৭ নভেম্বর, ২০২২ ১৭:৫০

সুজনের শান্ত-বন্দনা, শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা নয়তো?

অনলাইন ডেস্ক

সুজনের শান্ত-বন্দনা, শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা নয়তো?

ইতিবাচক দিক খোঁজায় ব্যস্ত টাইগার ম্যানেজমেন্ট। চলছে নিজেদের সিদ্ধান্তকে যুক্তিযুক্ত প্রমাণের চেষ্টাও। এবার নিজেদের ‘ধোয়া তুলসী পাতা’ প্রমাণের মঞ্চে বিশ্বকাপে ওপেন করা নাজমুল হোসেন শান্তকেই ঢাল বানালেন টাইগারদের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন। বোঝালেন নির্বাচকরা শান্তকে দলে নিয়ে ঠিক কাজটাই করেছেন।

কিন্তু গল্পের বাস্তবতা ভিন্ন। সংবাদ সম্মেলনে বাঘভাল্লুক শিকার আর মাঠের খেলাটা ঠিক এক নয়। পরিসংখ্যানের হিসেব বলছে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এবারই সেরা পারফর্ম করেছে টিম টাইগার্স। তবে সেই সেরা আসলে কতো সেরা সে নিয়ে থেকে যাচ্ছে প্রশ্ন। ছয় দলের গ্রুপে পয়েন্ট টেবিলে বাংলাদেশের অবস্থান পাঁচ। থাকতে পারেনি সুপার টুয়েলভে খেলা ১২ টিমের মধ্যে সেরা ৮ দলে। যেখানে নেদারল্যান্ডস-জিম্বাবুয়েও আছে সেরা আটে। মাঠের খেলায় নেদারল্যান্ডস কিংবা জিম্বাবুয়েকে হারাতেই টাইগারদের ঘাম ঝরেছে রীতিমতো।

ভারতের বিপক্ষে জেতা ম্যাচ হাতছাড়া হয়েছে ব্যাটারদের ব্যর্থতায়। সেদিন লিটনের দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্সের পরও টাইগাররা জয় আনতে পারেনি। হেরেছে পাঁচ রানে। অজুহাত অবশ্য দাঁড় করানো গেছে, ভেজা আউটফিল্ড, বিরাট কোহলির ফেক ফিল্ডিং ইত্যাদি।

তবে সেদিন যে বাংলাদেশের পরাজয়ের ভীতটা একরকম গড়ে দিয়েছিলেন শান্ত। অজুহাত দিয়ে সে কথা অস্বীকার করা যায় কি? ৮ বলে ২ রান তোলা শান্ত ভারতের বিপক্ষে শেষ পর্যন্ত আউট হয়েছিলেন ২৫ বলে ২১ রান করে। শান্ত যদি ২৫ বলে ২৫ রান করতেন, মানে আর চারটা রান বেশি হলে তো ম্যাচটা অনায়াসে টাই হতে পারতো।

শান্তর প্রতিভার ঝলক সেখানেই শেষ নয়, খেলার ধরন বুঝতে না পারা শান্তর ভুলের কারণেই রান আউটের শিকার হয়েছিলেন দারুণ ছন্দে খেলতে থাকা সেট ব্যাটার লিটন কুমার দাস। শান্তর দুই রানের নেওয়ার কলটা যে লিটন খুব একটা পছন্দ করেননি কিংবা সময়োপযোগী ছিল না, সেটাও লিটন দাসের মাঠের অভিব্যক্তিতে ছিল পরিষ্কার।

অবশ্য জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শান্ত ৫৫ বলে ৭১ রানের কার্যকরী ইনিংস খেলেছিলেন। আর পাকিস্তানের বিপক্ষে ৪৮ বলে ৫৪ রানের ইনিংস শান্তর, সেই ইনিংসের কার্যকরিতা ও ধরন নিয়েও আছে যথেষ্ট প্রশ্ন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শান্ত করেছিলেন ৯ বলে ৯ রান! নেদারল্যান্ডসের মতো দলের বিপক্ষে তার স্কোর ২০ বলে ২৫! 

সবমিলিয়ে শান্ত মন্দের ভালো হতে পারেন। বিশ্বকাপে ৫ ম্যাচ খেলে ৩৬ গড়ে ১৮০ রান করেছেন শান্ত। স্ট্রাইক রেট ১১৫। এই পাঁচ ম্যাচে পেয়েছেন দুটো ফিফটির দেখা। এই পরিসংখ্যানে ধোঁয়া তুলে সুজন আমজনতার মতো শান্তকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে বড় করছেন। দিয়ে দিয়েছেন ভবিষ্যতের সেরা ব্যাটারের তকমা। আসলে কী তাই? মাঠের খেলার বিচারে শান্ত কী আসলেই করেছেন কার্যকর কিছু? নাকি সুজন আছেন নিজের দোষ আড়াল করতে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টায়?

অথচ টিম ডিরেক্টর হিসেবে সুজন যে এবারও তার দায়িত্বটা ঠিকঠাক পালন করতে পারেননি, সঠিক নির্দেশনার অভাবে যে পদে পদে ধুঁকেছে টাইগাররা। মাঠের খেলায় তার ছাপ ছিল পরিষ্কার। অবশ্য, সেকথার জবাবও সুজনের কাছে তৈরিই আছে। তিনি যেমন এশিয়া কাপের শেষে ক্রিকেটার কাঁধে সব দায় চাপিয়ে হয়েছিলেন নির্ভার; বলেছিলেন, ‘মাঠে খেলবেন ক্রিকেটাররা, সেটা তো আমাদের দায়িত্ব নয়।’ এবার সেই ‘বুদ্ধিমান’ সুজনই নিজের দায়টা এড়াতে নিলেন শান্তর আশ্রয়!

বিডি প্রতিদিন/নাজমুল

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর