বুধবার, ১০ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

মানব সভ্যতার ক্ষতির কারণ হবে এআই প্রযুক্তি! কেন, কীভাবে!

টেকনোলজি ডেস্ক

মানব সভ্যতার ক্ষতির কারণ হবে এআই প্রযুক্তি! কেন, কীভাবে!

২০১৮ সালে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়ে জিওফ্রে হিন্ট তাঁর কাজে অবদানের জন্য পেয়েছেন টুরিং অ্যাওয়ার্ড। কিন্তু এই ক্ষেত্রে তিনি যতটাই দক্ষ ততটাই সচেতন। তার ভাষ্য, এআই যত বৃদ্ধি পাবে, যত জ্ঞান অর্জন করবে ততই ভয়ংকর হয়ে উঠবে।

প্রযুক্তির দুনিয়ায় এই মুহূর্তের চর্চার কেন্দ্রবিন্দু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কিংবা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। যা কেবল চর্চাতেই থেমে নেই, বেড়েছে এই প্রযুক্তির ব্যবহারও। মানবসভ্যতার উন্নয়নে এই প্রযুক্তি কীভাবে কাজে লাগানো যায় তা নিয়ে দিনরাত গবেষণা চালাচ্ছেন বড় বড় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার গবেষকরা। তাদের ধারণা, এক নতুন যুগের শুরু হতে চলেছে।

ব্রিটিশ বিজ্ঞানী এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষক জিওফ্রে হিন্টন। যিনি এআই গডফাদার নামে বিশ্বব্যাপী পরিচিত। তিনি সামলাতেন গুগলের মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদম। তবে তার জীবনের অর্ধেক সময় কেটেছে কৃত্রিম প্রযুক্তি নিয়ে। পেয়েছেন খ্যাতি ও একাধিক অ্যাওয়ার্ড। এবার সেই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের জনক নিজেই শোনালেন সতর্কবাণী। এআই প্রযুক্তি ভবিষ্যতে বিপজ্জনক হতে পারে এই বলেই গুগল ত্যাগ করলেন জিওফ্রে হিন্টন।

প্রায় এক দশক ধরে টেক জায়েন্ট গুগলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। তবে এ সম্পর্কে চিড় ধরায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। তার ধারণা এ প্রযুক্তি আগামী দিনে আরও ঝুঁকি নিয়ে আসবে। হিন্টন জানান, স্বাধীনভাবে যাতে এ নিয়ে কথা বলতে পারি সেই কারণেই গুগল ছেড়েছি আমি। তবে এআই নিয়ে গুগলের কাজকেও প্রশংসা করেছেন জিওফ্রে হিন্টন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভয়ংকর রূপ নিয়ে যাতে স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারি সেই কারণেই গুগল ছেড়েছি আমি। তবে গুগল খুব দায়িত্বসহকারে এআই ক্ষেত্রে অগ্রসর হচ্ছে।’

 

এআই মারাত্মক হতে পারে

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যতটা মানুষের কাজ সহজ করতে পারে তার থেকেও বেশি এর কুপ্রভাব নিয়ে চিন্তিত বিজ্ঞানীরা। মানুষের বুদ্ধির পরিধিকে ছাপিয়ে যেতে পারে এআই। বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী দিনে চাকরি হারানোর প্রবল সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন তারা।

শুধু কর্মসংস্থান নয়, সামাজিক মাধ্যমেও বড় প্রভাব ফেলবে এআই। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে যে কোনো ছবি, টেক্সট ইত্যাদি নিখুঁতভাবে বানানো যায়। যার অপব্যবহার করে সমাজে হিংসা ছড়াতে পারে। ঠিক এই আশঙ্কাই করছেন জিওফ্রে হিন্টন। ১৯৭৮ সালে এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে পিএইচডি করেন হিন্টন। জীবনের একটা বিরাট সময় কেটেছে শুধু এআই নিয়ে গবেষণা করেই। ২০১৮ সালে এআই কাজে তাঁর অবদানের জন্য পেয়েছেন টুরিং অ্যাওয়ার্ড। কিন্তু এই ক্ষেত্রে তিনি যতটাই দক্ষ ততটাই সচেতন। এআই যত বৃদ্ধি পাবে, যত জ্ঞান অর্জন করবে ততই ভয়ংকর হয়ে উঠবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এমন ক্ষতি রুখতে ইতিমধ্যে একজোট হয়েছেন অ্যাপেলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ ওয়াজনিক, টেসলা কর্ণধার এলন মাস্কসহ হাজারের বেশি প্রযুক্তিকর্মী এবং গবেষক। এআই সমাজ এবং মানব সভ্যতার জন্য ঝুঁকি এ দাবি নিয়ে একটি খোলা চিঠি রাখা হয়। এই চিঠিতে আগামী ছয় মাসের জন্য এআই ডেভেলপমেন্ট স্থগিত রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর