২ নভেম্বর, ২০২২ ১৮:১৭

শেষ পর্যন্ত লড়াই করল টাইগাররা

অনলাইন ডেস্ক

শেষ পর্যন্ত লড়াই করল টাইগাররা

সংগৃহীত ছবি

চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আজকের ম্যাচে টিম ইন্ডিয়ার বিপক্ষে শেষ পর্যন্ত লড়াই করল টাইগাররা। আজ বুধবার অ্যাডিলেড ওভালে ভারতের বিপক্ষে টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিবায়ক সাকিব আল হাসান। 

এদিন ব্যাট করতে নেমে প্রথম তিন ওভারে আঁটসাঁট বোলিংয়ে ভারত সুবিধা করতে পারেনি, তারা করে মাত্র ১১ রান। তবে রোহিত শর্মার উইকেট হারানোর পর থেকে আগ্রাসী হয়ে ওঠেন লোকেশ রাহুল ও বিরাট কোহলি। পাওয়ার প্লে শেষে তাদের সংগ্রহ ১ উইকেটে ৩৮ রান। আর প্রথম ৮ ওভারে ভারত করে ৫২ রান। এরপরই বাংলাদেশের বোলারদের উপর ছড়ি চালায় ভারতের ব্যাটাররা।

অধিনায়ক রোহিত শর্মা ব্যাট হাতে ব্যর্থ হলেও লোকেশ রাহুল আর বিরাট কোহলি তুলে নেন অর্ধশতক। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৮৪ রান করে ভারত। জয়ের জন্য বাংলাদেশকে করতে হতো ১৮৫ রান। কিন্তু বৃষ্টি আইনে পরবর্তীতে সেই লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৬ ওভারে ১৫১ রানে। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ করে ১৪৫ রান। বাংলাদেশের দাপুটে লড়াইয়ের পর ৫ রানের জয় পায় ভারত। এই জয়ের জন্য ভারতকে শেষ বল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। এর মধ্য দিয়ে সেমিফাইনালের পথে কার্যত এক পা দিয়ে রাখলো রোহিত বাহিনী।

এদিন প্রথম ১৪ বলের ১০টি বলই ডট দেন দুই পেসার তাসকিন ও শরিফুল। তাসকিনের করা ইনিংসের তৃতীয় ওভারে সুযোগ এসেছিল রোহিতকে সাজঘরে পাঠানোর। লেনথ থেকে ওঠা বলে ব্যাট চালিয়েছিলেন রোহিত শর্মা, বল সরাসরি গিয়েছিল ডিপ স্কয়ার লেগে থাকা হাসান মাহমুদের কাছে। বল হাসানের হাতে লেগে ফসকে যায়।

তবে তার পরের ওভারেই বল হাতে ভারতীয় অধিনায়ককে তুলে নেন তরুণ তুর্কি হাসান। অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বলে কাট করতে গিয়েছিলেন রোহিত। তবে ইয়াসির আলির বিশ্বস্ত হাত ক্যাচ লুফে নিতে ভুল করেনি। হাসানের হাত ধরে প্রথম ব্রেকথ্রু পায় বাংলাদেশ। রোহিত সাজঘরে ফেরেন ৮ বলে মাত্র ২ রান করে।

রোহিতকে দ্রুত হারিয়েও চাপে পড়েনি ভারত। কোহলি ও রাহুলের দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে আসে ৩৭ বলে ৬৭ রান। শরিফুলকে বেদম মেরে কোহলিকে সঙ্গে নিয়ে এক ওভারে ২৪ রান তুলে নেয়। সেই সঙ্গে ব্যক্তিগত হাফসেঞ্চুরিও পূর্ণ হয়। তবে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা কেএল রাহুলকে বেশিক্ষণ থাকতে দেননি সাকিব আল হাসান। বিশ্বকাপজুড়েই রান পাচ্ছিলেন না রাহুল। আগের তিন ম্যাচ মিলে করেছিলেন মাত্র ২২ রান। আজ করলেন ৩২ বলে ৫০ রান। দল থেকে তাকে বাদ দেয়ার দাবিও উঠছিল। তবে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের আস্থার প্রতিদান দিলেন রাহুল।

রাহুলের পর বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ফর্মে থাকা সূর্যকুমার যাদবকে তুলে নেন সাকিব। ১৬ বলে ৩০ রান করে সাজঘরে ফিরেছেন সূর্য। মুস্তাফিজ-হাসানদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে শেষদিকে রানের গতি কিছুটা কমে। হার্দিক পান্ডিয়া ও অক্ষর প্যাটেলকে দুই অঙ্ক ছোঁয়ার আগেই ফেরান হাসান মাহমুদ আর দিনেশ কার্তিক ফেরেন রান আউট হয়ে। এক প্রান্ত আগলে রেখে একাই লড়াই চালিয়ে যান কোহলি। ৪৪ বলে ৬৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দলকে এনে দেন ১৮৪ রানের বিশাল সংগ্রহ। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নিয়েছেন হাসান মাহমুদ। ২টি উইকেট গেছে অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের ঝুলিতে।

জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে বাংলাদেশকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেয় ওপেনিং জুটি। নাজমুল হোসেন শান্তর সাথে এদিন ওপেনিংয়ে নেমেছিলেন লিটন দাস। শান্ত বরাবরের মতো এদিনও সাবধানী শুরু করেন। তবে তার ব্যাটিং দলকে চাপে ফেলেনি লিটনের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের কল্যাণে। মাত্র ২১ বলে অর্ধশতক হাঁকানো লিটন গড়েন চলতি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড। দলীয় রান ৬৬ হয় ৭ ওভারে, তখনই নামে বৃষ্টি। ২৬ বলে ৫৯ করা লিটনের ব্যাট থেকে ততক্ষণে এসেছে ৭টি চার ও ৩টি ছক্কা। যদিও অপর প্রান্তে ভীষণ বেমানান ফিগার শান্তর ১৬ বলে মাত্র ৭ রান।

বৃষ্টি থামলে ১৬ ওভারে বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৫১ রান। অর্থাৎ আরও ৯ ওভারে করতে হতো আরও ৮৫ রান। ক্রিজে নেমেই লিটনকে অবশ্য বিদায় নিতে হয়। রানআউট হওয়ার আগে ২৭ বলে ৬০ রান করেন ৭টি চার ও ৩টি ছক্কায়। এরপর শান্ত যা করেছেন, তা মেনে নেওয়া যে কারও জন্য কষ্টকর। একটি করে চার-ছক্কা হাঁকিয়ে ২১ রান করে যখন সাজঘরে ফিরছেন, তখন বল খেলে ফেলেছেন ২৫টি। এমন একটি ম্যাচে ৮৪ স্ট্রাইক রেটের ব্যাটিং, তাও শুরুর দিকে ধীরে খেলে যে ক্ষত সৃষ্টি করে গিয়েছিলেন, তা সারাতেও পারেননি।

এমনকি বাকি ব্যাটাররাও কেউ আর প্রতিরোধ গড়তে পারেননি। একপর্যায়ে ধ্বস নামে ব্যাটিং অর্ডারে। ৬ নম্বরে নামা নুরুল হাসান সোহান শেষদিকে চেষ্টা চালালেও সফল হননি। ১৪ বলে ২৫ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। ৭ বলে ১২ রান করে অপরাজিত ছিলেন তাসকিন আহমেদ। ভারতের পক্ষে আরশদীপ সিং ও হার্দিক পান্ডিয়া দুটি করে উইকেট শিকার করেন। 

বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর