শনিবার, ১৭ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

আইপিএস কিংবা ইউপিএস!

কেনার আগে যেসব বিষয় জানা প্রয়োজন

টেকনোলজি ডেস্ক

আইপিএস কিংবা ইউপিএস!

শুরু করার আগে প্রথমেই আইপিএস এবং ইউপিএসের পার্থক্য নিয়ে কথা বলা দরকার। ইউপিএস (আনইন্টারাপ্টেড পাওয়ার সাপ্লাই) এবং আইপিএস (ইনস্ট্যান্ট পাওয়ার সাপ্লাই) তখনই বিদ্যুতের জোগান দেয় যখন বিদ্যুতের প্রধান লাইনে সরবরাহ বন্ধ থাকে।  কিন্তু ইউপিএস এ সংযোগ বদলের বিষয়টি লোডশেডিংয়ের প্রায় সঙ্গে সঙ্গে করতে পারে, যা কিনা এক সেকেন্ডেরও কম সময়

 

লোডশেডিংয়ের জঞ্জাল থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই ব্যবহার করেন আইপিএস কিংবা ইউপিএস। তবে অনেকে বিক্রেতার কথায় ভুল পণ্যটি কিনে বসেন। তাই আইপিএস ও ইউপিএস কেনার সময় যে বিষয়টি মাথায় রাখা ভালো তা নিয়েই আজকের ফিচার।

শুরু করার আগে প্রথমেই আইপিএস এবং ইউপিএসের পার্থক্য নিয়ে কথা বলা দরকার। ইউপিএস (আনইন্টারাপ্টেড পাওয়ার সাপ্লাই) এবং আইপিএস (ইনস্ট্যান্ট পাওয়ার সাপ্লাই) তখনই বিদ্যুতের জোগান দেয় যখন বিদ্যুতের প্রধান লাইনে সরবরাহ বন্ধ থাকে। কিন্তু ইউপিএস এ সংযোগ বদলের বিষয়টি লোডশেডিংয়ের প্রায় সঙ্গে সঙ্গে করতে পারে, যা কিনা এক সেকেন্ডেরও কম সময়। তবে আইপিএসের ক্ষেত্রে এক সেকেন্ড বা এর চেয়ে কিছুটা বেশি সময় লাগে। আজকাল বেশির ভাগ আইপিএসেই ইউপিএস মোড থাকে, তাই দুভাবেই কাজ চালানো সম্ভব হয়। বাজারে দুই ধরনের আইপিএস রয়েছে : বৈদ্যুতিক এবং সোলার সিস্টেম। বৈদ্যুতিক আইপিএস বাসস্থানের বিদ্যুতের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে এবং বিদ্যুৎ থাকাকালীন এটি চার্জ গ্রহণ করে। অন্যদিকে সোলার সিস্টেম আইপিএস সূর্যালোক থেকে শক্তির জোগান নেয় এবং এর জন্য কোনো প্রধান বিদ্যুতের সংযোগ থাকতে হয় না। বিদ্যুতের বাড়তি খরচের হিসাবে সোলার আইপিএস সাশ্রয়ী। এ ছাড়া এ তালিকায় আছে মিনি আইপিএস, যা কিনা প্রতিটি ডিভাইসের ক্ষমতা ১০০ ওয়াট পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে সক্ষম। একইভাবে দুই ধরনের ইউপিএসও পাওয়া যায়। এক. অনলাইন এবং দুই. অফলাইন। অফলাইন ইউপিএস অনলাইনের তুলনায় বেশি সাশ্রয়ী। অন্যদিকে কম সময়ের সংযোগ বিচ্ছিন্নতার জন্য অফলাইন ইউপিএস বেশি উপযোগী।

তাই আপনি যদি অনলাইন ইউপিএস কেনার কথা ভেবে থাকেন তাহলে মাথায় রাখা দরকার যে, বেশির ভাগ পণ্যের মতোই দাম যত বেশি হবে অনলাইন ইউপিএসের মানও তত ভালো হবে।

