২৮ জানুয়ারি, ২০২৪ ১৪:৪৯

ট্র্যাজিক হিরো স্মিথ, সিরিজ সেরা জোসেফ

অনলাইন ডেস্ক

ট্র্যাজিক হিরো  স্মিথ, সিরিজ সেরা জোসেফ

শামার জোসেফ

শেষ পর্যন্ত লড়াই যেন গিয়ে ঠেকেছিল স্টিভন স্মিথ আর শামার জোসেফের মধ্যে। সেখানে হারেননি অস্ট্রেলিয়ার তারকা ব্যাটসম্যান। এক প্রান্ত আগলে রেখে অপরাজিত ছিলেন ৯১ রানে। কিন্তু আরেক প্রান্ত কাউকেই টিকতে দিলেন না জোসেফ। পায়ের অগ্রভাগে চোট নিয়েও দুর্দান্ত এক স্পেলে ধসিয়ে দিলেন অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে অসাধারণ এক জয় পেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। 

ব্রিজবেনে রোমাঞ্চ ছড়ানো দিন-রাতের টেস্টে ৮ রানে জিতেছে ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটের দল। ১-১ সমতায় শেষ করেছে সিরিজ।  ১৪৬ বলে এক ছক্কা ও নয় চারে ৯১ রানে অপরাজিত ছিলেন স্মিথ। তবে তাকে ছাপিয়ে গ্যাবা টেস্টের নায়ক শামার জোসেফ। ১১.৫ ওভারে ৬৮ রান দিয়ে ৭ উইকেট নেন এই পেসার। আগের ম্যাচে অভিষেকেও আলো ছড়ানো এই পেসারই জিতেছেন সিরিজ সেরার পুরস্কার।

শনিবার (২৭ জানুয়ারি) তৃতীয় দিন মিচেল স্টার্কর ইয়র্কার ছোবল দিয়েছিল শামার জোসেফের পায়ের অগ্রভাগে। আর ব্যাটিং চালিয়ে যেতে পারেননি, মাঠ ছাড়েন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। স্ক্যান করাতে যেতে হয়েছিল হাসাপাতালে। পরদিন আজ রবিবার তার মাঠে আসাই নিশ্চিত ছিল না। সেই তিনিই গড়ে দিলেন ব্যবধান। এক সেশনে নিলেন ৬ উইকেট। পড়ে জশ হেইজেলউডকে বোল্ড করে ১৯৯৭ সালের পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ক্যারিবিয়ানদের এনে দিলেন প্রথম জয়। মানে ২৭ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে জয়ের কেন্দ্রীয় চরিত্র তিনিই

অস্ট্রেলিয়ার মাত্রা চতুর্থ বোলার হিসেবে শামার জোসেফের সাত উইকেট নেওয়ার দিনে আদ্যান্ত ব্যাটিংয়ের কীর্তি গড়লেন স্মিথ। ওপেনার হিসেবে নতুন চ্যালেঞ্জ নেওয়ার সিরিজে অবশেষে পেলেন রানের দেখা। তবে দারুণ লড়াইয়ের পরও শেষ পর্যন্ত দিন-রাতের টেস্টের অস্ট্রেলিয়ার প্রথম হার এড়াতে পারেননি।

২ উইকেটে উইকেটে ৬০ রান নিয়ে চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করেছিল অস্ট্রেলিয়া। ২১৬ রানের লক্ষ্য থেকে ১৫৬ রান দূরে ছিল তারা। তবে আগের তিন দিনে যেভাবে রোমাঞ্চ ছড়িয়েছে এই টেস্ট তাতে অস্ট্রেলিয়ার জন্য পথটা সহজ ছিল না। তবুও স্মিথ ও ক্যামেরন গ্রিনের জুটি ভালোই সম্ভাবনা। কিন্তু দিনের ১২তম  ওভারে গ্রিনকে (৪২) বোল্ড করে ৭১ রানের এই জুটি ভাঙেন জোসেফ। পরের বলে উড়িয়ে দেন ট্রাভিস হেডের স্টাম্পও। বাঁহাতি এই ব্যাটার আগের ইনিংসেও মেরেছেন গোল্ডেন ডাক। তৃতীয় অজি ব্যাটার হিসেবে একই টেস্টের দুই গোল্ডেন ডাক মারার লজার কীর্তি গড়লেন তিনি।

নতুন আসা ব্যাটার মিচেল মার্শও বেশিক্ষণ টেকেননি। জোসেফের অতিরিক্ত বাউন্সের ডেলিভারি ঠেকিয়ে দিতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বল তার ব্যাটে লেগে চলে যায় সেকেন্ড স্লিপে থাকা আলিক আথানেজের হাতে। যদিও তিনি ধরতে পারেননি। তবে পাশে থাকা জাস্টিন গ্রিভস বল মাটিতে ফেলতে দেননি। দুর্দান্ত এক ইয়র্কারে বোল্ড হওয়ার আগে অ্যালেক্স ক্যারিও ২ রানের বেশি করতে পারেননি।

জোসেফের আগুনে ঝরা বোলিং দেখে স্টার্ককে নিয়ে দ্রুত লক্ষ্যে পৌঁছাতে চেয়েছিলেন স্মিথ। ৩০ বলে ৩৫ রানের জুটিও গড়ে ফেলেন তারা। কিন্তু আবারও ওয়েস্ট ইন্ডিজের ত্রাতা হয়ে আসেন জোসেফ। ১৪ বলে ৪ চারে ২১ রান স্টার্ককে কেভিন সিনক্লেয়ারের ক্যাচে পরিণত করেন এই পেসার। প্রথম ইনিংসে ফিফটি করা অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্সকেও তুলে নেন তিনি। একের পর এক সঙ্গীর আসা-যাওয়া দেখলেও অস্ট্রেলিয়ার জয়ের সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন স্মিথ। শেষ ব্যাটার হিসেবে যখন জশ হ্যাজেলউড আসেন তখনো জয় থেকে ২৫ রান দূরে তারা। এই জুটিতে আসে ১৬ রান আসার পর পথ হারান হ্যাজেলউড। জোসেফের নিজের স্টাম্প বাঁচিয়ে রাখতে পারেননি। অন্যদিকে ৯১ রানে অপরাজিত থাকা স্মিথকে পরিণত হয় ট্র্যাজিক হিরোতে।


সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ৩১১

অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ২৮৯/৯ ডিক্লেয়ার

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস: ১৯৩

অস্ট্রেলিয়া ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ২১৬) (আগের দিন ৬০/২) ৫০.৫ ওভারে ২০৭ (স্মিথ ৯১*, গ্রিন ৪২, হেড ০, মার্শ ১০, কেয়ারি ২, স্টার্ক ২১, কামিন্স ২, লায়ন ৯, হেইজেলউড ০; রোচ ১০-১-২৮-০, আলজারি জোসেফ ১৭-১-৬২-২, গ্রিভস ১২-০-৪৬-১, শামার জোসেফ ১১.৫-০-৬৮-৭)

ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৮ রানে জয়ী

সিরিজ: ২ ম্যাচের সিরিজ শেষ ১-১ সমতায়

ম্যান অব দা ম্যাচ: শামার জোসেফ

ম্যান অব দা সিরিজ: শামার জোসেফ


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর