বল হাতে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল ইংল্যান্ড। ১৮৫ রানে অস্ট্রলিয়ার ৭ উইকেট তুলে নিয়ে আশা জাগিয়েছিল লিড নেওয়ার। কিন্তু স্টিভেন স্মিথের লড়াকু ফিফটির পর প্যাট কামিন্স ও টড মার্ফির দারুণ জুটিতে উল্টো লিড নিল অস্ট্রেলিয়া। তবে সফরকারীদের তিনশ রানের নিচে থামিয়ে সেটি খুব একটা বড় হতে দেয়নি বেন স্টোকসের দল।
দা ওভালে শুক্রবার (২৮ জুলাই) দ্বিতীয় দিনের অন্তিম সময়ে ২৯৫ রানে থেমেছে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংস। পঞ্চম ও শেষ টেস্টের প্রথম দিন ইংল্যান্ডকে ২৮৩ রানে থামিয়ে দেওয়া কামিন্সের দল এগিয়ে ১২ রানে। তীব্র চাপের সময়ে ১২৩ বলে ৬ চারে ৭১ রানের দারুণ ইনিংস খেলেন স্মিথ। তার সঙ্গে ৫৪ রানের জুটি গড়া কামিন্স নবম উইকেটে মার্ফির সঙ্গে উপহার দেন ৪৯ রানের আরেকটি কার্যকর জুটি। মূলত এই দুই জুটির সৌজন্যেই ছোট্ট লিড পায় সফরকারীরা।
শুক্রবার দ্বিতীয় দিনের শুরুটা অস্ট্রেলিয়ার জন্য ছিল আশা জাগানিয়া। প্রথম ঘণ্টা কোনো ক্ষতি ছাড়াই কাটিয়ে দেন আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান উসমান খাওয়াজা ও মার্নাস লাবুশেন। দুই জনের খেলার ধরণ ছিল দুই রকম। একেবারেই শট খেলছিলেন না লাবুশেন। সুযোগ পেলে বাজে বল কাজে লাগাচ্ছিলেন খাওয়াজা। মার্ক উডের বলে দুর্দান্ত এক ক্যাচ নিয়ে লাবুশেনের প্রতিরোধ ভাঙেন জো রুট। অস্ট্রেলিয়ার টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান ৯ রান করতে খেলেন ৮২ বল।প্রথম সেশনে স্বাগতিকদের সাফল্য ওই একটিই। দ্বিতীয় সেশনে পাল্টে যায় খেলার চিত্র। যার শুরু প্রথম ওভারেই খাওয়াজার বিদায় দিয়ে। স্টুয়ার্ট ব্রডের বল ভুল লাইনে খেলে এলবিডব্লিউ হন বাঁহাতি ওপেনার। বাঁচতে পারেননি রিভিউ নিয়েও। ট্র্যাভিস হেডের দ্রুত বিদায়ের পর মিচেল মার্শকে ফিরিয়ে ম্যাচে নিজের প্রথম উইকেট নেন জেমস অ্যান্ডারসন। রুটকে ছক্কা মেরে পরের বলেই ফেরেন অ্যালেক্স কেয়ারি। উডকে ছক্কায় ওড়ানোর চেষ্টায় মিচেল স্টার্ক সীমানায় ধরা পড়লে ভীষণ বিপদে পড়ে যায় অস্ট্রেলিয়া।
তবে এক প্রান্ত আগলে রাখা স্মিথ খাদের কিনারা থেকে টেনে তোলেন দলকে। সাবেক অধিনায়কের সঙ্গে জুটি গড়েন বর্তমান অধিনায়ক কামিন্স। সাবলীল ব্যাটিংয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন স্মিথ। হুট করেই বড় শট খেলার মাসুল দেন তিনি কট বিহাইন্ড হয়ে। স্মিথের বিদায়ের পর ক্রিজে গিয়েই ঝড় তোলেন মার্ফি। ধীরে ধীরে কমতে থাকে ব্যবধান। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে তাকে সঙ্গ দেন কামিন্স। স্টাম্প তাক করে করা ক্রিস ওকসের ডেলিভারি ভুল লাইনে খেলে মার্ফি এলবিডব্লিউ হলে ভাঙে দ্রুত এগোনো জুটি। তিন ছক্কা ও দুই চারে তিনি ৩৯ বলে করেন ৩৪ রান।
সময় কমে আসছে দেখে, শেষ দিকে রুটকে আক্রমণে ফেরান বেন স্টোকস। অনিয়মিত অফ স্পিনারের প্রথম বলেই ক্যাচ দেন কামিন্স (৮৬ বলে ৩৬)। থামে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস, দিনের খেলার সমাপ্তিও হয় সেখানেই। ৬১ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডের সফলতম বোলার ওকস। দুটি করে উইকেট নেন রুট, ব্রড ও উড।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ২৮৩
অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: (আগের দিন ৬১/১) ১০৩.১ ওভারে ২৯৫ (খাওয়াজা ৪৭, লাবুশেন ৯, স্মিথ ৭১, হেড ৪, মার্শ ১৬, কেয়ারি ১০, স্টার্ক ৭, কামিন্স ৩৬, মার্ফি ৩৪, হেইজেলউড ৬*; ব্রড ২০-৫-৪৯-২, অ্যান্ডারসন ২৬-৯-৬৭-১, উড ২২-৪-৬২-২, ওকস ২৫-৮-৬১-৩, রুট ৭.১-১-২০-২, ব্রুক ৩-১-৭-০)
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