১৫ জুলাই, ২০২৪ ১৪:২৯

‘বাংলাদেশ স্টার্টআপ সামিট ২০২৪’-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা

অনলাইন ডেস্ক

‘বাংলাদেশ স্টার্টআপ সামিট ২০২৪’-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা

রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক আনুষ্ঠানিকভাবে ২৭ এবং ২৮ জুলাই অনুষ্ঠিতব্য 'বাংলাদেশ স্টার্টআপ সামিট ২০২৪'-এর উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

এশিয়ার দ্রুতবর্ধনশীল সম্ভাবনার বাজারগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমকে আরও উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ: এন্ডলেস পসিবিলিটিজ’ থিম নিয়ে দ্বিতীয় বছরের মতো আয়োজন হচ্ছে ‘বাংলাদেশ স্টার্টআপ সামিট'।

আইসিটি বিভাগের সেক্রেটারি এবং স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড-এর পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান শামসুল আরেফিন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এবং স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি আহমেদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এছাড়াও আয়োজকদের দিক থেকে উপস্থিত ছিলেন স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর সামি আহমেদ, সামিটটির ইভেন্ট পার্টনার উইন্ডমিল অ্যাডভার্টাইজিং লিমিটেড থেকে ম্যানেজিং ডিরেক্টর সাব্বির রহমান তানিম, কম্যুনিকেশন পার্টনার এশিয়াটিক মাইন্ডশেয়ার লিমিটেড-এর পক্ষ থেকে ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোরশেদ আলম এবং ম্যানেজিং পার্টনার তাসনুভা আহমেদ টিনা-সহ প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পাওয়ারড বাই স্পন্সর— এসবিকে টেক ভেঞ্চারস থেকে ফাউন্ডার অ্যান্ড ম্যানেজিং পার্টনার, সোনিয়া বশির কবির এবং সিইও অব এক্সেলারেট হার, মুনজারিন মাহবুব অবনি; প্রিমিয়াম স্পন্সরদের মধ্য থেকে আমি প্রবাসী লিমিটেড-এর সিইও অ্যান্ড কো-ফাউন্ডার নামির আহমেদ নুরি, এবং বিজনেস অপারেশন লিড, আহসানুল হক আদনান; এবং নেক্সট ভেঞ্চারস-এর চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার সৈয়দ আবদুল্লাহ জায়েদ এবং চিফ স্ট্র্যাটেজি অফিসার সৈয়দ আবদুল্লাহ গালিব।

অনুষ্ঠানটি সামি আহমেদের স্বাগত বক্তব্য দিয়ে শুরু হয়। তারপর সামিট ইভেন্টটির প্ল্যান এবং ডিজাইনের দিকগুলো নিয়ে আগত অতিথিদেরকে সেখানে বিস্তারিত ধারণা দেন উইন্ডমিল-এর সাব্বির রহমান তানিম। দেশের বাইরে থেকে বিজনেস ও স্টার্টআপ জগতের কোন গুরুত্বপূর্ণ ভেঞ্চার ক্যাপিটলিস্ট-গণ এবং ইনভেস্টর অর্গানাইজেশন-গুলো এই ইভেন্টে অংশ নিতে আসছেন, সেই বিষয়েও জানানো হয়। 

মাইন্ডশেয়ার-এর মোরশেদ আলম তার বক্তব্যে, 'বাংলাদেশ স্টার্টআপ সামিট ২০২৪' সম্পর্কে সবাইকে অবহিত করার গুরুত্ব তুলে ধরেন, সেই সাথে ইভেন্টের আগে-পরে এবং সমস্ত আয়োজন চলাকালে পুরো সামিটের বিষয়ে আগ্রহী এবং সংশ্লিষ্ট নাগরিক-সহ সব মহলকে যথাযথভাবে অবগত করার পরিকল্পনা সবার সামনে তুলে ধরেন। 

বাংলাদেশ স্টার্টআপ সামিট-এর ২০২৩ সালের ব্যাপক সাফল্যের ধারাবাহিকতায়, এই বছরের আয়োজনটি আন্তর্জাতিক কম্যুনিটির কাছ থেকে বিশেষ সাড়া পেয়েছে। ১০০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণকারী নিয়ে বিশ্বব্যাপী দ্বিগুণ হয়েছে অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা। সামিটে ৫৫+ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল এবং বিনিয়োগ সংস্থার পাশাপাশি, বহু সংখ্যক অ্যাঞ্জেল বিনিয়োগকারী, স্টার্টআপ উৎসাহী এবং আন্তর্জাতিক স্টার্টআপ হোস্ট করবে। ভারতের ইউনিকর্ন স্টার্টআপ আপগ্রেড-এর এমডি মিঃ মায়াঙ্ক, সিলিকন ভ্যালির গ্লোবাল স্টার্টআপস, বাংলাদেশের বিশিষ্ট প্রতিষ্ঠাতাদের মতো সম্মানিত ব্যক্তিরা মূল অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে থাকবেন। সারা বিশ্ব থেকে ১০০ জনেরও বেশি প্রসিদ্ধ বক্তা, ৩০+ আকর্ষণীয় সেশনের প্রতিশ্রুতি এই আয়োজনকে আঞ্চলিক স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্টে পরিণত করেছে।