সক্ষমতা জানা প্রয়োজন : আইপিএস-ইউপিএস কেনার আগে হিসাব করতে হবে আপনার ব্যবহৃত ডিভাইসগুলোতে ঠিক কতটুকু বিদ্যুৎ প্রয়োজন এবং কতগুলো ডিভাইস সংযুক্ত করা হবে। যদি জোগানের চেয়ে চাহিদা বেশি হয় তাহলে প্রয়োজন পূরণ হবে না। তাই হিসাব করার সময় ডিভাইসগুলোর পাওয়ার বা ওয়াটশক্তি পরিমাপ করে নিতে হবে। বেশির ভাগ সময় পণ্যের ওপরেই এগুলো লেখা থাকে, যার ওপর ভিত্তি করে ব্যবহার অভ্যাস বদলে নেওয়া যায়।

সঠিক পরিমাণে বিদ্যুৎ জোগান পেতে চাইলে আপনি যত ঘণ্টা একটি ডিভাইস ব্যবহার করবেন সেই সংখ্যা দিয়ে ওয়াটের পরিমাণকে গুণ দিয়ে নিন এবং এরপর ফলাফলকে ১০০০ দিয়ে ভাগ করুন। সহজ করে বলা যায়, স্থানীয় বাজারের বৈদ্যুতিক পাখাগুলোতে প্রয়োজন হয় ১০০ ওয়াট, অন্যদিকে বিদেশি ফ্যানগুলোতে লাগে ১৫০ ওয়াটের মতো। একটি টিভি চালু থাকতে প্রয়োজন হয় ১০০ ওয়াট এবং একটি টিউবলাইটে দরকার পড়ে ৬০ ওয়াট। ‘ওয়াটেজ’ ঠিক করার আগে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে কতক্ষণ ধরে একটি ডিভাইস চালানো হবে। সব সময় নিশ্চিত করতে হবে যে, আইপিএস-ইউপিএসের  ২০ শতাংশ যেন সবচেয়ে অনুকূল মাত্রায় ব্যাকআপ পারফরম্যান্সের জন্য প্রস্তুত থাকে।

ফিচারও জেনে নিন : অনেকক্ষণ ধরে চলার জন্য কিছু নির্দিষ্ট ফিচার আইপিএস ও ইউপিএসকে সহায়তা করে। পাওয়ার সাপ্লাই ডিভাইসে যাতে ওভারচার্জিং, ওভারলোডিং এবং শর্ট সার্কিট সুরক্ষা ফিচারগুলো থাকে। এ ছাড়া খেয়াল রাখতে হবে, আইপিএস ও ইউপিএস যেন সব ডিভাইসের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে, যাতে সুরক্ষা ব্যবস্থা সব সময় বজায় রাখা যায়। ডিভাইসের মধ্যে ঠিক মাত্রার সাইন তরঙ্গ আউটপুট আছে কি না সেটিও দেখতে হবে। এ সাইনওয়েভটি মূলত একটি স্পষ্ট সংকেত দেয় এবং বজ্রপাতের সময় ডিভাইসগুলোকে ঠিকভাবে চলতে সাহায্য করে। আজকাল আইপিএস ও ইউপিএসের মধ্যে ডিজিটাল ডিসপ্লে আছে, যাতে ডিভাইসের স্ট্যাটাস দেখা যায়। এসব ফিচার যাতে ঠিকভাবে কাজ করে এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে যাতে কোনো সমস্যার সম্মুখীন না হতে হয়।

ওয়ারেন্টি দেখে নিন : আইপিএস ও ইউপিএসের সব ধরনের ওয়ারেন্টিই ব্যাটারির জীবনচক্রের ওপর নির্ভর করে। ব্যাটারিগুলো দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে কাজ করা বন্ধ করে দেয়, তাই সেটুকু মাথায় রেখে এগোনো ভালো।

যে ওয়ারেন্টি পাওয়া যাচ্ছে, সেটির মাধ্যমে পুরো কভারেজ পাওয়া যাচ্ছে কি না তাও দেখতে হবে। নির্ভরযোগ্য ওয়ারেন্টি ও মানের বিষয়টি নিশ্চিত করতে ভলভো, রহিমআফরোজ এবং হামকোর মতো স্থানীয় নামকরা ব্র্যান্ডগুলো থেকেই কেনা যেতে পারে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর