মহাকাশে অগণিত বিপর্যয়ের সঙ্গে লড়াই করে টিকে আছে পৃথিবী। কিন্তু, যদি এমনটা হয়, মহাবিপর্যয়ের মুখোমুখি হলো পৃথিবী; যা তার বুকে আশ্রয় নেওয়া মানবজাতিকে ধ্বংস করে ফেলল? এমন সম্ভাবনার বাস্তবায়ন ঘটতে পারে বেশ কিছু উপায়ে।
সূর্য পৃথিবীকে গ্রাস করলে
সূর্যে প্রতি সেকেন্ডে ৬০০,০০০,০০০ টন হাইড্রোজেন পুড়ে যাচ্ছে। যদি এই শক্তি নিঃশেষ হয়ে যায়! তা হলে সূর্য হিলিয়ামে পূর্ণ হয়ে উঠবে এবং সংকুচিত হতে শুরু করবে। ক্রমবর্ধমান চাপ ও তাপ সূর্যের বিপুল পরিমাণ শক্তির নিঃসরণ ঘটাবে। ফলে সূর্যের বহিঃস্তর বহির্দিকে বিস্তার নেবে। তাতে পৃথিবীতে সৃষ্টি হবে ভয়াবহ তাপপ্রবাহ। সমুদ্রগুলো বাষ্পীভূত হতে শুরু করবে। পৃথিবীর তাপে দগ্ধ হবে।
সব আগ্নেয়গিরি বিস্ফোরিত হলে পৃথিবীর সব আগ্নেয়গিরি একসঙ্গে বিস্ফোরিত হলে, ধোঁয়া ও তাপ পৃথিবীকে গ্রাস করবে। অন্যদিকে, ১ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস (১ হাজার ৮৩০ ডিগ্রি ফারেনহাইট) তাপমাত্রায় উত্তপ্ত হয়ে পাথর তখন ৭০০ কিমি/ঘণ্টা (৪৫০ এমপিএইচ)-এর কাছাকাছি গতিতে ছুটবে। উত্তপ্ত, গলিত পাথর পৃথিবীর পৃষ্ঠতলে আঘাত করলে, পৃথিবী তার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলবে। ছাই এবং গ্যাসের স্তর পৃথিবীর ঘিরে ফেলবে। ফলে, পৃথিবীতে আর সূর্য রশ্মির দেখা মিলবে না। যখন লাভা ঠান্ডা হয়ে যাবে-পৃথিবীর তাপমাত্রা দ্রুত হ্রাস পাবে। জগতে নেমে আসবে বরফ যুগ। তাতে পৃথিবী ধ্বংস হবে না ঠিক, তবে সেই বরফ যুগ শেষ হওয়া পর্যন্ত জীবনের অস্তিত্ব টিকে থাকা অসম্ভব।
বৃহস্পতি নক্ষত্রে পরিণত হলে
আরও অধিক ভরের কারণে বৃহস্পতি গ্রহ পরিণত হতে পারে নক্ষত্রে। ফলে বৃহস্পতি সৌরজগতের কেন্দ্রে অবস্থান করবে। গ্রহ-উপগ্রহ নিজেদের কক্ষপথ পরিবর্তন করবে। প্রত্যেকে বৃহস্পতির কাছে চলে আসবে এবং ঝলসে যাবে। অথবা মহাকর্ষ বলের দরুন আমরা ছিটকে পড়তে পারি সৌরজগতের বাইরে। তা ঘটলে, সূর্যের অনুপস্থিতির কারণে পৃথিবীতে দেখা দেবে মৃত্যু শীতলতা।
ব্ল্যাকহোলে পৃথিবী নিঃশেষিত হলে
সূর্য ধসে পড়ার আগে যদি আরও বেশি ভর অর্জন করে, তবে আমাদের বিশ্বব্রহ্মান্ডে জন্ম হবে ব্ল্যাকহোলের। সূর্য এ ধরনের মহাবিপর্যয় ঘটানোর জন্য ততটা বড় না। কিন্তু পৃথিবীর সম্মুখে যদি কোনো ব্ল্যাকহোল হাজির হয়, অসম মহাকর্ষীয় টান জগতের বিকৃতি সাধন শুরু করবে। ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত ছড়িয়ে পড়বে পৃথিবীজুড়ে।
কোনো গ্রহাণু ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি করলে
যদি কোনো গ্রহাণু ভীষণ শক্তি ও তাপ নিয়ে পৃথিবীর কোনো সমুদ্রে আঘাত করে, তবে সমুদ্রে সৃষ্টি হবে ৪৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের (১২০ ডিগ্রি ফারেনহাইট) প্রবল তাপ। ফলে, হাইপারকেইন বা ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হতে পারে। বাতাস তখন শব্দের গতির সমান গতিতে বইতে শুরু করবে। মেঘ ৪০ কিমি উচ্চতায় পৌঁছে যাবে। স্ট্রাটোস্ফিয়ারের বাতাস জল ও অ্যারোসল নিক্ষেপ করতে থাকবে। তাতে ওজোন স্তর ধ্বংস হয়ে যাবে। পৃথিবীপুড়ে হবে ছারখার।
তথ্যসূত্র : হোয়াটইফ