সামিটে এআই অ্যান্ড টেকনোলজি, স্টার্টআপ এডুকেশন, দ্য আর্ট অফ ফান্ডরেইজিং, ফিনটেক, এডটেক, ক্লাইমেট ভালনারেবিলিটি, ইমপ্যাক্ট ইনভেস্টমেন্ট, লজিস্টিকস, মোবিলিটি অ্যান্ড ই-কমার্স, আরএমজি শোকেসিং এবং ফুড অ্যান্ড অ্যাগ্রিটেক-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকে কাভার করে সেশনের আয়োজন থাকবে। অংশগ্রহণকারীদের জন্য দিনব্যাপী শোকেস, প্রশিক্ষণ সেশন, নীতি আলোচনা এবং নেটওয়ার্কিং সুযোগ থাকবে। ইভেন্টটি বাংলাদেশ স্টার্টআপ আউটলুকের একটি উদ্বোধনী অধিবেশনের মাধ্যমে শুরু হবে, এরপর 'লেভারেজিং এআই ইন বাংলাদেশ: টুডে অ্যান্ড দ্য নেক্সট ফাইভ ইয়ারস'-এর সাথে এআই-এর ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করা হবে। 

এছাড়াও 'দ্য আর্ট অফ ফান্ডরেইজিং' এবং ‘ফিউচার অব লার্নিং’ আলোচনার মাধ্যমে কাভার করা হবে। বৈদ্যুতিক যানবাহন, কৃষি-প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং ফিনটেক নিয়ে শিল্প-নির্দিষ্ট আলোচনা করা হবে। স্টার্টআপদের জন্য এআই-সক্ষম টেক প্রডাক্ট তৈরি করার এবং কার্যকরভাবে স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম নেভিগেট করার নতুন দক্ষতা অর্জনের সুযোগ থাকবে। নির্বাচিত স্টার্টআপগুলো সরাসরি অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারীদের কাছে পিচ করার সুযোগ পাবে, যা তাদের বিনিয়োগ এবং সহযোগিতার সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দিবে।
স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি আহমেদ দুই দিনব্যাপী সামিট-এর সুযোগ-সুবিধাগুলো তুলে ধরেন।  
২ দিনের সামিট থেকে, অংশগ্রহণকারীরা বাংলাদেশের সেরা দিকগুলো দেখার সাথে সাথে বিশ্বের শীর্ষ স্টার্টআপ লিডারদের কাছ থেকে শেখার সুযোগ পাবেন। স্টার্টআপ ফাউন্ডাররা, ইন্ডাস্ট্রি লিডারদের কাছ থেকে মার্কেটের সাম্প্রতিক অবস্থা, ব্যবসায়িক কৌশল এবং স্কেলিং সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। মূল স্টেকহোল্ডারদের সাথে সংযোগের মাধ্যমে, উদ্যোক্তারা তাদের নেটওয়ার্কিংয়ের সুযোগ পাবে, কার্যকর ফান্ডিং স্ট্র্যাটেজি সম্পর্কে জানতে পারবে এবং উদ্ভাবনী আইডিয়াগুলো কার্যকর করার ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণা পাবে। এছাড়াও এক জায়গাতেই বহু সংখ্যক স্থানীয় এবং বৈশ্বিক ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্টদের সাথে সংযোগের অনন্য সুযোগ পাবেন, যা তাদের উদ্ভাবনী উদ্যোগের বৃদ্ধি এবং স্কেলিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ফান্ডিং সংগ্রহের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিবে। সকল সম্ভাব্য উদ্যোক্তারা, তাদের আইডিয়াগুলোকে ইকোসিস্টেম লিডারদের সহায়তায় বাণিজ্যিক সমাধানে পরিণত করতে শিখবে। এই সামিটটি স্টার্টআপ বাংলাদেশের একটি ফ্ল্যাগশিপ উদ্যোগ, যা বাংলাদেশের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের প্রবৃদ্ধির গল্প এবং অফুরন্ত সম্ভাবনার কথা তুলে ধরবে।

তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক উদ্যোগটির প্রশংসা করে বলেন, "‘বাংলাদেশ স্টার্টআপ সামিট ২০২৪’ আমাদের উদ্ভাবনী ইকোসিস্টেমের বৈশ্বিক সম্ভাবনার একটি অনন্য সাক্ষ্য। উদ্ভাবক, বিনিয়োগকারী এবং নীতিনির্ধারকদের একত্রিত করে, ক্রমবর্ধমান স্টার্টআপ অঙ্গনে বাংলাদেশ নিজের অগ্রণী অবস্থান নিশ্চিত করেছে। এই সামিটটি আমাদের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের বৃদ্ধি এবং প্রচারকে ত্বরান্বিত করে, নতুন প্রজন্মের উদ্যোক্তা চেতনাকে উদ্দীপ্ত করবে। সামিটটি বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ, জ্ঞান বিনিময় সহজতর এবং স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠাতাদের জন্য সম্ভাবনা বৃদ্ধি করবে। এটি বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠত্ব প্রদর্শন করে, দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের একটি ফ্ল্যাগশিপ প্রোগ্রাম হিসেবে কাজ করবে। আমরা একসাথে বৈশ্বিক স্টার্টআপ ল্যান্ডস্কেপে বাংলাদেশকে অগ্রগণ্য অবস্থানে নিয়ে যেতে কাজ করে যাবো।”

'বাংলাদেশ স্টার্টআপ সামিট ২০২৪' ইভেন্টটিতে স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড-এর সাথে প্রিমিয়াম স্পন্সর মাস্টারকার্ড, সিগনেচার স্পন্সর সুইস অ্যাম্বাসি, কম্যুনিকেশন পার্টনার মাইন্ডশেয়ার, ইভেন্ট পার্টনার উইন্ডমিল, ইকোসিস্টেম ইন্যাবলার পার্টনার ইয়ুথ কো:ল্যাব, হসপিটালিটি পার্টনার ইন্টারকন্টিনেন্টাল, নলেজ পার্টনার লাইটক্যাসেল এবং রেজিস্ট্রেশন পার্টনার সহজ সম্পৃক্ত আছে।  

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর