সোমবার, ১ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

মঙ্গল গ্রহে বায়ুমন্ডল নেই!

টেকনোলজি ডেস্ক

মঙ্গল গ্রহে বায়ুমন্ডল নেই!

দীর্ঘদিন ধরেই বিজ্ঞানীরা মঙ্গলে মানব বসতি তৈরির কথা ভাবছেন। লাল এ গ্রহটির নমুনা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, একসময় এ গ্রহে পানি ছিল, ছিল জীবন ধারণের উপযোগী বায়ুমন্ডল। কিন্তু আজ মঙ্গলের বায়ুমন্ডলের অবস্থা শোচনীয়। নিতান্ত পাতলা, শীতল।

 

ইতোমধ্যে বেশ কিছু অভিযান চালানো হয়েছে মঙ্গলে। অপরচুনিটি (২০০৪) থেকে শুরু করে বিখ্যাত কিউরিসিটি (২০১২) কিংবা হালের পার্সিভিয়ারেন্স (২০২০) সব অভিযানের লক্ষ্য ছিল মূলত দুটো। এক, মঙ্গলকে আরও ভালোভাবে জানা। আর দুই, গ্রহটি কতটা মানুষের বসতি করার উপযোগী, তা খতিয়ে দেখা। দেখা গেছে, মঙ্গলে রয়েছে শুকনো নদী। মঙ্গলপৃষ্ঠের লাল মাটির গভীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে মার্স রোভারগুলো। শুকনো নদীর গভীরে পাওয়া গেছে ম্যাগনেসিয়াম, লোহা ও ক্যালসিয়াম সালফেটের মতো খনিজ। এ রকম বেশ কিছু খনিজ ইঙ্গিত করে, একসময় পানি ছিল এখানে। কারণ, পানিহীন অঞ্চলে এসব খনিজ পাওয়া যায় না।

মঙ্গলের বায়ুমন্ডলের ঘনত্ব পৃথিবীর ১ শতাংশেরও কম। কীভাবে হলো এমন পরিবর্তন? জানার জন্য মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা ২০১৩ সালের নভেম্বরে একটি নভোযান উৎক্ষেপণ করে। মার্স অ্যাটমোস্ফিয়ার অ্যান্ড ভোলাটাইল ইভোলিউশন বা ম্যাভেন নামের এই নভোযান মঙ্গলের চারপাশে নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৌঁছে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে। তথ্য সংগ্রহ করে ম্যাভেন, পাঠায় পৃথিবীতে। এসব তথ্য থেকে জানা যায় আশ্চর্য এক তথ্য। জানা যায়, এককালে মঙ্গলে ছিল পৃথিবীর মতো বায়ুমন্ডল। বহতা পানির স্রোতস্বিনী উৎস ধারণের উপযোগী ছিল মঙ্গলে। বায়ুমন্ডল ছিল পানিচক্র গঠন, সমুদ্র গড়ে তোলা বা জীবন বাঁচিয়ে রাখার মতো যথেষ্ট পুরু। কিন্তু মঙ্গলের এ বায়ুমন্ডলে প্রায়ই হামলা করত সৌরঝড়। সূর্যের নির্মম রশ্মির চার্জিত কণারা ছুটে আসত প্রচ- বেগে। ধাক্কা দিয়ে মঙ্গলের বায়ুমন্ডলের বেশিরভাগ হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, আর্গন ও কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাসকে বের করে দিত মহাকাশের মহাশূন্যে।

এর কারণ, পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্র। এই অদৃশ্য প্রতিরক্ষা বলয় সুরক্ষা দিচ্ছে আমাদের অতন্দ্র প্রহরীর মতো। সূর্য থেকে চার্জিত কণারা যখন ছুটে আসে, আঘাত করতে চায় পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে, তখন সেগুলোকে বাধা দেয় চৌম্বকবলয়। যেহেতু এ কণারা চার্জিত, তাই চৌম্বকক্ষেত্রের নিয়ন্ত্রণ এগুলোর ওপরে কাজ করে। এরা বাধা পায়, ক্ষতি করতে পারে না পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের। পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রের সঙ্গে এসব কণার মিথস্ক্রিয়ার ফলেই দেখা যায় বর্ণিল মেরুপ্রভা। মঙ্গলের ভর পৃথিবীর তুলনায় অনেকটা কম, ঘনত্বও কম। এই দুইয়ে মিলে এর কেন্দ্রের তাপমাত্রা কমে গেছে অনেক দ্রুত। ফলে মঙ্গলের কেন্দ্রের বাইরের দিকটা জমাট বেঁধে গেছে।

সর্বশেষ খবর