শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

‘আইল্যান্ড’ বিড়ম্বনায় সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

‘আইল্যান্ড’ বিড়ম্বনায় সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট

রাজশাহী নগরীর প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত সাহেববাজার। নগরীর জিরোপয়েন্ট হিসেবে চিহ্নিত করা হয় এ স্থানটি। আন্দোলন-সংগ্রাম থেকে শুরু করে নানা ঘটন, অঘটন, ইতিহাস আর ঐতিহ্যের হাজারো স্মৃতি আছে সাহেববাজার জিরোপয়েন্টকে ঘিরে। রাজশাহীর প্রাণকেন্দ্র এটি। আন্দোলন-সংগ্রামের মূল কেন্দ্র হিসেবে মানুষ এই সাহেববাজার জিরোপয়েন্টকেই বেছে নেয়। গুরুত্বপূর্ণ এ জিরোপয়েন্টকে দীর্ঘদিনেও সম্প্রসারিত করা হয়নি, বরং দিন দিন তা সংকুচিত হয়ে গেছে। হালে সাহেববাজার জিরোপয়েন্টের মাঝখান দিয়ে আইল্যান্ড গড়ে তোলায় এখানে যানজট নিত্যদিনের। অথচ শহরের এ মূল পয়েন্টে একটি ‘গোলচত্বর’ স্থাপনের কোনো উদ্যোগ নেই কারও। সিটি করপোরেশনও এটি নিয়ে ভাবেনি কখনো। ফলে ট্রাফিক পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আইল্যান্ড স্থাপন করায় মূল শহর দুই পাশে বিভক্ত করা হয়েছে। যা সাধারণ মানুষের চলাচলে ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

নগরীর সবচেয়ে ব্যস্ততম এই সাহেববাজারে সহজে প্রবেশ করার জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে, শত শত দালান ভেঙে, ৬০ ফুট চওড়া রাস্তা তৈরি করে গোরহাঙ্গা মোড় থেকে সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট পর্যন্ত সড়ক বানানো হয়েছে। এ প্রশস্ত সড়কের সুফল পাচ্ছেন নগরবাসী। তবে সড়কটি যেখানে ঠেকেছে সেখানে ঘটা করে আরএমপির ট্রাফিক বিভাগের দেওয়া আইল্যান্ডের কারণে সফল যাত্রায় বাধা আর বিড়ম্বনার মুখে পড়ছেন নগরবাসী। অথচ এখানে একটি গোলচত্বর নির্মাণ করা হলে অনায়াসে নগরবাসী চলাচল করতে পারতেন। সে ভাবনা নেই নগর উন্নয়ন পরিকল্পকদের। খোদ সিটি করপোরেশনই এ বিষয়টি নিয়ে ভাবেনি। নগরীর শহীদ কামারুজ্জানান চত্বর গোরহাঙ্গা মোড় থেকে সরলীকরণ সড়ক হিসেবে দুই বছর আগে চালু হয়েছে প্রশস্ত একটি সড়ক। সেটি গিয়ে ঠেকেছে সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে। এই সড়ক দিয়ে আসা বিভিন্ন যানবাহন ও পথচারীরা এখন আর সহজেই কোনো মার্কেটে ঢুকতে পারেন না। শুধু আইল্যান্ডের গ্যাঁড়াকলে আটকে ঘুরে পার হতে হচ্ছে তাদের। বিশাল এ মোড়ে কোনো স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যাল না থাকায় হরদম পুলিশই বাঁশি বাজিয়ে হাতের ইশারায় যানবাহন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। ব্যস্ততম সাহেববাজার জিরোপয়েন্টের যানজট নিয়ন্ত্রণের কারণেই ট্রাফিক পুলিশ আইল্যান্ড গড়ে বন্ধ করে দিয়েছে সড়কটি। ফলে এখন মানুষকে সাহেববাজারে প্রবেশ করতে হলে জিরোপয়েন্ট থেকে আধা কিলোমিটার পূর্বে কুমারপাড়া মোড় ঘুরে ঢুকতে হচ্ছে। সরাসরি এখন সাহেববাজার বড় মসজিদ, আরডিএ মার্কেট, নিত্যপণ্যের বাজার ও পদ্মা নদীর দিকে যেতে পারেন না। আর রাজশাহী নগরীর দক্ষিণ পাশে পদ্মা নদী হওয়ায় সেদিক থেকে কোনো মানুষ শহরে প্রবেশ করতে পারেন না সরাসরি। তাদেরও ঘুরে আসতে হয় খানিকটা পথ মাড়িয়েই। চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, নাটোরসহ সারা দেশের যত মানুষ এই শহরে প্রবেশ করেন তারা সবাই গোরহাঙ্গা থেকে সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট রাস্তা ব্যবহার করেন। তবে বড় সড়কটি যেখানে মিশেছে সেখান থেকেই শুরু হয় ঝক্কি-ঝামেলা আর বিড়ম্বনা। রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান বলেন, জিরোপয়েন্টে একটি প্রশস্ত গোলচত্বর নির্মাণ করা গেলে এখানকার স্থায়ী সমস্যার একটা সমাধান হতে পারে। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র নিযাম উল আজিম জানান, জিরোপয়েন্ট প্রশস্ত করার বিষয়ে সিটি করপোরেশন স্থায়ী সমাধানের চেষ্টা করছে। সেখানে একটি গোলচত্বর তৈরি করা গেলে সবকিছু অনেকটাই স্বাভাবিক হবে।

সর্বশেষ খবর