বৃহস্পতিবার, ৩০ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

মহাবিশ্বের সবচেয়ে শীতলতম স্থান

মহাবিশ্বের সবচেয়ে শীতলতম স্থান

রহস্যেঘেরা মহাবিশ্বে রয়েছে অসংখ্য রহস্যময় গ্রহ, নক্ষত্র এবং স্থান। কোনো স্থান যদি হয়ে থাকে উষ্ণ তেমনি অন্যদিকে রয়েছে শীতলতম স্থানও। রহস্য এবং বৈচিত্র্যে ঘেরা এই মহাবিশ্বে এমন অনেক অদ্ভুত বস্তু বা গ্রহ বা নক্ষত্র রয়েছে যারা আজও আবিষ্কারের অপেক্ষায় রয়েছে।

পৃথিবীর সবচেয়ে শীতলতম স্থান অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশের পূর্ব অ্যান্টার্কটিক মালভূমি। সেখানকার গড় তাপমাত্রা মাইনাস ৯৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রশ্ন হলো- মহাবিশ্বের শীতলতম স্থান কোনটি? উত্তরটি হলো- মহাবিশ্বের তাপমাত্রা এমনিতেই পরমশূন্যের কাছাকাছি।

জানা গেছে, নক্ষত্র মহাবিশ্বের তাপের প্রধান উৎস। নক্ষত্র ও এর আশপাশের কিছু অঞ্চল ছাড়া পুরো মহাবিশ্বই ভয়ংকর শীতল। আর এই শীতল স্থানের মধ্যও রয়েছে শীতলতম স্থান। বিজ্ঞানীদের জানামতে, মহাবিশ্বের সবচেয়ে শীতলতম স্থানটির অবস্থান বুমেরাং নেবুলাতে। পৃথিবী থেকে প্রায় ৫ হাজার আলোকবর্ষ দূরের এই নেবুলা পুরোটাই গ্যাস এবং মহাজাগতিক ধূলিকণা দিয়ে তৈরি। ১৯৯৫ সালে বিজ্ঞানীরা এই নেবুলার সন্ধান পান। এর তাপমাত্রা পরম শূন্যের মাত্র এক ডিগ্রি উপরে। অর্থাৎ, মাইনাস ২৭২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একটি সুপারনোভা বিস্ফোরণের পর সেটার ছড়িয়ে পড়া গ্যাস ও ধুলাবালু তৈরি হয় নেবুলা। নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ার কারণে নক্ষত্রের ভেতর প্রচুর মুক্ত ইলেকট্রন তৈরি হয়। ফলে এর ভেতরে তৈরি হয় পাউলির অপবর্জনজনিত চাপ। এই চাপ নক্ষত্রের ভেতরের বস্তুকণাগুলোকে বাইরের দিকে ঠেলে দেয়। অন্যদিকে মহাকর্ষ বল কণাগুলোকে একসঙ্গে একটা জায়গায় জড়ো করে রাখে। কিন্তু একটা ভারী নক্ষত্রের ভেতরের জ্বালানি যখন ফুরিয়ে আসে, তখন অপবর্তনজনিত চাপ ভয়ংকর হয়ে ওঠে। মহাকর্ষ বলকে হারিয়ে দেয়। তখন নক্ষত্রের বাইরের দিকের অঞ্চলটা বিস্ফোরিত হয়ে মহাকাশে ছড়িয়ে পড়ে। বিস্ফোরিত সেবব ধূলিকণার মেঘের মতো ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে। সেটাই আসলে নেবুলা নামে পরিচত। একটি সুপারনোভা বিস্ফোরণের পর সেটার ছড়িয়ে পড়া গ্যাস ও ধূলাবালু তৈরি হয় নেবুলা। নেবুলার ধূলিকণা দ্রুত চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে, তাই দ্রুতই কমতে থাকে এর তাপশক্তি। এজন্য প্রতিটা নেবুলা অঞ্চলেই তাপমাত্রাই অনেক কম। বিজ্ঞানীদের মতে, সাধারণ নক্ষত্রের সুপারনোভা থেকে যে বেগে অণুগুলো ছড়িয়ে পড়ার কথা, বুমেরাং নেবুলা থেকে তার দশগুণ বেগে ছড়িয়ে পড়ছে। প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৯৩ মাইল বেগে। এ কারণেই সেখানকার তাপমাত্রা এতো কম বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা।

সূত্র: হাউ ইট ওয়ার্কস।

সর্বশেষ খবর