রবিবার, ২ জুলাই, ২০২৩ ০০:০০ টা

সাবমেরিন ‘টাইটান’ উদ্ধারে যোগ দিয়েছিল যেসব রোবট

সাবমেরিন ‘টাইটান’ উদ্ধারে যোগ দিয়েছিল যেসব রোবট
আটলান্টিকের গভীরে নিখোঁজ টাইটান ডুবোযান উদ্ধারে বৃহস্পতিবার সারা দিনে যোগ হয়েছে আরও উন্নত সন্ধান সরঞ্জাম। যার মধ্যে রয়েছে অত্যাধুনিক রোবট এবং রিমোট প্রযুক্তি।

নিখোঁজ সাবমেরিন টাইটানের খোঁজে এবার যোগ দিয়েছিল ফরাসি এক রোবট। জানা গেছে, রোবটটি পানির নিচে প্রায় ২০ হাজার ফুট পর্যন্ত যেতে পারে। সম্প্রতি ‘ভিক্টর ৬০০০’ নামের এই রোবটকে ঘটনাস্থলে নিয়ে আসে ফরাসি এক ‘রিসার্চ বোট’। আটকে থাকা জাহাজ মুক্ত করতে রিমোটের মাধ্যমে বাহু ব্যবহার করে তার কেটে ফেলার পাশাপাশি অন্যান্য কাজও করতে পারে এটি। রোবটটি পরিচালনা করা ফ্রান্সের রাষ্ট্রায়ত্ত গবেষণা সংস্থা ‘আইফ্রেমার’-এর পরিচালক অলিভিয়ের ল্যোফর, যিনি ১৯৮৫ সালে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়া দলেও অংশ নিয়েছিলেন। গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ভিক্টর ৬০০০ রোবট পরিচালনার দায়িত্বে আছেন ২৫ জন নাবিক, যারা ‘টানা ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত’ কাজ করতে সক্ষম। তিনি আরও বলেন, এই রোবট নিজের সব ভিডিও যন্ত্রাংশের সহায়তায় অনুসন্ধান পরিস্থিতি সরাসরি দেখায়। এর বাহু সাবমেরিন উদ্ধারকাজেও ব্যবহার করা যাবে। যেমন- সাবমেরিনের তার কিংবা এর নিচের যে অংশ আটকে আছে তা কেটে ফেলা।

আরও রোবট আছে অনুসন্ধানে : গেল সপ্তাহে নিখোঁজ হওয়া সাবমেরিন টাইটান পুনরুদ্ধারে ডাকা একমাত্র ‘রিমোট অপারেটেড ভেহিক্যাল (রোভ)’ নয় ভিক্টর। সপ্তাহের শুরুতে উদ্ধারকাজে সাড়া দেওয়া প্রথম কয়েকটি জাহাজের সহায়তায় এই ধরনের যানগুলো দৃশ্যপটে আসে। এর নাম থেকেই বোঝা যায়, সমুদ্রপৃষ্ঠের ওপর থাকা কোনো জাহাজ থেকে এগুলো নিয়ন্ত্রিত হয়। আর জাহাজে বিভিন্ন ‘রিয়েল-টাইম’ ছবি পাঠায় এগুলোতে যুক্ত থাকা ক্যামেরা ও লাইট। বিভিন্ন ‘সনোবয়া’র মাধ্যমে বাছাই করা শব্দের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট জায়গাগুলোয় এই অনুসন্ধান চালানো হয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজ। এসব ডিভাইস সোনার (পানির নিচে অনুসন্ধান চালাতে শব্দতরঙ্গ তৈরি করে এমন যন্ত্র) ব্যবহার করে বিভিন্ন বস্তু শনাক্ত করার জন্য নকশা করা। আর এগুলো বসিয়েছে কানাডার ‘পি-৩’ বিমান। একবার ডিভাইসগুলো বসানোর পর এগুলো সমুদ্রপৃষ্ঠের ওপর ভেসে থাকা রেডিও ট্রান্সমিটারের সঙ্গে যুক্ত হয়। আর শব্দতরঙ্গ শনাক্ত করা রিসিভারগুলো একটি তারের সঙ্গে যুক্ত থেকে নেমে যায় পানির ভিতর। কর্মকর্তারা বলেন, তাদের শনাক্ত করা ঠক ঠক আওয়াজের ঘটনা থেকেও ইতিবাচক ফলাফল আসেনি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ অনুসন্ধানের জায়গা কমিয়ে আনতে সনোবয়া গুরুত্বপূর্র্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

‘ফ্যাডোস’-এর ভূমিকা : অন্যান্য কোনো ‘রোভ’-এর ভিক্টরের সমান গভীরতায় যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে ভিক্টরের একার পক্ষে টাইটানকে সমুদ্রপৃষ্ঠে তুলে আনার সম্ভব না থাকায় সমুদ্রপৃষ্ঠের ওপরে থাকা জাহাজের সহায়তা নিতে হতে পারে। সাবমেরিনটি তুলে আনতে অনুসন্ধানী দল ‘ফ্লাইওয়ে ডিপ ওশান স্যালভেজ সিস্টেম (ফ্যাডোস)’-এর সহায়তা নিতে পারে। সমুদ্রপৃষ্ঠে সাবমেরিন তুলে আনার মতো যথেষ্ট ক্ষমতা রয়েছে এর শক্তিশালী লিভার ও তারের। আর গভীর সমুদ্র থেকে ২৭ হাজার ২০০ কেজি পর্যন্ত তুলতে পারে এটি।

সর্বশেষ খবর