১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১৬:০৭
২৪ তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

আবদুল জলিল থেকে ‘টাইগার জলিল’

অনলাইন প্রতিবেদক

আবদুল জলিল থেকে ‘টাইগার জলিল’

বামের ছবিতে দুই ছেলের মাঝে টাইগার জলিল, ডানের ছবিতে রেসলিংয়ের মুহূর্ত

বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম। ১৯৮২ সালের আগস্ট মাসের এক সন্ধ্যা। হাজার হাজার দর্শকে ঠাসা গ্যালারি। মাঠে কুস্তি চলছে (বর্তমানে যা রেসলিং নামে পরিচিত)। হঠাৎ করেই ভারতীয় কুস্তিগীর সত্য নারায়ণ খান্না হুঙ্কার ছেড়ে উঠলেন। বাংলার কোনো ছেলে কী আছে তার সঙ্গে লড়াই করার জন্য?

এমন চ্যালেঞ্জে উত্তেজনা বেড়ে যায় দর্শক সারিতে। একে অপরের মুখ দেখতে থাকে সবাই। তখনই বাংলার এক দামাল ছেলে রিংয়ে লাফিয়ে নামেন। ভারতীয় প্রতিপক্ষকে আঘাতের পর আঘাতে ব্যতিব্যস্ত করে তোলেন। সেদিন সে লড়াইটা ড্রতে শেষ হয়েছিল। তবে সে ড্রতেই অহমিকা শেষ হয়েছিল ভারতীয় কুস্তিগীরের। আর জয়ের আনন্দ নিয়ে বাড়ি ফিরেছিল দর্শকরা।

ফুটবলই ছিল এক সময় এদেশের জনপ্রিয় খেলা। এখন ক্রিকেট। তবে এর বাইরেও বেশ কয়েকটা খেলা ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষকে বেশ আলোড়িত করেছিল। এর মধ্যে কুস্তি অন্যতম।

গত শতকের সত্তর ও আশির দশকে কুস্তিতে বাংলার এক দামাল সন্তান বিশ্বজোড়া খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তিনি কুস্তিগীর আবদুল জলিল। ১৯৮২ সালে সত্য নারায়ণের সঙ্গে লড়াইয়ের পরই এদেশের মানুষের কাছে জাতীয় বীরের মর্যাদা পান তিনি। বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল জলিল থেকে হয়ে উঠেন ‘টাইগার জলিল’।

টাইগার জলিলের আজ ২৪ তম মৃত্যুবার্ষিকী। তার জন্ম ১৯৪৭ সালে খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার গাওঘারা গ্রামে। অবশ্য ‘টাইগার জলিল’ হয়ে উঠতে তাকে পাড়ি দিতে হয়েছিল সুদীর্ঘ পথ।

১৯৭৩ থেকে ’৮১ পর্যন্ত তিনিই ছিলেন এ দেশের  রেসলিংয়ের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন। কুস্তির পাশাপাশি ভারোত্তোলক হিসেবেও ছিল তার খ্যাতি। ১৯৭৫ থেকে ৮২ সাল পর্যন্ত তার ওজনশ্রেণিতে সোনা জেতেন। জাতীয় চ্যাম্পিয়ন ছিলেন জুডোতেও (১৯৭৫-৮২)। ১৯৬৭ সালে তিনি পুলিশের চাকরিতে যোগ দেন। এরপর ১৯৭১ সালে খুলনার খালিশপুর অস্ত্রাগার লুণ্ঠন করে মুক্তিযুদ্ধে যোগ  দেন। দেশ স্বাধীনের পর ঢাকায় এসে পুরোদমে কুস্তি চর্চা শুরু করেন এবং হয়ে ওঠেন টাইগার জলিল।

এমন এক বীর বিস্মৃতির আড়ালে হারিয়েই যাচ্ছেন!  তার  ছেলে টাইগার রবি বলেন, ‘টাইগার জলিল বাংলাদেশের জন্য, কুস্তির জন্য অনেক বড় ব্র্যান্ড। তার খ্যাতিকে কাজে লাগিয়ে অনেক ভালো কিছু করা সম্ভব কুস্তিতে।’ টাইগার জলিলের সময় কুস্তিতে বাংলাদেশ নিয়মিতই পদক জিততো সাফ গেমসে। এখন তো পদকের জন্য লড়াই করাই কঠিন হয়ে যায়!

উল্লেখ্য, তার তিন ছেলের মধ্যে দুই ছেলে মহিউদ্দীন কাদের লিটন ও রবিউল ইসলাম রবিও জাতীয় জুনিয়র রেসলিং (মিনি ক্যাডেট) চ্যাম্পিয়ন ছিলেন।

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর