ইন্টার এবং ওয়েব একই জিনিস
আমরা প্রায়ই ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব (ডব্লিউ ডব্লিউ ডব্লিউ) এবং ইন্টারনেটকে একই মনে করি। কিন্তু দুটি ভিন্ন জিনিস। ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব হচ্ছে বিশাল এক তথ্যভান্ডার, যাতে ইন্টারনেটের সাহায্যে প্রবেশ করা যায়। আর ইন্টারকানেক্টেড নেটওয়ার্ক বা ইন্টারনেট হলো- ছোট ছোট নেটওয়ার্কের সমন্বয়ে তৈরি এক বিশাল নেটওয়ার্ক। যার মাধ্যমে বিশ্বের স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, কম্পিউটার এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলো একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে এবং ডেটা বিনিময় করে। আর ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় ব্রাউজারের সাহায্যেই আমরা ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবে প্রবেশ করি, যেখানে যে কোনো ধরনের তথ্য পাওয়া যায়। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফরম, শপিং ওয়েবসাইট, স্ট্রিমিং সার্ভিসসহ যে কোনো তথ্যই ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবে পাওয়া যায়।
‘এআই’ মানুষের চেয়ে বুদ্ধিমান
অনেকে মনে করেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) মানুষের চেয়ে বুদ্ধিমান। গেল কয়েক বছর বড় বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো এআই নিয়ে যেভাবে কাজ করছে, তাতে মানুষের মনে এ ধারণা আরও দানা বেঁধেছে। কিন্তু মানুষের সঙ্গে কথোপকথন আর চ্যাটবটের সঙ্গে কথোপকথনে অনেক পার্থক্য আছে। ২০১৮ সালে জার্নাল অব আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স রিসার্চের একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, আগামী ৪৫ বছরের মধ্যে হিউম্যান-লেভেল মেশিন ইন্টিলিজেন্স (এইচএলএমআই) ঘটার সম্ভাবনা ৫০ শতাংশ। এআই এখনো মানুষের সমান যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি। তবে বর্তমানে এআই প্রযুক্তি নিয়ে যেভাবে গবেষণা ও সাফল্য পাওয়া যাচ্ছে, তাতে হয়তো আরও বুদ্ধিমান এআই প্রযুক্তি পেতে বেশি দেরি হবে না।
‘পাবলিক ওয়াইফাই’ ক্ষতিকর নয়
আমরা যেখানেই যাই না কেন, সব সময়ই ইন্টারনেটে যুক্ত থাকতে চাই। পাবলিক ওয়াইফাই প্রায়ই এই ইচ্ছা পূরণ করে। তবে ডিভাইসকে পাবলিক ওয়াইফাই নেটওয়ার্কে সংযুক্ত করাটা বিপজ্জনক হতে পারে। কেননা পাবলিক ওয়াইফাইয়ের মাধ্যমে অপরাধীরা ব্যবহারকারী ব্যক্তিগত তথ্যে প্রবেশাধিকার নিতে পারে। যেমন- ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের পিন, বিভিন্ন ওয়েবসাইটের লগইনের মাধ্যমে আইডি পাসওয়ার্ড হাতিয়ে নিতে পারে।
দরজা বন্ধে ওয়াইফাই সিগন্যাল কমে যায়
অনেক কারণে ওয়াইফাই সংযোগ বাধাগ্রস্ত হতে পারে। যেমন- প্রচুর ধাতব বস্তুর উপস্থিতি থাকলে। ধাতু ওয়াইফাই সংকেতকে দুর্বল বা এমনকি ব্লক করতে পারে। সিরামিক টাইলস, কংক্রিট এবং দূরত্বও দুর্বল ওয়াইফাই সংকেতের অন্যতম কারণ হতে পারে। যাই হোক, পিভিসি বা কাঠের দরজা বন্ধ করে রাখলে ওয়াইফাই সংযোগে কোনো প্রভাব ফেলে না। এটা বহুল প্রচলিত একটি কথা, যা এখনো অনেকে বিশ্বাস করেন। যা সত্য নয়। ডিভাইস এবং রাউটারের মধ্যে সবচেয়ে খোলামেলা পথ তৈরি করা সর্বদা সেরা বিকল্প, এটা ঠিক। যদি আপনার ওয়াইফাই সিগন্যালটি দুর্বল হয়, তবে দরজার সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক থাকার সম্ভাবনা নেই।
টেক রেডিয়েশন ক্ষতিকর
অনেকে শুনেছেন মাথার কাছে ফোন ধরে রাখা বা কোলে ল্যাপটপ রাখলে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ে। সহজ করে বললে টেক রেডিয়েশন বা বিকিরণ প্রাণঘাতী রোগও তৈরি করতে পারে। এর কোনো ভিত্তি নেই। অর্থাৎ প্রযুক্তি ডিভাইসগুলো থেকে নির্গত বিকিরণ বিপজ্জনক নয়। স্মার্টফোনের মতো অনেক ডিভাইস যোগাযোগের জন্য রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করে, তবে নির্গত বিকিরণ উদ্বেগজনক নয়। আমেরিকান ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাসোসিয়েশন (এফডিএ) বলেছে, মোবাইল ফোন থেকে নির্গত বিকিরণ জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
অ্যাপলের ডিভাইসে ‘নো ভাইরাস’
অনেকে মনে করেন, অ্যাপলের ডিভাইসে ভাইরাস এবং ম্যালওয়্যার আক্রমণ করে না। ব্যাপারটা এমন নয়। সাইবার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কোনো ডিভাইস-ই সম্পূর্ণ নিরাপদ নয়। সাধারণ অ্যাপল ডিভাইসের নিরাপত্তাব্যবস্থা অন্যান্য ডিভাইসের তুলনায় কঠিন ও দুর্ভেদ্য। এ জন্যই হয়তো কথাটি প্রচলিত হয়েছে। তবে ইন্টারনেটের এই যুগে এটা মানতে হবে ‘কোনো কিছুই দুর্ভেদ্য নয়’।
তথ্যসূত্র : পিসি ম্যাগ