫ উইকেট নেন এনগিডি। টি-টোয়েন্টিতে পাঁচ উইকেট নেওয়ার পথে যা সবচেয়ে খরুচে বোলিং। গত সেপ্টেম্বরে রোমানিয়ার বিপক্ষে মাল্টার ওয়াসিম আব্বাসের ৩৭ রানে ৫ উইকেট ছিল আগের সবচেয়ে খরুচে। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ৫৭ রানের ইনিংস খেলেন ওপেনার রিজা হেনড্রিকস। মিডল অর্ডারে ২৮ বলে ৮ ছক্কা ও দুই চারে ৭২ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলেন স্টাবস।

ব্রিস্টল কাউন্টি গ্রাউন্ডে টস হেরে ব‍্যাট করতে নেমে বাটলারের ব‍্যাটে উড়ন্ত শুরু করে ইংল‍্যান্ড। অধিনায়ক বাটলার দুইটি করে ছক্কা ও চারে ৭ বলে ফেরেন ২২ রান করে। তার ঠিক উল্টো ঘরানার ব‍্যাটিংয়ে ১৫ বলে ৮ রান করেন জেসন রয়। দুই ওপেনারকেই বিদায় করেন এনগিডি। বাটলারের মতো শুরু থেকে বোলারদের উপর চড়াও হন দাভিদ মালান। তাকে সঙ্গ দিয়ে যান বেয়ারস্টো। দুই জনের ৭১ রানের জুটিতে ইংল‍্যান্ড পায় বড় সংগ্রহের ভিত। চার ছক্কা ও এক চারে ২৩ বলে ৪৩ রান করা মালান কট বিহাইন্ড হলে ক্রিজে আসেন মইন। ইংল‍্যান্ড পায় ম‍্যাচে তাদের সেরা জুটি।

বাঁহাতি অলরাউন্ডার মইনের তাণ্ডবের সামনে বেয়ারস্টোকে মনে হচ্ছিল মন্থর। তবে ৩৬ বলে পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর তিনিও রানের গতি আরও বাড়ানোর দিনে মনোযোগ দেন। সে সময় বল কোথায় ফেলবেন, যেন ভেবে পাচ্ছিলেন না বোলাররা।
ঝড়ের সবচেয়ে বড় অংশটা যায় আন্দিলে ফেলুকওয়ায়োর ওভার থেকে। তার এক ওভারে ৫ ছক্কায় ৩৩ রান নেন বেয়ারস্টো ও মইন। ১৮ বলে ছয় ছক্কা ও দুই চারে ৫২ রান করে মইনের বিদায়ে ভাঙে ৯৪ রানের জুটি। এনগিডির করা শেষ ওভারে কিপারের গ্লাভসে ধরা পড়েন লিভিংস্টোন। এক বল পর স্ট্রাইক পেয়ে ছক্কার চেষ্টায় সীমানায় ক‍্যাচ দিয়ে থামেন বেয়ারস্টো। 

জিততে হলে নিজেদের সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড গড়তে হতো দক্ষিণ আফ্রিকাকে। সেই পথে তাদের শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি। দ্বিতীয় ওভারে কুইন্টন ডি ককের সঙ্গে রাইলি রুশোকে বিদায় করেন রিস টপলি। দুই ব‍্যাটসম‍্যানের কেউ যেতে পারেননি দুই অঙ্কে। হাইনরিখ ক্লাসেনকে নিয়ে কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন হেনড্রিকস। তার ব‍্যাটে শুরুর ধাক্কা সামাল দিয়ে এগিয়ে যেতে থাকে দক্ষিণ আফ্রিকা। ক্লাসেনকে ফিরিয়ে ৬৫ রানের জুটি ভাঙেন আদিল রশিদ। দশম ওভারে হেনড্রিকসকে বিদায় করেন মইন। প্রোটিয়া ওপেনার ৩৩ বলে ৯ চার ও ১ ছক্কায় করেন ৫৭।

এরপর প্রায় একাই খেলেন স্টাবস। ১৯ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন একইভাবে। তাকে খুব একটা সঙ্গ দিতে পারেননি এই সিরিজে দলকে নেতৃত্ব দেওয়া ডেভিড মিলার। হেনড্রিকস ও স্টাবস ছাড়া আর কোনো ব‍্যাটসম‍্যান খুব একটা অবদান রাখতে না পারায় শেষ পর্যন্ত বড় ব‍্যবধানেই হারে দক্ষিণ আফ্রিকা। কার্ডিফে আজ বৃহস্পতিবার সিরিজ জয়ের লক্ষ‍্যে মাঠে নামবে দক্ষিণ আফ্রিকা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ইংল‍্যান্ড: ২০ ওভারে ২৩৪/৬ (রয় ৮, বাটলার ২২, মালান ৪৩, বেয়ারস্টো ৯০, মইন ৫২, লিভিংস্টোন ৫, কারান ১*, জর্ডান ০*; মহারাজ ৪-০-৩১-০, রাবাদা ৪-০-৩০-০, এনগিডি ৪-০-৩৯-৫, ফেলুকওয়ায়ো ৪-০-৬৩-১, শামসি ৩-০-৪৯-০, স্টাবস ১-০-২০-০)

দক্ষিণ আফ্রিকা: ২০ ওভারে ১৯৩/৮ (ডি কক ২, হেনড্রিকস ৫৭, রুশো ৪, ক্লাসেন ২০, মিলার ৮, স্টাবস ৭২, ফেলুকওয়ায়ো ২২, রাবাদা ০, মহারাজ ৪*, এনগিডি ১*; কারান ৪-০-৩৬-০, টপলি ৪-০-২৯-২, গ্লিসন ৪-০-৫১-৩, জর্ডান ৪-০-৩০-০, রশিদ ২-০-২৭-২, মইন ২-০-২৭-১)

ফল: ইংল‍্যান্ড ৪১ রানে জয়ী

সিরিজ: ৩ ম‍্যাচের সিরিজে ১-০তে এগিয়ে ইংল‍্যান্ড

ম‍্যান অব দা ম‍্যাচ: মইন আলি


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর